শনিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২১

একটি বিজয়ী দল গঠন করুন

 একটি বিজয়ী দল গঠন করুন


‘তুমি দুনিয়াতে কেবল কোনোরকম জীবনযাপনের জন্য আসনি। তুমি দুনিয়াতে এসেছ তোমার বড় বড় স্বপ্ন নিয়ে, মানুষের জন্য ভালো কিছু করার আশা নিয়ে এবং বড় বড় কৃতিত্বসম্পন্ন কাজ করে একে কানায় কানায় পরিপূর্ণ করে দিতে। তুমি এসেছ দুনিয়াকে সমৃদ্ধ করতে। তুমি যদি এ বার্তা ভুলে যাও তবে তুমি নিঃস্ব হয়ে পড়বে।’—আমেরিকার প্রেসিডেন্ট উইড্র উইলসন (বই: টিমওয়ার্ক ১০১)

ছবিসূত্র: freepik.com


যখন আমরা নেতাদের তৈরি হওয়া নিয়ে কথা বলি, তখন বলি নেতারা জন্ম থেকে নেতা হয়ে জন্মায় না, তারা নিজেদের সুযোগ্য নেতা হিসাবে নিজেদের তৈরি করে। আর যা অন্যরা তৈরি করতে পারে, তা আপনিও তৈরি করতে পারবেন। এ কেবল চর্চা ও অনুশীলনের ব্যাপার। আর নেতা হয়ে ওঠাটা যেকোন কাজে, যেকোন পদে প্রথম হওয়ার, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হওয়ার পথে সবচেয়ে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে। এটাকে এক নম্বর গুণ বলতে পারেন। আপনার যত গুণাবলি আছে সব গুণকে নেতৃত্ব দিবে যদি আপনি আপনার মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি গঠন করেন। এতে করে আপনি আপনার গুণাবলিকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজে লাগাতে সক্ষম হবেন। এতে করে আপনি একদল পুরুষ বা নারীকে দলবদ্ধভাবে কাজ করতে উৎসাহিত করতে পারবেন। তাদেরকে একসাথে, এক উদ্দেশ্যে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারবেন। আপনি গঠন করবেন বিজয়ী দল, যারা আপনাকে আপনার স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে নিবে। বড় বড় কাজ করতে অবশ্যই দল দরকার। আর সেই দল হতে হবে বিজয়ী দল।

একটি বিজয়ী দল গঠনের জন্য নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। এর রয়েছে সাতটি ধাপ:

১। পরিপূর্ণ প্রশিক্ষণ এবং নেতৃত্ব: দলকে অগ্রসর হওয়ার জন্য কে ডাক দেয় তা সকলেই জানে। একজন প্রশিক্ষক থাকে এবং সকলেই দলের প্রধানকে চেনে। বিজয় নেতারা নিজেদের ভালো লোকদের দ্বারা বেষ্টিত রাখে। আপনি একজন নেতার গুণাগুণ তার চারপাশের লোকদের গুণাগুণ দেখেই বলে দিতে পারবেন, যাদের দ্বারা সেই নেতা নিজেকে বেষ্টিত রাখে। তেজদীপ্ত নেতারা নিজেদের চারপাশে তাদের চেয়ে যোগ্য লোকদের নির্বাচন করে। দুর্বল নেতারা তাদের চেয়ে দুর্বলতর লোক নির্ধারণ করার চেষ্টা করে।

২। লোকদের প্রশিক্ষণ ও উন্নতিতে যত্নবান হোন: একটি বিজয়ী দল গঠনের জন্য প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে আপনার লোকদের দক্ষতা ও যোগ্যতা তৈরি করা, অনুপ্রেরণা দেওয়া, উৎসাহ প্রদান, প্রশিক্ষণ ও মান উন্নয়ন করার কাজগুলো হবে সামগ্রিক লক্ষ্যের কেন্দ্রবিন্দু।

৩। পরিকল্পনার উপর খুব বেশি জোর দিন: বিষয়টি একটি জটিল কাজ, পরিস্থিতি অনুধাবন করুন। ব্যবস্থাপনা নিয়ে হ্যারল্ড জেনিনের বিখ্যাত বইয়ে তিনি লেখেন যে প্রধান চাবিকাঠি হল প্রকৃত তথ্য। আপনি ধারণাকৃত অবস্থা বা যে অবস্থা আশা করেন বা সম্ভাব্য পরিস্থিতির উপর সন্তুষ্ট না হয়ে প্রকৃত ঘটনা জানুন। জেনিন লেখেন যে প্রকৃত ঘটনা মিথ্যা বলে না এবং সুন্দরভাবে পরিকল্পনা করা ব্যবসায়িক বুদ্ধিবৃত্তির উপর নির্ভর করে। আপনি যদি একটি বিজয়ী দল বা বিজয়ী সেনাপতির দিকে লক্ষ করেন, দেখবেন বিখ্যাত যুদ্ধে বিজয়ী দলগুলো নিজেদের লোকদের বুদ্ধিমত্তার কারণেই জিতেছিল। তারা সঠিক তথ্য পায় এবং সেগুলো নিজেদের পরিকল্পনার সাথে সংযুক্ত করে। দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধের ফলাফল সম্ভবত ব্রিটিশদের দ্বারা জার্মানির গোপন যন্ত্রের মাধ্যমে তাদের যুদ্ধক্ষেত্রগুলোতে এবং কমান্ডারদের মধ্যে সামনে এগিয়ে যাওয়া ও পেছনে ফিসে আসা সম্পর্কিত প্রেরিত বার্তাগুলোর পাঠোদ্ধারের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়েছিল।

বিপদকালীন সময়ে বিকল্প পরিকল্পনাও উন্নত করুন। সব বিখ্যাত সেনাপতিদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, যখন তারা যুদ্ধক্ষেত্রে গমন করতেন, পারিপাশির্^কতা যেমনই হোক, তারা সবসময় নিজেদের জিজ্ঞাসা করতেন যে তারা কী করবেন যদি তাদের পিছু হটতে হয়। ওয়াটার লু’র যুদ্ধে ওয়েলিংটনের কাছে ১৭ হাজার অভিজ্ঞ সৈন্য সংরক্ষণে ছিল। যদি পরাজয়ের সম্ভাবনায় ওয়েলিংটনের পিছ হটার প্রয়োজন হত বা তাকে যুদ্ধ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেয়া হত তবে সেসব সৈন্যরা তাকে রক্ষা করত। এমনকি তিনি সেদিনের যুদ্ধে যখন পরাজিত হতে যাচ্ছিলেন, তখনও তিনি তার সংরক্ষিত সৈন্যদের যুদ্ধে নেননি। শেষ পর্যন্ত তিনি যুদ্ধে জয়লাভ করে। যদি ওয়েলিংটন তার সংরক্ষিত সৈন্যদের যুদ্ধে অন্তর্ভুক্ত করতেন, তাহলে সেদিন তিনি হয়তো অনেক আগেই যুদ্ধে জয়লাভ করতেন এবং পরাজয়ের নিকটবর্তী হতেন না। কিন্তু একজন উৎকৃষ্ট সেনাপতির সবসময় সবচেয়ে খারাপ ফলাফলের জন্য বিকল্প পরিকল্পনা থাকে। একজন নেতা যিনি সম্ভাব্য কী ভুল হতে পারে, তা চিন্তা না করেই একটি পরিকল্পনা করেন, তিনি সম্ভাব্য ভুলের বিপরীতে প্রস্তুতি বা সতর্কতা স্বরূপ পরিকল্পনা না নিয়ে ব্যবসায় মারাত্মক ভুল করবেন।

৪। বাছাইকৃত কাজ করুন: একজন নেতা হিসাবে আপনি বেতনভুক্ত লোক নিয়োগ দেন এবং আপনি তাদেরকে সেই কাজে নিয়োজিত করবেন যেখানে তারা শক্তিশালী অবদান রাখতে পারবে। যদি তারা সেখানে ভালো করতে না পারে আপনি তাদেরকে আশেপাশে অন্য কাজে সরিয়ে দিন এবং তাদেরকে আপনি পরিবর্তন করতেই থাকবেন যতক্ষণ না আপনি তার জন্য উপযুক্ত স্থান পান যেখানে সে নিজের সর্বোচ্চ দক্ষতা প্রকাশ করতে পারে এবং নিজের কাজকর্মের মূল্যবান ভূমিকা রাখতে পারে।

৫। অযোগ্য লোকদের ছাঁটাই করার যোগ্যতা: যদি আপনার বাছাইকৃত লোকজন প্রতিষ্ঠানের কাজে ভূমিকা রাখতে না পারে, আপনি অবশ্যই তাদের সংস্পর্শ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখবেন। কারণ যত অধিক সময় আপনি অযোগ্য লোকদের কাজে রাখবেন, তত অধিক সময় ধরে আপনি অযোগ্য নেতা হিসাবে বিবেচিত হবেন। শুধু তাই নয়, আপনি একটি বার্তা দিলেন যে আপনার প্রতিষ্ঠানে অযোগ্য হওয়ার একটি পুরস্কার আছে এবং তা হল চাকুরির নিরাপত্তা। এই অবস্থা অন্য যোগ্য ব্যক্তি এবং সকলকে নিরুৎসাহিত করবে। তাদের সকলকে প্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিজেদের সাধ্যের চেয়ে কম ভূমিকা রাখতে প্ররোচিত করবে।

৬। উন্নতর যোগাযোগ: যেকোন প্রতিষ্ঠানের অন্যতম এক দুর্বলতা হল অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। সেখানে উন্নতি, অবনতি বা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে কী ঘটছে সেই ব্যাপারে যথেষ্ট তথ্য থাকে না। ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতায় জয় প্রত্যাশী দলের উন্মুক্ত যোগাযোগ প্রয়োজন যাতে করে লোকজন প্রতিষ্ঠানের যেকোন জায়গায় খুব তাড়াতাড়ি চাহিদা অনুযায়ী তথ্য পেয়ে যায়।

৭। শ্রেষ্ঠত্বের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হোন: শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া একমাত্র বিষয় যা মানুষকে প্রভাবান্বিত করে। সেরা হওয়ার বাসনা তাদেরকে সকালে বিছানা থেকে পৃথক করে দেয়, কাজের প্রতি উদ্দীপ্ত ও নিবেদিতপ্রাণ করে তোলে। ফলশ্রæতিতে নেতারা সবসময় বিজয় অর্জন, সফলতা ও অন্যান্যদের চেয়ে ভালো হওয়ার বিষয়ে কথা বলে।


তথ্যসূত্র: লিডারশিপ। লেখক: ব্রায়ান ট্রেসি। অনুবাদ: ফজলে রাব্বি। ঢাকা, সাফল্য প্রকাশনী, ২০২১।

শনিবার, ২১ আগস্ট, ২০২১

একটি কৌশলগত পরিকল্পনা গঠন

 একটি কৌশলগত পরিকল্পনা গঠন


নেতাদের অবশ্যই তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য কৌশলী পরিকল্পনা থাকে। ব্যবসা ক্ষেত্রে ছয়টি প্রশ্ন রয়েছে, আপনাকে একটি উপযোগী পরিকল্পনার উন্নয়ন ঘটাতে গেলে অবশ্যই সেই ছয় প্রশ্নের উত্তর প্রদান করতে হবে।

১। আপনার বর্তমান অবস্থান কোথায়? যেকোন কৌশলগত পরিকল্পনা প্রতিষ্ঠানের অবস্থাকে সম্পূর্ণ মূল্যায়ন করে শুরু করা হয়। আপনি যদি আপনার বর্তমান অবস্থা না জানেন, আপনি আপনার প্রতিষ্ঠানের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় কোন পদক্ষেপগুলো নিতে হবে তাও জানবেন না। নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। ব্যবসার প্রতিটি ক্ষেত্রে বা পণ্যের ব্যাপারে বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা, লভ্যাংশ, সম্পদ, প্রচলিত চাহিদা এবং প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান নির্ধারণ করুন।

২। আপনি আজ যেখানে আছেন সেখানে কীভাবে পৌঁছলেন? সততাই এখানে সফলতার চাবিকাঠি। কোন সিদ্ধান্ত আপনাকে বর্তমান অবস্থায় এনেছে? আপনি কোন কাজগুলো করছেন যা আপনার বর্তমান সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ? ফলদায়ক ক্রেতা অর্জন এবং ধরে রাখার জন্য কোন কাজগুলো অপ্রয়োজনীয়? কোন কাজগুলো বাইরে অর্থাৎ মেশিনে করা সম্ভব কিন্তু এখনো সেগুলো ঘরেই করা হচ্ছে?

৩। আপনি আপনার বর্তমান অবস্থান থেকে কোথায় যেতে চান? একসময় আপনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন বলেই আজকের অবস্থানে আছেন। ধাপ ১ ও ২ কেন আপনি আজকের অবস্থানে আছেন তার উত্তর দেয়। আপনি অবশ্যই এখন আপনার গন্তব্যস্থল সনাক্ত করবেন। বিস্তারিতভাবে ভাবুন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যে পণ্য বিক্রি করছেন, যেই ধরনের ক্রেতাদের নির্দিষ্ট করে বিক্রি করছেন এবং অর্থনৈতিক যেই অবস্থা আপনি আজ থেকে পাঁচ বছর পর বাস্তব পৃথিবীতে দেখতে চান তার সবকিছু সনাক্ত করুন।

৪। আপনি কীভাবে আজ যেখানে আছেন সেখান থেকে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছবেন? আপনি মাত্র যে ভবিষ্যতের বর্ণনা করলেন তা অর্জন করার জন্য আপনাকে যা যা করতে হবে তার পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করুন। প্রতিটি সময় আপনি নতুন যেসব কাজের চিন্তা করছেন, তাও আপনার তালিকায় যোগ করুন।

৫। আপনার কৌশলগত লক্ষ্য পূরণের জন্য আপনাকে কোন কোন বাধা কাটিয়ে উঠতে হবে? সীমিত বাধা এবং কারণ রয়েছে যেগুলো আপনাকে আপনার কৌশলগত পরিকল্পনায় বর্ণনাকৃত আদর্শ প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হতে বিরত রাখছে। সেই সীমাবদ্ধতা আর কারণগুলো কী কী এবং আপনি সেগুলোর ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?

৬। আপনার কৌশলগত উদ্দেশ্যসমূহ পূরণের জন্য অতিরিক্ত কী কী জ্ঞান অথবা সম্পদ দরকার? সবসময় নতুন নতুন মৌলিক দক্ষতার আবির্ভাব হচ্ছে যা একটি প্রতিষ্ঠানকে গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে বা তার প্রতিযোগীদের চেয়ে এগিয়ে যেতে অর্জন করতে হবে বা প্রতিষ্ঠানটিতে সেই বিষয়গুলোর উন্নতি করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, অনেক প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিজ্ঞ ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের লোকবলের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে।

তথ্যসূত্র: লিডারশিপ। লেখক: ব্রায়ান ট্রেসি। অনুবাদ: ফজলে রাব্বি। ঢাকা, সাফল্য প্রকাশনী, ২০২১।

বৃহস্পতিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২১

সাহসিকতা নিয়ে শত উক্তি

সাহসিকতা নিয়ে শত উক্তি



১। সাহস হচ্ছে কী কী জিনিস বা বিষয় ভয় পাওয়া যাবে না তা সম্পর্কে জানা। - প্লেটো

২। সাহস হচ্ছে আধ্যাত্মিকতার বৈশিষ্ট্য। সাহস তখনই আসে যখন আপনি নিজেকে জানেন এবং নিজের সম্পর্কে জ্ঞান থাকার কারণেই নিজেকে ভালোবাসেন। - অমিত রায়

৩। সাহসের বিপরীত কাপুরুষতা নয়। সাহসের বিপরীত হচ্ছে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী চলা। মানে কেউ তো এই কাজ এভাবে করে না বা প্রতিবাদ করে না, আপনি কেন করছেন-এমন কিছু। এমনকি একটি মাছও যদি স্রোতের সাথে চলতে থাকে তবে দ্রুতই এর মৃত্যু ঘটবে। - জিম হাইটওয়ার

৪। সাহস মানে এই নয় যে আপনি ভয় পাবেন না। সাহস মানে আপনি ভয় পেলেও কাজটি করা থামাবেন না। - বেথানি হ্যামিল্টন

চলবে...


তথ্যসূত্র: নিজের ভেতর সাহস অনুভব করার জন্য পড়ুন সাহসিকতা নিয়ে শত উক্তি





মঙ্গলবার, ১৭ আগস্ট, ২০২১

ব্রেইনস্ট্রমিং এ পোস্ট-ইট কীভাবে ব্যবহার করবেন?

 ব্রেইনস্ট্রমিং এ পোস্ট-ইট কীভাবে ব্যবহার করবেন?




Post-it

Post-its were born for brainstorming. They are a great size to focus and record a single idea. As Post-its can be peeled off a surface and re-applied several times, the ideas can then be rearranged and ordered into groups of similar ideas. The approach encourages a group to come together and generate ideas simultaneously. 

Watch the video to see a typical Post-it brainstorming session in action.


Here’s a summary of the steps involved in a typical Post-it session.

  • Define the brief
  • Distribute the brief to the participants in advance of the session
  • Remind the participants of the brief
  • Allow participants to record ideas for 10-20 min
  • Review the ideas generated individually or inspire additional ideas 
  • Allow for a further idea-generation session to take place 
  • Review the ideas generated collectively by asking participants to share their favorite ideas 
  • Invite the group to categorize the ideas by rearranging the postits 

এটা প্রচার করুন
এর পরে মস্তিষ্কের জন্য জন্ম হয়েছিল। এগুলি একটি একক ধারণা ফোকাস এবং রেকর্ড করার জন্য একটি দুর্দান্ত আকার। যেহেতু পোস্ট-এটি একটি পৃষ্ঠ থেকে ছিদ্র করা যেতে পারে এবং বেশ কয়েকবার পুনরায় প্রয়োগ করা যেতে পারে, তখন ধারণাগুলি আবার সাজানো এবং অনুরূপ ধারণাগুলির গোষ্ঠীতে অর্ডার করা যেতে পারে। পদ্ধতিটি একটি গোষ্ঠীকে একত্রিত হতে এবং একই সাথে ধারণা তৈরি করতে উত্সাহিত করে।

একটি সাধারণ পোস্ট-ইট ব্রেইনস্টর্মিং সেশন দেখতে ভিডিওটি দেখুন।

এটি একটি সাধারণ পোস্ট-ইট সেশনে জড়িত পদক্ষেপগুলির একটি সারসংক্ষেপ।

সংক্ষিপ্ত সংজ্ঞায়িত করুন
অধিবেশনের আগে অংশগ্রহণকারীদের সংক্ষিপ্ত বিতরণ করুন
সংক্ষিপ্ত অংশগ্রহণকারীদের মনে করিয়ে দিন
অংশগ্রহণকারীদের 10-20 মিনিটের জন্য ধারনা রেকর্ড করার অনুমতি দিন
পৃথকভাবে উত্পন্ন ধারণাগুলি পর্যালোচনা করুন বা অতিরিক্ত ধারণাগুলি অনুপ্রাণিত করুন
আরও ধারণা-প্রজন্মের অধিবেশন হওয়ার অনুমতি দিন
অংশগ্রহণকারীদের তাদের পছন্দের আইডিয়া শেয়ার করতে বলার মাধ্যমে সম্মিলিতভাবে তৈরি ধারণাগুলি পর্যালোচনা করুন
পোস্টগুলিকে পুনর্বিন্যাস করে ধারনাগুলিকে শ্রেণীবদ্ধ করার জন্য গোষ্ঠীকে আমন্ত্রণ জানান

ব্রেইনস্ট্রমিং এ ফ্লিপ-চার্ট কীভাবে ব্যবহার করবেন?

ব্রেইনস্ট্রমিং এ ফ্লিপ-চার্ট কীভাবে ব্যবহার করবেন?



Flip Chart

The Flip Chart approach serves as a great entry activity to a brainstorming session. For example, it can be used to determine the important areas of a problem. The group can "Flip Chart" brainstorm these for several minutes.     

Watch the following video to get familiar with the setup and steps of a typical Flip Chart brainstorming session.

The following steps are a reminder of the Flip Chart brainstorming process:

  1. During preparation, ensure that the brief defines the problems and that people, pens and drawing surface are available
  2. Organize the group so that all can see the display medium
  3. Remind participants of the brief
  4. Invite solutions for a period of time (no criticism allowed)
  5. Record ideas
  6. End the session when the frequency of ideas has reduced and energy levels of the group have dropped
  7. Review or reinvigorate for another session
  8. Re-review the material to see if additional ideas are inspired by (for instance, a combination of two of the suggestions)

As mentioned, Flip Charts are a great entry activity to a brainstorming session. However, they should be used sparingly as they are a one-sided approach with a single facilitator that records the ideas.

Following this, a more structured brainstorming technique such as post-its or grid can be used for simultaneous idea contributions from the team.

ফ্লিপ চার্ট

ফ্লিপ চার্ট পদ্ধতি একটি মস্তিষ্কের আলোচনার অধিবেশনে একটি দুর্দান্ত এন্ট্রি কার্যকলাপ হিসাবে কাজ করে। উদাহরণস্বরূপ, এটি একটি সমস্যার গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র নির্ধারণ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই গ্রুপটি কয়েক মিনিটের জন্য "ফ্লিপ চার্ট" ব্রেইনস্টর্ম করতে পারে। একটি সাধারণ ফ্লিপ চার্ট ব্রেইনস্টর্মিং সেশনের সেটআপ এবং ধাপগুলির সাথে পরিচিত হতে নিম্নলিখিত ভিডিওটি দেখুন।

নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি ফ্লিপ চার্ট মস্তিষ্কের প্রক্রিয়াটির একটি অনুস্মারক: প্রস্তুতির সময়, নিশ্চিত করুন যে সংক্ষিপ্ত সমস্যাগুলি সংজ্ঞায়িত করে এবং মানুষ, কলম এবং অঙ্কন পৃষ্ঠ পাওয়া যায় গোষ্ঠীটি সংগঠিত করুন যাতে সবাই প্রদর্শন মাধ্যম দেখতে পায় সংক্ষিপ্ত অংশগ্রহণকারীদের মনে করিয়ে দিন সময়ের জন্য সমাধান আমন্ত্রণ করুন (কোন সমালোচনার অনুমতি নেই) ধারনা রেকর্ড করুন ধারণার ফ্রিকোয়েন্সি কমে গেলে এবং গ্রুপের শক্তির মাত্রা কমে গেলে সেশন শেষ করুন অন্য সেশনের জন্য পর্যালোচনা বা পুনরুজ্জীবিত করুন অতিরিক্ত ধারনা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয় কিনা তা দেখতে উপাদানটি পুনরায় পর্যালোচনা করুন (উদাহরণস্বরূপ, দুটি পরামর্শের সংমিশ্রণ) উল্লিখিত হিসাবে, ফ্লিপ চার্টগুলি একটি মস্তিষ্কের আলোচনার অধিবেশনে একটি দুর্দান্ত এন্ট্রি কার্যকলাপ। যাইহোক, সেগুলি খুব কমই ব্যবহার করা উচিত কারণ তারা একক সুবিধা প্রদানকারী একটি একতরফা পদ্ধতি যা ধারণাগুলি রেকর্ড করে। এটি অনুসরণ করে, দল থেকে একযোগে ধারণা অবদানের জন্য একটি আরও কাঠামোগত মস্তিষ্কের কৌশল যেমন পোস্ট-ইট বা গ্রিড ব্যবহার করা যেতে পারে।

কীভাবে ব্রেইনস্ট্রমিং করবেন? বা ব্রেইনস্ট্রমিং করার পদ্ধতি বা নীতিসমূহ

মেকানিক্যাল ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ারিং হ্যান্ডবুক এর দ্বিতীয় সংস্করণ, লেখক পিটার আর এন চাইল্ডস



ব্রেইনস্ট্রমিং করার পদ্ধতি বা নীতিসমূহ:


মেকানিক্যাল ডিজাইন হ্যান্ডবুক থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পয়েন্ট এখানে তুলে ধরা হল।


ব্রেইনস্ট্রমিং সাধারণত একটি অনেক ধরনের পেশার মানুষজন একত্র হয়ে মিটিং করা অথবা একই কোম্পানির বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের মানুষজন একত্র হয়ে মিটিং করার ব্যাপার এবং একটি নির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন আইডিয়ার প্রস্তাব দেয়। ব্রেইনস্ট্রমিং করার কিছু নীতি আছে যা মানুষ দলবদ্ধভাবে মেনে চললে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। ব্রেইনস্ট্রমিং এ কত ভালো মানের বুদ্ধি কে দিতে পারল তারচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ েহচ্ছে পুরো দল মিলে কতগুলো বুদ্ধি বের করতে পারল। মানের চেয়ে সংখ্যার দিকে, পরিমাণের দিকে জোর দিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। ব্রেইনস্ট্রমিং করার সময় অন্য কারও আইডিয়া বা বুদ্ধি-পরামর্শকে কোনভাবেই সমালোচনা করা যাবে না। তা যত অবাস্তব বুদ্ধি-পরামর্শ হোক না কেন। কোন সমালোচনা চলবে না। একজন ব্যক্তিকে রাখতে হবে তিনি কাগজেকলমে প্রত্যেকের দেয়া আইডিয়া লিখে রাখবেন। ব্রেইনস্ট্রমিং সেশনের জন্য নির্ধারিত সময় রাখতে হবে। ৬০ থেকে ৯০ মিনিটের বেশি নয়। সময় শেষ হলে যতগুলো আইডিয়া এসেছে সেগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতে হবে। এর আগে নয়। এতে করে দেখা যাবে অল্প কয়েকটি আইডিয়া হলেও, সেগুলো মিলে নির্ধারিত সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। যা আলাদাভাবে যেকোন একজন সদস্যের একটি আইডিয়ার থেকে উত্তম। এটা অনেকটা শুধু ভাত রান্না করা, আর কয়েক পদ দিয়ে খিচুড়ি রান্না করার মতো। কেবল ভাতের চেয়ে কয়েক পদ মিশ্রিত খিচুড়ি পুষ্টি গুণমানের দিক দিয়ে যেমন উত্তম, তেমন অনেকের আইডিয়া মিলে নির্ধারিত সমস্যার সমাধানও উৎকৃষ্ট সমাধান। বিভিন্ন কোম্পানির জন্য ব্রেইনস্ট্রমিং একটি পরিচিত ব্যাপার। শুধু আমেরিকাতেই ৭০% কোম্পানি ব্রেইনস্ট্রমিং পদ্ধতি চর্চা করে। এতে করে কোম্পানি পরিচালনার ক্ষেত্রে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়, ঝরনার মতো বুদ্ধি আসে এবং কোম্পানির লোকজন কর্মতৎপর হয়ে ওঠে।

ওসবর্ন (1963) পর্যবেক্ষণ করে দেখেন যে আইডিয়া বা বুদ্ধিপরামর্শের গুণগত মান বৃদ্ধি পায় যদি আইডিয়া প্রকাশের সাথে সাথে তা কত ভালো সেটা বিবেচনা না করা হয়; বরং কত বেশি বা কতগুলো আইডিয়া যোগাড় করা গেল সেদিকে মনোযোগ দেয়া যায়। কিছু নীতি আছে যেগুলো মেনে চললে মস্তিষ্কের কর্মকাণ্ড আরও দারুণভাবে কাজ করে। একটি ব্রেইনস্ট্রমিং সেশনে

  • কোন সমালোচনা করা যাবে না,
  • কেউ কোন আইডিয়া দিলেই সাথে সাথে মূল্যায়ন করার অভ্যাস বাদ দিতে হবে,
  • কোন আইডিয়া অদ্ভুত বলে বিচারবিবেচনা করে কাটছাঁট করা যাবে না,

এতে করে লোকজন আইডিয়া উপস্থাপন করতে সাহস পাবে। কোন ধরনের সমালোচনার ভয়ভীতি ছাড়াই মানুষ তার আইডিয়া বলতে পারবে। যখন কেউ কোন আইডিয়া শেয়ার করে তখন বুঝতে হবে মানুষ খুবই ব্যক্তিগত, আন্তরিক একটা ব্যাপার আপনাকে জানাচ্ছে। সুতরাং ব্যাপারটাকে সম্মান করতে হবে। তাই আলাপ-আলোচনার পরিবেশ যত সহজসাধ্য হবে, তত বেশি আইডিয়া প্রকাশ করতে লোকজন আগ্রহী হবে। কিন্তু পরিবেশ প্রতিকূলে থাকলে লোকজন কম আইডিয়া প্রকাশ করবে অথবা আইডিয়া প্রকাশ করার আগে চিন্তা করে নিবে বাকিরা কিছু মনে করবে না তো। আইডিয়া আসলে আসতে দিন। অনেক সময় দেখা যায় প্রথম প্রথম কোন একটা আইডিয়াকে অকার্যকর বলে বোধ হচ্ছে। হয়তো এর তেমন কোন সুবিধা বা বাজার দর দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু আরও অনেক আইডিয়া মিলে একে কাজে লাগালে হয়তো এর উপকারিতা দারুণভাবে বৃদ্ধি পাবে। অথবা এই আইডিয়া থেকেই মানুষজন অন্যান্য বহু আইডিয়া চিন্তা করার অবকাশ পাচ্ছে। মনে রাখবেন, পরিবেশ প্রতিকূল হলে মানুষজন অন্যদের আইডিয়াই কপি করে, একই কথা বারবার বলে। এতে কোন কাজের কাজ হয় না। অনেক অফিস ও কোম্পানিতেই এ ধরনের ধরাবাঁধা নিয়মের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হয়, যাতে কোন কাজের কাজ হয় না। এ ধরনের আলাপ-আলোচনায় মন্তব্য থাকে এরকম:

আমি কেন এই কথা বলব, বললেই তো ...

এটা আগেও বলা হয়েছেে

এ নিয়ে আগেও কাজ করা হয়েছে

আমি আইডিয়া শেয়ার করব, আর অন্য কেউ এর কৃতিত্ব নিবে

এই আইডিয়া বলেও লাভ নাই, কারণ বসের মুখ থেকে তো আর এই আইডিয়া আসে নাই (আইডিয়ার চেয়ে এখানে ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে)

বস এটা পছন্দ করবে না


সাধারণত আলাপ-আলোচনায় এ ধরনের বিষয়গুলো ঘটে এবং এই কৌশলগুলো অবলম্বন করলে তা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব:

১। অধিবেশন করার আগে ব্রেইনস্ট্রমিং এর এই নীতি ও যৌক্তিকতাগুলো তুলে ধরতে হবে। ভালো হয় যদি মিটিংয়ের ১০-১৫ মিনিট আগে অংশগ্রহণকারীদের সাথে এই নীতিসমূহের ব্যাপারে কথা বলা যায়।


0000000000000000000000


২। একটি ধারণার প্রবর্তককে নথিভুক্ত করার জন্য একটি সিস্টেম ব্যবহার করা যেমন একটি ধারণা যুক্ত করা

একজন ব্যক্তির সাথে তাদের আদ্যক্ষরগুলি অন্তর্ভুক্ত করে।


মেকানিক্যাল ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ারিং হ্যান্ডবুক এর দ্বিতীয় সংস্করণে আরও বলা হয়,


3) উৎপন্ন ধারণাগুলি মূল্যায়নের জন্য একটি আধা-পরিমাণগত কৌশল ব্যবহার করে, যেমন একটি

মূল্যায়ন ম্যাট্রিক্স।

4) ম্যানেজারের কাছে মস্তিষ্কের চিন্তাভাবনার সুবিধাগুলি ব্যাখ্যা করা এবং সেই ধারণাগুলি ঘটবে

ম্যানেজারের নির্দেশনায় এবং তাই ম্যানেজারের উপর ইতিবাচক প্রতিফলন ঘটবে। 


সাধারণত মস্তিষ্কের সাথে সম্পর্কিত প্রধান নিয়মগুলি হল:

• মস্তিষ্কচর্চা একটি আন্ত activityবিভাগীয় দল দ্বারা পরিচালিত একটি গ্রুপ কার্যকলাপ হওয়া উচিত;

Ten দশজনের বেশি লোক উপস্থিত থাকা উচিত নয়;

Idea কোন ধারণা, বক্তব্য বা ব্যক্তির সমালোচনা বা উপহাস করার অনুমতি নেই;

• ফ্লিপ চার্ট, এর পরে, কার্ড, মার্কার কলম, পেন্সিল এবং কাগজ প্রদান করা উচিত;

Brief নকশা সংক্ষিপ্ত স্পষ্টভাবে বলা উচিত;

Set একটি নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করা উচিত;

সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়ার জন্য একজন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা উচিত।


আইডিইও (2001) এর টম কেলি পরামর্শ দেন যে কার্যকর মস্তিষ্কের সেশনগুলি নেওয়া উচিত নয়

60 থেকে 90 মিনিটের বেশি। আইডিইও সংস্থা নিয়মিতভাবে মস্তিষ্কের ব্যবহার করে

প্রতিটি ব্যক্তি মাসে কয়েকবার জড়িত। ব্রেনস্টর্মিং অনেকের জন্য আইডিয়া ইঞ্জিন

শিল্প এবং 70% এরও বেশি ব্যবসায়িক নেতারা তাদের প্রতিষ্ঠানে এটি ব্যবহার করেন (আর্থার অ্যান্ডারসন

(2004))। একটি উল্লেখযোগ্য প্রমাণ আছে যা দেখায় বিশ্বাসযোগ্য তথ্য প্রদান করে

ভিন্নতা এবং অভিসারের উপর ভিত্তি করে মস্তিষ্কের এবং সৃজনশীল সরঞ্জামগুলির কার্যকারিতা

যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হলে। বুদ্ধিমত্তার কার্যকারিতার প্রমাণ

সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম, তাদের ব্যবহারের কৌশল এবং তাদের জন্য কৌশল

Treffinger et al দ্বারা নির্বাচন এবং বাস্তবায়ন পর্যালোচনা করা হয়। (1994), ইসাকসেন এবং

DeSchryver (2000), Torrence (1972) এবং Rose and Lin (1984)।


শনিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২১

‘কোড অব হাম্মুরাবি’ তথা রাজা হাম্বুরাবির আইনকানুন

রাজা হাম্মুরাবি কঠোর হাতে মেসোপটেমিয়া শাসন করেছেন। তিনি আইন প্রণয়ন ও অপরাধের জন্য শাস্তি নির্ধারণ করেছিলেন। তাঁর আইনগুলো ‘কোড অব হাম্মুরাবি’ নামে পরিচিত। এটি সবচেয়ে পুরোনো লিখিত আইন। ব্যাবিলনের সূর্য দেবতা শামাশের নামে হাম্মুরাবি প্রণীত আইনগুলো পাথরে খোদাই করা ছিল।

পাথরের স্তম্ভে খোদাই করা হাম্মুরাবির আইনগুলো সাম্রাজ্যের নানা জায়গায় জনসাধারণের প্রদর্শনের জন্য ছিল। যদিও এর মধ্যে মাত্র একটাই খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। সেখানে মিলেছে ২৮২টি আইন। বিষয় অনুসারে আইনগুলো নানা শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল। যেমন পারিবারিক বিষয়, বাণিজ্য, ধর্ম ও দাসপ্রথা। জনসাধারণ যদিও পড়তে জানত না, তবু আইনভঙ্গকারীদের দাঁত উপড়ে নেওয়া বা শূলে চড়ানোর মতো শাস্তি ভোগ করতে হতো। আর আইনগুলো শতাব্দীর পর শতাব্দী কাদামাটিতে লিখে আগুনে পুড়িয়ে সংরক্ষণ করা হতো।


রাজা হাম্বুরাবির আইনকানুনের ২৮২টি ধারা:

আইনের ধারা:

১। যদি কেউ অন্যকে ফাঁদে ফেলে, তার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, কিন্তু সে তা প্রমাণ করতে না পারে, তাহলে যে তাকে ফাঁদে ফেলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে।


২। যদি কেউ একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি নদীতে যায়, আর নদীতে ঝাঁপ দেয়, যদি সে নদীতে ডুবে যায় তবে তার অভিযুক্ত তার বাড়ি দখল করবে। কিন্তু নদী যদি প্রমাণ করে যে অভিযুক্ত দোষী নন, এবং তিনি অক্ষত অবস্থায় ফেরত আসতে পারে, তবে যিনি অভিযোগ এনেছিলেন তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে, এবং যে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিল সে তার অভিযুক্তের বাড়ি দখল করবে।


৩। যদি কেউ প্রবীণদের সামনে কোন ব্যক্তিকে ধরে এনে অপরাধের অভিযোগ আনেন এবং তিনি যা অভিযুক্ত করেছেন তা প্রমাণ না করেন, তাহলে অভিযোগকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে যদি আর আনীত মিথ্যা অভিযোগ গুরুতর হয়।


চলবে... 


তথ্যসূত্র: https://www.google.com/amp/s/www.prothomalo.com/amp/story/fun/%25E0%25A6%25AA%25E0%25A7%2583%25E0%25A6%25A5%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25AC%25E0%25A7%2580%25E0%25A6%25B0-%25E0%25A6%25AA%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25B0%25E0%25A6%25A5%25E0%25A6%25AE-%25E0%25A6%25B2%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%2596%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25A4-%25E0%25A6%2586%25E0%25A6%2587%25E0%25A6%25A8-%25E0%25A6%258F%25E0%25A6%25B2-%25E0%25A6%25AF%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25AD%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25AC%25E0%25A7%2587


২। রাজা হাম্বুরাবির ২৮২ আইন সম্পর্কে এখানে আছে: https://avalon.law.yale.edu/ancient/hamframe.asp

সোমবার, ৯ আগস্ট, ২০২১

আপনি কীভাবে আপনার কাস্টমার তথা গ্রাহকদের চিহ্নিত করবেন?

আমি কীভাবে আমার কাস্টমার তথা গ্রাহকদের চিহ্নিত করব?
ছবিসূত্র: GETTY

১। আপনার বর্তমান ক্লায়েন্ট বেস দেখুন।  আন্দাজ করার পরিবর্তে, আপনি বর্তমানে যাদের সাথে কাজ করছেন তাদের খুঁজে বের করার জন্য কিছু সময় নিন।  ...

২। তাদের বর্তমান অভ্যাসগুলো বিবেচনা করুন।  ...

৩। তাদের লক্ষ্যগুলো চিহ্নিত করুন।  ...

৪। তাদের ভয়ভীতি চিহ্নিত করুন।  ...

৫। তারা কীভাবে তাদের পণ্য কেনার সিদ্ধান্ত নেয় তা চিহ্নিত করুন।  ...

৬। নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন আপনি কার সাথে কাজ করতে চান।  ...

৭। তাদের কী কী দরকার?

পারিব না এ কথাটি বলিব না আর

অনুপ্রেরণার ৩৬৫ দিন,

২২২তম দিন,
৯ আগস্ট:

আমরা সবচেয়ে বেশি প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হই ‘আমরা পারব না’ - এই চিন্তা দ্বারা। - মার্ক টোয়েন


যত ধরনের মহান অর্জন আছে সবকিছুই সংগ্রাম করে অর্জন করতে হয়েছে। অনেক চেষ্টা, অধ্যবসায় ও সংগ্রাম থেকেই মহান সব কৃতিত্বসম্পন্ন কাজের জন্ম ঘটেছে। - নেপোলিয়ন হিল


তথ্যসূত্র: 365 days of inspiration

রবিবার, ৮ আগস্ট, ২০২১

অনুপ্রেরণার ৩৬৫ দিন

অনুপ্রেরণার ৩৬৫ দিন,

২২১তম দিন,
৮ আগস্ট:

আপনি যতগুলো চিন্তা প্রকাশ করেন তার সবই আপনার চরিত্রের একটি চিরস্থায়ী অংশ হিসাবে থেকে যায়। - নেপোলিয়ন হিল

ছবিসূত্র: https://www.health.harvard.edu/blog/five-healthy-habits-net-more-healthy-years-2020021918907

ধনীরা ধনী হয় তাদের মনমস্তিষ্কে যা কিছু আছে তার পূর্ণ ব্যবহার করে। যারা তাদের মনমস্তিষ্ককে ব্যবহার করতে পারে তারা আর্শীবাদপুষ্ট। আর যারা তা পারে না তারা অভিশপ্ত। - টেরেন্স


তথ্যসূত্র: 365 days of inspiration

শনিবার, ৭ আগস্ট, ২০২১

হোয়াই নেশনস ফেইল তথা কোনো জাতি কেন উন্নতি করে আর কেউ কেন তা করে না?

