শনিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৩

10 lessons from Building a Story Brand by Donald Miller + বুক রিভিউ

ডোনাল্ড মিলার রচিত বিল্ডিং এ স্টোরি ব্র‍্যান্ড (Building a Story Brand) বই থেকে নেওয়া ১০টি শিক্ষা।
১। ব্র্যান্ডগুলো প্রথম যে ভুলটা করে তা হলো তারা কাস্টমারের সমস্যা সমাধান এবং অগ্রগতির দিকে লক্ষ্য না রেখে পণ্য বা সেবা অফার করা।

ব্র্যান্ডগুলো দ্বিতীয় যে ভুল করে তা হলো তারা তাদের গ্রাহকদের এমন সব অফার দেয় যা বুঝতে বুঝতে কাস্টমারের অনেকটা মানসিক শক্তি খরচ হয়ে যায়।

২। ক্ষুধা লেগেছে, এটা হচ্ছে গল্পের সূচনা। আর খাবার হচ্ছে এর সমাপ্তি।
৩। কোম্পানিগুলো বাহ্যিক সমস্যার সমাধান বিক্রি করে। কিন্তু মানুষ ক্রয় করে তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধান।

৪। স্টারবাক্স কফি কোম্পানি শুধু কফি বিক্রি করে না। তারা এরচেয়ে বেশি কিছু বিক্রি করে। তারা এক ধরনের অনুভূতি বিক্রি করে। জীবনের বাস্তববোধ এবং প্রেরণাকে তারা উজ্জীবিত করে। 
৫। প্রশংসাপত্র, পরিসংখ্যান, লোগো বা পুরস্কার, যা আপনার দক্ষতা প্রদর্শন করে, তা আপনার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করুন। এমনকি অন্য যেসব ব্যবসায় আপনি সাহায্য করেছেন তাদের লোগো এবং প্রশংসাপত্র কাস্টমারকে দেখান। এতে আপনার প্রতি কাস্টমারের বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।

৬। আমরা যদি সত্যিই আমাদের ব্যবসায় উন্নতি করতে চাই, তাহলে আমাদের পণ্যগুলোকে একটি বাহ্যিক, অভ্যন্তরীণ এবং দার্শনিক সমস্যার সমাধান হিসাবে দাঁড় করাতে হবে এবং Buy Now অথবা "এখনই কিনুন" বোতামটি গ্রাহকের সামনে রাখতে হবে, যাতে কাস্টমার অ্যাকশন নিতে পারে।
৭। কিছু ব্র্যান্ড যে মারাত্মক ভুল করে, বিশেষ করে যারা নতুন ব্র্যান্ড তারা বিশ্বাস করে যে নিজেদেরকে গাইডের পরিবর্তে হিরো হিসাবে প্রমাণ করতে হবে।

৮। একবার আমরা যখন আমাদের গ্রাহকদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা চিহ্নিত করতে পারব, তখন আমাদেরকে জানাতে হবে যে আমরা কাস্টমারদের সমস্যা বুঝতে পেরেছি এবং তাদের একটি সমাধান খুঁজে পেতে সাহায্য করতে চাই৷ আপনার মার্কেটিং ক্যাম্পেইন স্ক্যান করুন এবং নিশ্চিত করুন যে আপনি আপনার গ্রাহকদের বলেছেন যে আপনি তাদের প্রতি যত্নশীল। আপনি তাদের না বলা পর্যন্ত কাস্টমাররা জানবেন না যে আপনি তাদের প্রতি যত্নশীল।
৯। আপনার কাস্টমাররা প্রতিদিন ৩ হাজারেরও বেশি মার্কেটিং মেসেজ পেয়ে থাকে। এটা যেন তাদের উপর বোমা ফেলার মতো। আমরা যদি আমাদের কল টু অ্যাকশন নিতে দৃঢ় না হই; তাহলে কাস্টমার আমাদের উপেক্ষা করবে। যদি আমাদের কল টু অ্যাকশন সফট হয়, নরম সুরের হয়, তবে সেগুলো মানুষ লক্ষই করবে না।
১০। একবার গ্রাহকরা আমাদের পণ্য কেনার সিদ্ধান্ত নিলে, কীভাবে আমরা সেই পণ্যগুলোর সেবার মান বৃদ্ধি করতে পারি এবং আমাদের ব্র্যান্ডের সাথে কাস্টমারদের ইতিবাচক অভিজ্ঞতাকে আরও সুদৃঢ় করতে পারি?
©ফজলে রাব্বি

তথ্যসূত্র: Building a Story Brand by Donald Miller.

সোমবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২৩

5 lessons from Building A Story Brand by Donald Miller + বুক রিভিউ

আপনি কি অনলাইনে ব্যবসা করতে পারছেন না? তাহলে এখনই আপনার ওয়েবসাইটে এই ৫টি বেসিক পরিবর্তন আনুন।
The 5 things your website should include:
1. An offer above the fold: কথাটা মূলত নিউজপেপার ইন্ডাস্ট্রি থেকে এসেছে। যেকোন পত্রিকা খুললে প্রথম ভাঁজে যে অংশটুকু দেখা যায়, তাই এভব দ্য ফোল্ড। ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে, যেকোন ওয়েবসাইট ওপেন করলে প্রথম যে অংশটুকু দেখা যায়, তাই হবে এভব দ্য ফোল্ড।

আপনার কাস্টমার হচ্ছে হিরো। আর আপনি হিরোর জীবনে সাফল্যের পথপ্রদর্শক, একজন গাইড। আপনার পণ্য বা সেবা কাস্টমারের কী কাজে আসবে, কী উপকারে আসবে সেই অফার দিয়ে সরাসরি ওয়েবসাইটের প্রথমেই দেখান। কাস্টমারকে প্রথমেই জানান যে আপনি তার জীবনের কী সমস্যা দূর করছেন।

2. Obvious calls to action: ওয়েবসাইটের উপরে ডান পাশে একটা Buy Now বাটন রাখুন। আর এভব দ্য ফোল্ড এর মাঝখানে আরেকবার Buy Now বাটন দিন। কাস্টমাররা জেড (Z) আকৃতিতে দেখে। যেকোন ওয়েবসাইটে ঢুকে বাম দিক থেকে ডানে, তারপর জেড (Z) আকারে চোখ বুলিয়ে যায়। তাই একই রকম Buy Now বাটন দুইবার দিলে তা কাস্টমারকে অ্যাকশন নিতে সাহায্য করে।

3. Images of success: আপনি আপনার পণ্য বা সেবা প্রদান করতে গিয়ে কোথায় কোথায় পুরস্কার, পদক বা প্রশংসা পেয়েছেন, তার ছবি দিন। কোন কাস্টমার আপনার পণ্য বা সেবা পেয়ে আনন্দিত হয়েছে, তার হাসিমুখের ছবি দিন। জানেন তো, একটা ছবি হাজারো শব্দের চেয়ে উত্তম।

4. A bite-sized breakdown of your revenue: এক কথায় আপনার পণ্য বা সেবাকে বর্ণনা করুন। একজন বই প্রকাশক লিখেছেন, টাইম ম্যানেজমেন্ট হচ্ছে সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। আপনার সময়জ্ঞান দেখে সবাই আপনার প্রশংসা করবে।

5. Very few words: ওয়েবসাইটে খুবই অল্প কথায় পণ্য বা সেবার বর্ণনা দিন। ৪০০ থেকে ৭০০ শব্দের মধ্যে হলে ভালো হয়। নিতান্তই বেশি শব্দ দিতে হলে ২-৩ লাইন লিখে এরপর Read More বাটন দিন। এতে করে কাস্টমার অতিরিক্ত শব্দের বোঝা থেকে রক্ষা পাবে।

ডোনাল্ড মিলার রচিত Building A Story Brand বই থেকে এই ৫টি বেসিক সাজেশন কাজে লাগিয়ে ব্যবসায় সফল হোন। পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ©ফজলে রাব্বি

তথ্যসূত্র:
৩৬। Building A Story Brand by Donald Miller. এখনই বইটি পড়ে দেখতে অর্ডার করুন: https://www.rokomari.com/book/215451/building-a-story-brand-clarify-your-message-so-customers-will-listen/

বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৩

15 lessons from The Art of Thinking Clearly by Rolf Dobelli + বুক রিভিউ

লেখক রল্ফ ডোবেল্লি রচিত ❝দ্য আর্ট অফ থিংকিং ক্লিয়ারলি❞ বই থেকে নেওয়া ১৫টি শিক্ষা:

১। কনফার্মেশন বায়াস তথা নিশ্চিতকরণ পক্ষপাত হচ্ছে সব ধরনের ভুল ধারণার জননী।
নতুন কোন তথ্যকে আমরা আমাদের বিদ্যমান জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পরিমাপ করি। বিদ্যমান তথ্যের ভিত্তিতে আমরা নতুন জ্ঞানকে সংজ্ঞায়িত করি। একেই বলে কনফার্মেশন বায়াস।

