রবিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আপনার কাজে লাগবে এমন কী কী আছে জিরো টু ওয়ান বইয়ে?


প্রতিটি উদ্যোগের সুযোগ ও মুনাফা একবারই আসে। পরবর্তী বিল গেটস একটি অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করবে না। পরবর্তী ল্যারি পেইজ বা সার্জি ব্রিন কোন সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করবে না। আর পরবর্তী মার্ক জাকারবার্গ কোনও সামাজিক নেটওয়ার্ক তৈরি করবে না। আপনি যদি এই উদ্যোক্তারা যা বানিয়েছে তা কপি করতে চান তবে আমি বলব আপনি এখান থেকে কিছুই শিখছেন না।

অবশ্য নতুন কোনকিছু তৈরি করার চেয়ে আগের কোন মডেল কপি করা সহজ। যা আমরা জানি এমন ব্যবসা আবার করতে যাওয়া মানে তীব্র প্রতিযোগিতায় পড়ে মরা ছাড়া আর কিছু নয়। একে আমি বলি ১ থেকে ম'তে গমন। ম মানে তীব্র প্রতিযোগিতার চাপে ব্যবসায়িক ক্ষতি বা মারা যাওয়া। কিন্তু যখনই আমরা নতুন কিছু তৈরি করব, তখন আমরা ০ থেকে ১ এ চলে যাব। এ হচ্ছে এক সৃষ্টিশীল কাজ। এ কাজ যেমন নতুন সৃষ্ট তেমন এর ফলাফলটিও তাজা ও অদ্ভুত কিছু।

আজকে আমেরিকার বড় বড় কোম্পানিগুলো যদি নতুন নতুন জিনিস তৈরির কঠিন কাজে বিনিয়োগ না করে, তবে আজকে তারা যতই মুনাফা করুক না কেন ভবিষ্যতে ব্যর্থ হবেই। আমরা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত পুরানো ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেগুলো কী পেয়েছি? সেসব ক্ষেত্র থেকে যা অর্জন করার ছিল তা অর্জিত হয়েছে। এরপর কী? অস্পষ্টভাবে যেমন শোনা যায়, সামনে ২০০৮ এর চেয়ে ভয়ানক ব্যবসায়িক বিপর্যয় আসছে। কেন? কারণ আমরা এমন এমন পথ ধরে ব্যবসায়িক কাজকর্ম করছি যা নতুন কোনো সম্ভাবনা তৈরি করছে না। কেবল ক্ষতি ও মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের উচিত নতুন ও অপ্রচলিত পথে এগিয়ে যাওয়া।

সরকারি ও বেসরকারি, উভয়ই বিশাল প্রশাসনিক আমলা নিয়ে আশা করছে নতুন কোন পথ অলৌকিকভাবে তাদের সামনে এসে পড়বে। আসলে, বর্তমান আমেরিকার ব্যবসা যেভাবে চলছে এমন ভাবে সফল হতে গেলে আমাদের কয়েকশ বা এমনকি হাজারো অলৌকিক কাজের প্রয়োজন হবে। এ নিশ্চয় হতাশাজনক। তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ সত্যের আমাদের সবারই জানা: মানুষ অলৌকিক কাজ করতে সক্ষম বলেই অন্যান্য প্রাণীদের থেকে আলাদা। আর আমরা এ আলৌকিক শক্তির নাম দিয়েছি প্রযুক্তি (technology)।

আসলে প্রযুক্তি সত্যিই এক অলৌকিক শক্তি। কারণ এ আমাদের মৌলিক দক্ষতাকে খুব কম সময়ের বেশি কাজ করে উচ্চ স্তরে পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। অন্যান্য প্রাণীরা মধুচক্রের মতো জিনিস তৈরিতে সহজাতভাবে চালিত হয়। তবে আমরা মধুচক্রের চেয়ে বেশি ও জটিল জটিল নতুন জিনিস উদ্ভাবন ও সৃষ্টি করতে পারি। নতুন প্রযুক্তি এমন কিছু তৈরি করে যা দ্বারা আমরা বিশ্বের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নতুন করে লিখি।

জিরো টু ওয়ান কীভাবে এমন নতুন সংস্থাগুলি তৈরি করতে পারে যা নতুন জিনিস তৈরি করে। এটি পেপাল এবং পালান্টির সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং তারপরে ফেসবুক এবং স্পেসএক্স সহ কয়েকশ স্টার্টআপে বিনিয়োগকারী হিসাবে আমি যা শিখেছি তার সবকটিই আকর্ষণ করে। তবে আমি অনেক নিদর্শন লক্ষ্য করেছি এবং আমি এগুলি এখানে উল্লেখ করছি। এ বই সাফল্যের কোনো সূত্র সরবরাহ করে না। উদ্যোক্তা হওয়ার শিক্ষা দিতে গিয়ে আমি দেখলাম উদ্যোক্তারা নিত্যনতুন সূত্র, পন্থা, পদ্ধতি বা উপায় তৈরি করছে যা আগে কেউ করেনি। যেহেতু প্রতিটি উদ্ভাবন নতুন এবং অনন্য, কোন কর্তৃপক্ষ ঠিক ছক আকারে বলতে পারে না কে সফল হবে আর কে ব্যর্থ। প্রকৃতপক্ষে, আমি যে সবচেয়ে শক্তিশালী ধারাটি লক্ষ্ করেছি তা হল সফল ব্যক্তিরা অপ্রত্যাশিত জায়গাগুলিতে বিভিন্ন ধরনের মূল্য খুঁজে পায় এবং তারা সূত্রের পরিবর্তে প্রথমে নীতিগুলোর সাথে ব্যবসায় সম্পর্কে চিন্তা করে।

এ বই আমি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১২ সালে যে স্টার্টআপের ক্লাস লেকচার দিয়েছিলাম, তারই সারসংক্ষেপ। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীদের নতুন নতুন উদ্যোগ নেওয়ার নানা কলাকৌশল শেখানোর জন্য এ কোর্স চালু করেছিল। ক্লাসে পড়ানোর সময় আমার প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদেরকে বিস্তৃত ভবিষ্যতের রাস্তা খুঁজে পেতে সাহায্য করা। সেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন, ব্লেক মাস্টার্স। এ ক্লাসগুলোর বিস্তারিত নোট নিয়েছিল। যা ক্যাম্পাস থেকে বহুল প্রচারিত হয়। জিরো টু ওয়ান বইয়ে আমি তার সাথে বিস্তৃত দর্শকের জন্য নোটগুলি সংশোধন করতে কাজ করেছি। কারণ আমি বিশ্বাস করি ভবিষ্যৎ কেবল সিলিকন ভ্যালি বা স্ট্যানফোর্ডের মধ্যেই আটকে থাকবে না। বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো উদ্যোগ ভবিষ্যতের দুনিয়াকে বদলে দিতে পারে।

বই অর্ডার করতে ক্লিক করুন: https://saphollo.com/

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন