মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

পুনরাবৃত্তি চক্র (iteration cycle)

“আমি ব্যর্থ হইনি। আমি তো ১০ হাজার উপায় খুঁজে পেয়েছি যা কাজ করে না।” - টমাস আলভা এডিসন, অসাধারণ উদ্ভাবক


পুনরাবৃত্তি চক্র কী?


পুনরাবৃত্তি চক্র হচ্ছে এমন এক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আপনি সময়ের সাথে সাথে যেকোন কিছু উন্নত করতে পারেন।


এর ৬টি প্রধান ধাপ রয়েছে:


দেখা: কী কাজ করে? আর কী কাজ করে না?


আইডিয়া: আপনার পক্ষে কী কী দিক উন্নত করা সম্ভব? আপনার হাতে কী কী অপশন আছে?


অনুমান করা: অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে, কোন আইডিয়া সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করেছে?


কোনটি?: কোন ধরনের পরিবর্তন করতে হবে তা সিদ্ধান্ত নিন।


কাজ: পরিবর্তন করতে এখন কাজে নেমে পড়ুন।


পরিমাপ: পরিবর্তন সাধন করার পর দেখুন, ফলাফল কি ইতিবাচক নাকি নেতিবাচক? আপনি কি এই কাজ করতে থাকবেন, নাকি পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবেন?


পুনরাবৃত্তি হচ্ছে এক ধরনের চক্র। একবার এটা কাজ করলে, আপনি একে পুনরায় ব্যবহার করবেন।


আপনি প্রতিটি পুনরাবৃত্তি চক্রে কী ফলাফল চান তা নির্দিষ্ট করুন। এটা স্পষ্ট হয়ে গেলে আপনি পুনরাবৃত্তি চক্র বেশ ভালোভাবে শেষ করতে পারবেন। ফলাফল দেখুন। আপনি প্রতিটি চক্র থেকে কী ধরনের গুণগত মানের ফলাফল পাচ্ছেন তার ভিত্তিতে এগিয়ে যান।


জশ কাউফম্যান পুনরাবৃত্তি চক্রের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, একজন মানুষ যত স্মার্ট বা প্রতিভাবানই হোক না কেন, প্রথমবার কাজ করেই সফল হতে পারে না।


প্রমাণের জন্য, যেকোন শৈল্পিক মাস্টারপিসের কথা বিবেচনা করুন। আপনি কি মোনালিসার ছবি দেখেছেন। তার ছবির নিচে বহু খসড়া স্কেচের স্তর। অনেকবার ছবি আঁকার সূচনা করেও ফেলে দেওয়া হয়েছে। প্রায়ই অনেক বড় বড় পরিবর্তন করা হয়েছে। অথবা সিস্টিন গির্জার সিলিংয়ের কথা চিন্তা করুন। যেখানে কয়েক লাখ খুব ছোট ছোট ব্রাশের আচঁড় ব্যবহার করা হয়েছে। যা সাধারণত খালি চোখে দেখা যায় না। এভাবেই প্রতিটি মাস্টারপিস ফলাফলের দিকে এগিয়ে গেছে। অথবা ডেভিড মূর্তির কথা চিন্তা করুন। একটি পাথর খণ্ডকে ‘ডেভিড’ এ পরিণত করতে মাইকেল এঞ্জেলোকে লাখো হাতুড়ির আঘাত করতে হয়েছে।


পুনরাবৃত্তি চক্র এমনই এক প্রক্রিয়া যা আপনি সময়ের সাথে সাথে ব্যবহার করার মাধ্যমে আরও দক্ষ হয়ে ওঠেন এবং একে আরও সফলভাবে প্রয়োগ করতে পারেন। শিল্পীরা তাদের অসাধারণ সৃষ্টির কাজে নানা পরিবর্তন এবং সংশোধন ঘটান। এগুলো নিরর্থক নয়। প্রতিটি পুনরাবৃত্তি চক্র আপনাকে আপনার কাঙ্ক্ষিত সাফল্যের দিকে এক ধাপ এগিয়ে নেয়।


পুনরাবৃত্তির ৬টি প্রধান বৈশিষ্ট্য রয়েছে:


১। দেখা: কী কাজ করছে?


২। আইডিয়া: কোন কোন দিক উন্নত করতে পারেন? আপনার হাতে কী ধরনের অপশন বা সুযোগ আছে?


৩। অনুমান: আপনার কি মনে হয়, কোন আইডিয়া সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলবে?


৪। কোনটি?: কোন ধরনের পরিবর্তন করতে হবে তা নির্ধারণ করুন।


৫। কাজ: সেসব পরিবর্তন করার উদ্দেশ্যে কাজে নেমে পড়–ন।


৬। পরিমাপ: প্রকৃতপক্ষে কী ঘটছে? পরিবর্তন করার পর ফলাফল কি ইতিবাচক, নাকি নেতিবাচক? পরিবর্তন অনুযায়ী কাজ করা উচিত, নাকি পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবেন?


পুনরাবৃত্তি হলো একটি চক্র। আপনি এখানে ফলাফল পরিমাপ করতে পারেন, কোন ধরনের পরিবর্তন চান এবং কোনটি চান না তা রাখতে পারেন অথবা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আপনি পূর্বের অবস্থায় আবার ফিরে যেতে পারেন। দেখতে পারেন কী হয়েছিল এবং এই চক্রকে পুনরায় আরম্ভ করতে পারেন। সবচেয়ে ভালো ফলাফলের জন্য, প্রতিটি পুনরাবৃত্তি চক্রের ক্ষেত্রে আপনি কী চান তা আগে থেকে স্পষ্ট ও নির্দিষ্ট করুন। আপনি কি কোন ধরনের বিজ্ঞাপনের প্রস্তাব দিতে গিয়ে প্রস্তাবকে আরও আকর্ষণীয় করছেন, নাকি লোকজন এসব প্রস্তাব দেখে বিমুখ হচ্ছে? আপনি কি মানুষের জন্য উপকারী সেবা সম্পন্ন করে এমন কিছু সেবা বা বৈশিষ্ট্য যোগ করছেন? আপনি কি পণ্য বা সেবার গুণগত মান হ্রাস না করে দাম কমানোর প্রস্তাব দিচ্ছেন?


আপনি কী চান তার যত স্পষ্ট এবং নির্দিষ্ট হবে, মানুষের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পেতে তত সহজ হবে। এতে করে পুনরাবৃত্তি চক্রও দারুণভাবে কাজ করবে। পুনরাবৃত্তি চক্র থেকে তখন দারুণ সব তথ্য এবং আইডিয়া খুঁজে পাবেন।


‘পুনরাবৃত্তি চক্র’ সম্পর্কে প্রশ্ন:

- আপনি বর্তমানে পুনরাবৃত্তি চক্র কীভাবে ব্যবহার করছেন?

- পুনরাবৃত্তি চক্রের কোন পদক্ষেপ বা বৈশিষ্ট্যতে আপনি সবচেয়ে ভালো করেছেন?

- কোন পদক্ষেপ বা বৈশিষ্ট্য সাধারণত আপনি এড়িয়ে গেছেন?


একই ধরনের বিষয় সম্পর্কে পড়ুন:


অর্থায়ন (Finance)


মুনাফা (Profit)


মুনাফার পরিমাণ (Profit Margin)


গুণগত মানের পরিমাণ (Value Capture)


পর্যাপ্ততা (Sufficiency)


মূল্যায়ন (Valuation)


ক্যাশ ফ্লো স্টেটমেন্ট (Cash Flow Statement)


পুনরাবৃত্তি চক্র (iteration cycle)

সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

মুনাফার পরিমাণ (profit margin)

মুনাফার পরিমাণ (profit margin) কী?


মুনাফার পরিমাণ বলতে বোঝায় (সাধারণত বলা হয় “লাভ কত হলো?”) একটি বিক্রয়ের পর উৎপাদন খরচ বা ক্রয় বাদ দিলে যে মুনাফা থাকে। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সাধারণত মুনাফার পরিমাণকে লাভ হিসাবে তুলনা করা হয় এবং বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রস্তাবে এটাকে সবার আগে বিবেচনা করা হয়।


জশ কাউফম্যান মুনাফার পরিমাণের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, আপনি কত আয় করলেন এবং এই আয় করতে গিয়ে কত ব্যয় করলেন তার পার্থক্য। একে সাধারণত শতাংশে প্রকাশ করা হয়। মুনাফার পরিমাণ নির্ধারণের সূত্র হচ্ছে:


{(আয় - ব্যয়) / আয়} x ১০০ = % মুনাফার পরিমাণ


আপনি যদি ১০০ টাকা খরচ করে ২০০ টাকা আয় করেন, তবে মুনাফার পরিমাণ হয় ১০০%। আপনি যদি ১০০ টাকার একটি পণ্য বানান এবং একে ১৫০ টাকায় বিক্রি করেন। তবে মুনাফা হয় ৫০ টাকা। আর মুনাফার পরিমাণ হয় ৩৩%। আপনি যদি একই পণ্য ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে পারেন, তবে মুনাফার পরিমাণ হবে ৬৬%। দাম যত বেশি হবে এবং খরচ কম হবে, মুনাফার পরিমাণ তত বেশি হবে।


যাইহোক, আপনার মুনাফার পরিমাণ কখনো ১০০% এর বেশি হবে না। আর যদি ১০০ শতাংশের বেশি হয়, তার মানে হচ্ছে আপনি এমন কিছু বিক্রি করছেন যাতে আপনার কোন খরচই হয়নি।

মুনাফার পরিমাণ মার্কআপের মতো নয়। মার্কআপ হচ্ছে একটি পণ্য বা প্রস্তাবে দামকে কীভাবে উপস্থিত করা হয় তার সাথে খরচের তুলনা করা। এখানে মার্কআপের সূত্র দেওয়া হলো:


{(দাম - খরচ) / খরচ} x ১০০ = % মার্কআপ


যদি একটি পণ্য বা প্রস্তাবের দাম ১০০ টাকা হয় এবং আপনি একে ২০০ টাকায় বিক্রি করেন, তবে আপনার মার্কআপ ১০০%। কিন্তু আপনার মুনাফার পরিমাণ ৫০%। মুনাফার পরিমাণ কখনো ১০০ শতাংশের বেশি হতে পারে না। তবে মার্কআপগুলো ২০০%, ৫০০% বা ১০০০০% হতে পারে। এটা নির্ভর করে দাম এবং মোট খরচের উপর। আপনার পণ্যের দাম যত বেশি হবে এবং খরচ যত কম হবে, আপনার মার্কআপ তত বেশি হবে।


বেশিরভাগ ব্যবসা চেষ্টা করে প্রতিটি ক্রয়-বিক্রয় থেকে মুনাফার পরিমাণ (profit margin) যতটা বেশি লাভ করা যায় ততটা করতে। অবশ্য এটা তো স্বাভাবিক যে মুনাফার পরিমাণ যত বেশি হবে, বিক্রয় থেকে তত বেশি অর্থ আসবে। যাইহোক না কেন, মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে বাজারের অনেক চাপ রয়েছে যাতে করে সময়ের সাথে সাথে মুনাফার পরিমাণ হ্রাস পেতে থাকে। আবার অনেক প্রতিযোগী থাকে যারা দাম কমিয়ে দেয় এবং নতুন নতুন অফার দেয়। অন্যদিকে নতুন পণ্য উৎপাদনে খরচ বৃদ্ধি পায়।


ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায়ই মুনাফার পরিমাণকে (profit margin) নানা ধরনের পণ্যের অফারের সাথে তুলনা করে। যদি একটি কোম্পানির বাজারে একাধিক অফার থাকে, তবে তারা সর্বোচ্চ পরিমাণ মুনাফা সহ অফারগুলো দিয়ে থাকে। যদি একটি ব্যবসা তার পণ্য উৎপাদনে খরচ কমাতে পারে, তবে প্রায়ই এটা সর্বনিম্ন মুনাফার পরিমাণ রেখে অফার চালায়, যাতে বেশি পরিমাণে বিক্রি করে মুনাফার পরিমাণকে বৃদ্ধি করতে পারে।


আপনি যদি কোন ব্যবসাকে পরীক্ষা করতে চান, তবে মুনাফার পরিমাণের (profit margin) দিকে মনোযোগ দিন। পরিমাণ যত বেশি হবে, ব্যবসা তত শক্তিশালী এবং স্থায়ী হবে।


‘মুনাফার পরিমাণ’ সম্পর্কে প্রশ্ন:

- পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে আপনি যেসব অফার দেন তাতে মুনাফার পরিমাণ (profit margin) কত?

- আপনার অফারের মার্কআপ (markup) কত?


একই ধরনের বিষয় সম্পর্কে পড়ুন:


অর্থায়ন (finance)


মুনাফা (profit)


মুনাফার পরিমাণ (profit margin)


গুণগত মানের পরিমাণ (value capture)


পর্যাপ্ততা (sufficiency)


মূল্যায়ন (valuation)


ক্যাশ ফ্লো স্টেটমেন্ট (cash flow statement)


মুনাফা (Profit)

মুনাফা (Profit) কী?


‘আয় এবং ব্যয়ের মধ্যে যে পার্থক্য তাই হচ্ছে মুনাফা, এটা মানুষকে মনে করিয়ে দিন দেখবেন তারা আপনাকে স্মার্ট মনে করবে।’ - স্কট অ্যাডামস, কার্টুনিস্ট এবং ‘ডিলবার্ট’ কার্টুন চরিত্রের স্রষ্টা।


মুনাফা মানে খরচের চেয়ে বেশি যে অর্থ আপনি আয় করেন।


একটি ব্যবসায় টিকে থাকার জন্য, একে অবশ্যই মুনাফা করতে হবে। কারণ আপনি লোকসান দিয়ে বেশিদিন ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পারবেন না।


মুনাফা ব্যবসাকে আরও কিছু সুবিধা দেয়। ব্যবসাকে সম্প্রসারিত করতে বা হঠাৎ কোন ক্ষতির মুখ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।


মুনাফা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই বলে মুনাফা করাই ব্যবসার একমাত্র উদ্দেশ্য হওয়া উচিত নয়। নানা ধরনের ক্ষেত্র খুঁজে বের করা, অন্যদের সাহায্য করার মতো উদ্দেশ্যে ব্যবসা আরম্ভ করা যেতে পারে।


আপনার ব্যবসা থেকে যদি বছরে ১ কোটি টাকও আয় হয়, তাও যথেষ্ট নয়, যদি আপনি প্রতি বছর ১ কোটি ১০০ টাকা খরচ করেন। ব্যবসায় টিকে থাকতে হলে আপনাকে আপনার ব্যয় আয়ের থেকে কমাতে হবে। ব্যয় করলেন ৫০ টাকা, আর আয় করলেন ১০০ টাকা। তাহলে মুনাফা থাকে ৫০ টাকা। কিন্তু ব্যয় করলেন ১০০ টাকা, আর আয় করলেন ১০০ টাকা। তাতে মুনাফা তো থাকেই না; বরং সময় এবং শ্রম দিলেন তার সবই লোকসানের খাতায় উঠল। তাই অনেকেই বলে আমার বছরে কোটি টাকা আয় হয়। এ কথা বলাই যথেষ্ট নয়। ব্যবসা শুধু আয় করা এবং ততটাই বা তারচেয়ে বেশি ব্যয় করলেই হবে না। ব্যবসার মূল চিন্তা হচ্ছে কতটা আয় করছেন তা নয়; বরং আপনি কতটা রাখতে পারছেন।


মুনাফা খুব সোজা হিসাব: এর মানে হচ্ছে আপনি খরচ করার পর কত টাকা রাখতে পারছেন। যেকোন ব্যবসাকে টিকে থাকতে হলে মুনাফা থাকতে হবে। মুনাফা হতে গেলে ব্যয়ের চেয়ে আয় বেশি হতে হবে। আর তা যদি না হয়, তবে ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়বে, ব্যবসায়িক কার্যক্রম ঠিকভাবে চলবে না, বন্ধ হয়ে যাবে অথবা অন্য কোন খাতের মুনাফা থেকে টাকাপয়সা এনে ভর্তুকি দিতে হবে। তাছাড়া লোকসান করে কতদিন ব্যবসা চালানো যায়?