২। এমন বহু কাজ আছে যেখানে সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম, অথচ কঠোর পরিশ্রম করা লাগে। এ ধরনের কাজ সম্পর্কে সাবধান।

এমন বহু কাজ আছে যেখানে সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম, অথচ কঠোর পরিশ্রম করা লাগে। আসলে আমরা শুধু সফল লোকজনের ব্যাপারে শুনি। কিন্তু যারা ব্যর্থ হয় তাদের ব্যাপারে খুব একটা শোনা যায় না। পৃথিবীতে সাফল্যের হার ৩ থেকে ১ শতাংশ। তার মানে ব্যর্থ মানুষের হার ৯৭ থেকে ৯৯ শতাংশ।
৩। সামঞ্জস্যের বিপর্যয় (Calamity of Conformity).

আপনি যদি এমন কোন দলের মধ্যে গিয়ে পড়েন, যেখানে সবাই বসের সুরে সুর মিলাচ্ছে, হ্যাঁ তে হ্যাঁ মিলাচ্ছে, সেখানে কষ্ট হলেও আপনাকে মন খুলে কথা বলতে হবে। যদি আপনার দলের সঙ্গীরা আপনার কথা পছন্দ নাও করে, তবুও আপনাকে হক কথা বলতে হবে। এতে করে হয়তো আপনি সবার সাথে একমত হতে পারলেন না বলে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়বেন। কিন্তু তারপরও আপনাকে আপনার কথা বলতে হবে, যে কথা আপনার সঠিক মনে হয়, সেই কথা বলতে হবে।

৪। ইন্ডাকশন (Induction)।
মানুষের এটা প্রচলিত চিন্তাধারার মধ্যে পড়ে যে সে ইতিহাসের বা অতীতের উপর ভিত্তি করে, কোন ধরনের যৌক্তিক চিন্তার ধার না ধরে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে।

৫। ক্ষতি এড়িয়ে চলার চেষ্টা (Loss Aversion)।

কিছু পাওয়ার চেয়ে কোনকিছু হারানোর ভয় মানুষকে বেশি অনুপ্রাণিত করে।

৬। চক্রবৃদ্ধি হার (Compound effect)।

যখন কোন বিষয়ে চক্রবৃদ্ধির ব্যাপারটা আসবে তখন আপনার স্বজ্ঞা, অনুমান বা মনে করেছিলাম এমন ধরনের চিন্তাধারার ওপর বিশ্বাস করবেন না। চক্রবৃদ্ধির ব্যাপারটা যে কতটা শক্তিশালী সেই ব্যাপারে আপনার কোন ধারণাই নেই।
৭। আপনি কী বলছেন তা নয়; বরং কীভাবে বলছেন তা গুরুত্বপূর্ণ।
কেউ যদি বলে এই পণ্য ৯৯% চর্বি মুক্ত। আর কেউ বলল, এই পণ্যে ১% চর্বি আছে। কোন কথাটা শুনতে আপনার ভালো লাগে। দুটো একই কথা। কিন্তু সাধারণত মানুষ ৯৯% চর্বি মুক্ত শুনলে মনে করে এটা স্বাস্থ্যকর।

৮। আপনি যদি সমাধানের অংশ না হন, তবে আপনি অবশ্যই সমস্যার একটা অংশ।

নিষ্ক্রিয় থাকার বা উদাস দর্শক হিসাবে থাকার কোন অবকাশ নেই।

৯। কীসের প্রতি আপনি অনুরক্ত, কী কাজ করতে আপনি ভালোবাসেন, সেই প্যাশানকে অনুসরণ করুন।

আপনার আবেগকে অনুসরণ করুন, যা করতে ভালোবাসেন তাই করুন। এজন্য যদি আপনাকে আপনার আয়ের কিছু অংশ বাদও দিতে হয়, তবুও প্যাশানকে অনুসরণ করুন।

১০। যখনই আপনি গড় (average) বিষয় নিয়ে কাজ করবেন, তখন এর পিছনের তথ্যগুলো সম্পর্কে সতর্ক থাকুন।

বিল গেটসের মতো একজন ধনৗ ব্যক্তি১ মাসে যা আয় করে তা ৫০ হাজার সাধারণ মানুষের আয়ের সমান হতে পারে। তাই এ ধরনের বিরাট বৈষম্যের সংখ্যা নিয়ে গড় করলে তা অত্যন্ত বিভ্রান্তিকর তথ্য দিতে পারে।

ধরুন, ৫০ হাজার মানুষের প্রতি মাসে মোট আয় ৫০ কোটি টাকা। আর বিল গেটস বা অন্য কোন একজন ধনৗ ব্যক্তির প্রতি মাসে আয় ৫০ কোটি টাকা। তাহলে এদেরকে এক করে যদি গড় করি, তবে ৫০ হাজার ১ জন মানুষের গড় আয় আসে ২০ হাজার টাকা। কিন্তু এই গড়ের তথ্য থেকে যদি বিল গেটসকে সরিয়ে নিই, তবে দেখা যাবে ৫০ হাজার মানুষের গড় আয় প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা। দেখুন গড়ের কী তারতম্য!