মুনাফা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হলে মুনাফার দরকার আছে। মুনাফা করা ছাড়া একটি ব্যবসায় মালিকের পক্ষ থেকে বেশিদিন ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব নয়। মালিক হয়তো চিন্তা করবে আমি আমার টাকাপয়সা, সময় এবং শক্তি অন্য কোথাও দিলে আরও ভালো মুনাফা করতে পারতাম। আর মালিক বা বিনিয়োগকারীরা ব্যবসায় বিনিয়োগ করার মতো মুনাফাজনক না দেখে, তবে তারা বিনিয়োগ থেকে সরে দাঁড়াবে। এতে করে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।


মুনাফা একটি নিরাপত্তা দেয়, যাতে করে ব্যবসায় হঠাৎ কোন অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটলে মুনাফার সাহায্য পাওয়া যায়। যদি একটি ব্যবসায় হঠাৎ তার উৎপাদন খরচ বেড়ে যায় অথবা প্রয়োজনীয় কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পায়, তখন সমস্যা তৈরি হয়। ব্যবসা যত বেশি লাভজনক হবে, এটি তত বেশি অনিশ্চয়তা এবং পরিবর্তনগুলোকে সামলাতে পারবে।


মুনাফাকে যদিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়, কিন্তু এটাই ব্যবসার প্রকৃত উদ্দেশ্য নয়। কিছু মানুষ বিশ্বাস করে যে ব্যবসার আসল উদ্দেশ্য যত বেশি পারা যায় মুনাফা অর্জন করা। কিন্তু ব্যবসা গড়ে ওঠার এই একমাত্র কারণ নয়। আমার মতো কিছু লোক আছে, যারা বিশ্বাস করে, ব্যবসা একটি সৃজনশীল উদ্যোগ, কী করা সম্ভব তার একটি উপায়, অন্যদের সাহায্য করার পন্থা এবং একই সাথে নিজেকে সাপোর্ট করার ব্যবস্থা। এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, আপনি ব্যবসায় ততটুকুই মুনাফা করবেন যতটুকু হলে আপনার ব্যবসা সফলভাবে পরিচালিত হতে পারে।


‘মুনাফা’ সম্পর্কে প্রশ্ন:


- আপনার ব্যবসা কি ব্যয় করার চেয়ে বেশি আয় করছে?

- আপনার ব্যবসার মূল উদ্দেশ্য কি সর্বোচ্চ মুনাফা করা নাকি অন্য কোন বিষয় বা লক্ষ্যকে আপনি অগ্রাধিকার দেন?



একই ধরনের বিষয় সম্পর্কে পড়ুন:


অর্থায়ন (Finance)


মুনাফা (Profit)


মুনাফার পরিমাণ (Profit Margin)


গুণগত মানের পরিমাণ (Value Capture)


পর্যাপ্ততা (Sufficiency)


মূল্যায়ন (Valuation)


ক্যাশ ফ্লো স্টেটমেন্ট (Cash Flow Statement)


অর্থায়ন (Finance)

অর্থায়ন (Finance) কী?


‘যেসব মানুষ টাকাপয়সা সম্পর্কে অবজ্ঞার সাথে কথা বলে, আমি প্রায়ই ভাবি যে তারা কি কখনো টাকাপয়সা ছাড়া কাজকর্ম করার কথা চিন্তাভাবনা করেছে কিনা।’ - ডব্লিউ সমারসেট মাঘাম, অফ হিউম্যান বন্ডেজ বইয়ের লেখক


আমার অভিজ্ঞতায় বলে, লোকজন পণ্যের গুণগত মান সৃষ্টি, মার্কেটিং, সেলস এবং ভ্যালু ডেলিভারি তথা সেবা প্রদানের অধ্যায় ও বিষয় খুব ভালোভাবেই পড়ে ও বোঝে। কিন্তু যখনই তারা ফাইন্যান্স তথা অর্থায়নের ব্যাপারে পড়তে যায়, তখন তাদের চোখটা পিটপিট করে। এটা যেন বসে বসে চাল গণনা করার মতো অবস্থা। গাণিতিক সূত্র থাকে, স্প্রেডশিটে অনেক সংখ্যা দেখতে দেখতে কেমন একঘেয়ে লাগে। আসলে ব্যাপারটা যে সবসময় এমনই হবে তা কিন্তু নয়। অর্থায়ন ব্যাপারটা কিন্তু বেশ সহজ এবং মজার। আপনাকে কেবল এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নিজের মনোযোগ দিতে হবে।