এই গড়ের ওপর অনেক সিদ্ধান্ত নির্ভর করে। ধরুন, সরকার এমন এক গড় করে দেখল, দেশের জনগণের আয় ২০ হাজার টাকা করে। তো, সরকার চিন্তা করল, তেলের দামে সরকারকে ১০০ টাকা ভর্তুকি দিয়ে ৫০ টাকা লিটার বিক্রি করতে হচ্ছে। যেহেতু সবার আয় বেড়েছে। তো ভর্তুকি উঠিয়ে দিলেও চলবে। তখন তেল লিটার প্রতি হয়ে যাবে ১৫০ টাকা। কিন্তু প্রকৃত অর্থে মানুষের আয় হয়তো ১০ হাজার বা তারও নিচে। তখন যারা ধনী, তাদের ততটা অসুবিধা না হলেও, সাধারণ জনগণের নাভিশ্বাস উঠে যাবে।
১১। টাকার চিন্তা করলে যে সবসময় আপনি অনুপ্রাণিত হবেন ব্যাপারটা তা নয়।

এটা কেবল সেই কোম্পানিগুলোতেই প্রেরণা হিসাবে কাজ করে যেখানে কর্মচারীরা শুধু টাকাপয়সার জন্য কাজ করে। যেমন মোবাইলের ফ্ল্যাক্সিলোড, বিকাশের দোকান প্রভৃতি।

১২। টাকাপয়সার চিন্তার সাথে আবেগ জড়ানো থাকে।

যখন কেউ আকস্মিকভাবে টাকাপয়সা পেয়ে যায়, তখন সে অযৌক্তিভাবে সেই টাকাপয়সা খরচ করে। যদিও মানুষ প্রায়ই বলে, এরকম হঠাৎ ৫ বা ১০ লাখ টাকা পেলে সে খুব যৌক্তিকভাবে খরচ করবে। আসলে তা হয়ে ওঠে না। কিন্তু একই পরিমাণ টাকা যদি পরিশ্রম করে আয় করে, তবে তা খরচ করতে অনেক চিন্তাভাবনা করে।

১৩। আত্মনিয়ন্ত্রণ করতে গেলে নিজের ভেতর বেশ অনেকটা শক্তির দরকার হয়।

আপনি যদি জীবনের কোন একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্র বা লক্ষ্যে সফল হতে চান বা আত্মনিয়ন্ত্রণ করতে চান তবে শারীরিক এবং মানসিক, উভয়ভাবে আপনার শক্তির দরকার। তাই যখন-তখন, যেখানে-সেখানে হ্যাঁ বলে নিজের এনার্জি লস করবেন না।

১৪। কোনকিছুর অনুপস্থিতির চেয়ে উপস্থিতি অনেক বেশি লক্ষণীয় এবং মূল্যবান।

উদাহরণস্বরূপ, রোগের উপস্থিতি এর অনুপস্থিতির চেয়ে অনেক বেশি লক্ষণীয়। রোগ না থাকলে মানুষ নির্বিঘ্নে জীবনযাপন করে। বলতে গেলে অস্বাস্থ্যকর এবং অনিয়মিত উপায়ে জীবনযাপন করতে কুণ্ঠাবোধ করে না। কিন্তু যখন অসুস্থ হয়েই যায় তখন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগে। যেমন, ডায়াবেটিস রোগীরা ডায়াবেটিস রোগ হওয়ার পর থেকে সকালে হাঁটতে বের হয়, কিন্তু আগে নয়।

১৫। মানবদেহের জন্য চিনি যেমন বিষের মতো তেমন পত্রপত্রিকা বা টিভিতে সংবাদগুলো আমাদের মনমানসিকতার জন্য বিষস্বরূপ।

চিনি বা সংবাদ, এসব জিনিস দেখলে ক্ষুধা পায়, সহজে হজম করা যায়। কিন্তু এগুলো দীর্ঘমেয়াদে অত্যন্ত মারাত্মক। যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ©ফজলে রাব্বি