ফাইন্যান্স হলো একটি ব্যবসার ভেতর এবং বাইরে টাকাপয়সার প্রবাহ দেখার শিল্প ও বিজ্ঞান। তারপর আপনি সিদ্ধান্ত নিবেন যে এই প্রবাহ চালিয়ে নেওয়া ঠিক হবে কিনা। আর অ্যাকাউন্টিং হচ্ছে আপনি ফাইন্যান্সিয়াল বা আর্থিক সিদ্ধান্ত যতটা সম্ভব সঠিক এবং সম্পূর্ণ করার জন্য যে তথ্যউপাত্ত ব্যবহার করেন তা নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া।


এটি আসলে ততটা কঠিন কিছু নয়। অবশ্য আপনি অনেক মডেল এবং শব্দগুচ্ছ পাবেন। কিন্তু শেষ কথা হচ্ছে আপনি এতসব সংখ্যা ব্যবহার করছেন যাতে করে আপনার ব্যবসা আপনার সিদ্ধান্ত মতো কাজ করছে কিনা তা জানা অথবা যা চলছে তা আপনার জন্য লাভজনক কিনা।


প্রতিটি সফল ব্যবসা চালিয়ে যেতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আয় করতে হয়। আপনি যদি গুণগত মূল্য সৃষ্টি করেন, মার্কেটিং, সেলস এবং গ্রাহকদের গুণগত সেবা প্রদান করেন, এতে করে প্রতিদিন আপনার ব্যবসার মাধ্যমে টাকাপয়সা ব্যবসার ভেতর এবং বাইরে প্রবাহিত হচ্ছে। এই প্রবাহ ধারা বজায় রাখতে হলে, আপনাকে অবশ্যই মুনাফা করতে হবে যাতে করে আপনি আপনার সময় এবং প্রচেষ্টার বিনিময় মূল্য পান। আর ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাতেও তো টাকাপয়সা লাগবে।


প্রত্যেকেরই ঘরবাড়ির বিল দিতে হবে এবং বাজার সদাই কিনতে হবে। তাই তো লোকজন ব্যবসায়িক নানা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে যায়। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোও মানুষের সময় এবং শক্তিকে কাজে লাগিয়ে মুনাফা করতে চায় এবং কর্মীদের বেতন দেয়। যদি তা না হয়, তবে কর্মীরা চাকরি ছেড়ে দিবে এবং অন্য কিছু করবে। তাই প্রতিটি ব্যবসাকেই মুনাফা আকারে কিছু পরিমাণ অর্থ আয়ত্ত করতে হবে, যাতে করে ব্যবসায়িক কার্যক্রমের ব্যয় নির্বাহ করা যায় এবং ব্যবসা পরিচালনাকারী ব্যক্তিদের সময় ও শ্রমের বিনিময় মূল্য দিতে পারে।


খুব ভালো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো এক ধরনের সুনীতিসম্পন্ন ব্যবসায়িক সিস্টেম তৈরি করতে সক্ষম হয়। তারা গ্রাহকদের জন্য বহুল পরিমাণে গুণগত মান সৃষ্টি করে, এই গুণগত মান সৃষ্টি করতে খুব বেশি খরচ করে না, কিন্তু বেশ আয় করে। ফলস্বরূপ, তারা একই সাথে নিজেদের জন্য মুনাফা অর্জন করে এবং তাদের গ্রাহকদের জীবনকে উন্নত করে। কেননা তারা ব্যবসার সাথে জড়িত সকলের জীবনকে উন্নত হতে সাহায্য করছে।


ফাইন্যান্স তথা অর্থায়ন আপনাকে আপনার টাকাপয়সা এমনভাবে দেখতে সাহায্য করে যাতে এটা কোন কাণ্ডজ্ঞানসম্পন্ন উপায়ে ব্যবহার করা যায়।




একই ধরনের বিষয় সম্পর্কে পড়ুন:


অর্থায়ন (Finance)


মুনাফা (Profit)


মুনাফার পরিমাণ (Profit Margin)


গুণগত মানের পরিমাণ (Value Capture)


পর্যাপ্ততা (Sufficiency)


মূল্যায়ন (Valuation)


ক্যাশ ফ্লো স্টেটমেন্ট (Cash Flow Statement)