কোনো জাতি কেন উন্নতি করে আর কেউ কেন তা করে না?

লিখেছেন: জিয়া হাসান,

জিডিপির প্রবৃদ্ধি হলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এই তত্ত্বে যাঁরা আস্থা রাখেন না তাঁদের জন্যে দুটি মৌলিক বই হচ্ছে এমআইটির অধ্যাপক ড্যারন আসেমেগলু আর জেমস রবিন্সনের ‘হোয়াই নেশনস ফেইল’ এবং রুচির শর্মার ‘রাইজ অ্যান্ড ফল অফ নেশনস’।

বই দুইটির মধ্যে রাইজ অ্যান্ড ফল অফ নেশনস-এ রুচির শর্মা দেখিয়েছেন অর্থনীতির অন্য সূচকগুলোকে আমলে না নিয়ে শুধু জিডিপির প্রবৃদ্ধি নিয়ে অতিরিক্ত উচ্ছ্বাস বিপজ্জনক।

তাঁর চমৎকার একটা তত্ত্ব হলো, যে রাষ্ট্রগুলো উন্নয়নের জন্যে প্রশংসিত হয়ে আন্তর্জাতিক শিরোনাম হয়, সেই রাষ্ট্রগুলো পরবর্তী বছরগুলোতে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল।

অন্যদিকে হোয়াই নেশনস ফেইলে ডারেন আসেমেগলু বলেছেনে, রাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের অনেকগুলো তত্ত্ব আছে। যেমন ভৌগোলিক তত্ত্ব, ধর্ম-বিষয়ক তত্ত্ব, সাংস্কৃতিক তত্ত্ব, অজ্ঞতা তত্ত্ব, পুঁজিবাদ বনাম সাম্যবাদ তত্ত্ব।

তুর্কি অধ্যাপক আসেমেগলু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদাহরণ দিয়ে দেখান, ওপরের কোনো তত্ত্বই এককভাবে উন্নয়নের কারণ হতে পারে না। আসেমেগলুর মতে, প্রধান যে কারণকে প্রতিটা ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রতিটা রাষ্ট্রের উন্নয়ন বা অবনমনের কারণ হিসেবে দেখানো যেতে পারে, তা হচ্ছে ইন্টেগ্রেটেড ইনস্টিটিউশন বা সমন্বিত প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর সক্ষমতা বা অভাব।

তাঁর মতে, যখন রাষ্ট্রের প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো সক্ষম হয় এবং তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নাগরিকসংশ্লিষ্টতা থাকে ঠিক তখনই কোনো সমাজ বা রাষ্ট্র দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের ধারায় পা দিতে পারে। কারণ, একমাত্র সমন্বিত প্রতিষ্ঠানগুলোই রাজনীতিবিদ বা আমলাদের হাতে রাষ্ট্রীয় সম্পদের লুণ্ঠন ঠেকাতে পারে।

তাঁর মতে, একমাত্র স্বনির্ভর সমন্বিত প্রতিষ্ঠানই নাগরিকের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা, বিচারব্যবস্থাসহ সবকিছুতেই অধিকার এবং সুসম সুযোগ নিশ্চিত করতে পারে। যার ফলে অসম প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শুধু কিছু এলিটের হাতে সম্পদ পুঞ্জিভূত হতে পারে না বা নাগরিক অধিকার নির্দিষ্ট কিছু এলিটের ইচ্ছায় কুক্ষিগত হয় না। এতে দীর্ঘ মেয়াদে হলেও অর্থনীতিতে একটা সমতা তৈরি হয় কিংবা মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটে।
আসেমেগলুর মতে, সমন্বিত প্রতিষ্ঠানের অপর প্রান্তে রয়েছে কর্তৃত্ববাদী এবং শোষণমুখী প্রতিষ্ঠান, যেখানে অল্প কিছু ক্ষমতাশীলের জন্যে প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের অধিকার ও সম্পদ কেড়ে নিতে থাকে এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াতে নাগরিকের কোনো অংশগ্রহণের সুযোগ থাকে না।

তিনি দেখিয়েছেন, আফ্রিকার অনেক দেশে এখন আর সাদাদের রাজত্ব না থাকলেও অল্প কিছু ক্ষমতাশীল ব্যক্তি রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে সম্পদ লুটে নিচ্ছে—যাদের কারও গায়ের রংই সাদা নয়।
তিনি দেখিয়েছেন, এই ধরনের লুটেরা প্রতিষ্ঠানময় দেশগুলো দুষ্টচক্রে আবর্তিত হয়। কিছু এলিট তাদের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে রাষ্ট্রকে লুট করে সম্পদশালী হয়ে ওঠে। পরবর্তী সময়ে এই লুণ্ঠিত সম্পদ ব্যবহার করে কিছু সুনির্দিষ্ট গ্রুপকে প্রমোশন, কন্ট্রাক্ট, ক্ষমতা, দুর্নীতি ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা দিতে থাকে অথবা অস্ত্রের জোরে যেকোনো মূল্যে তাদের রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখে।

ফলে মুক্ত সমাজ, সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র এবং উদ্যোক্তা অর্থনীতি তৈরির সব সক্ষমতা এরা বিনষ্ট করে।

ইতিহাস থেকে দেখা যায়, যেসব দেশে এই ধরনের এক্সপ্লয়েটিভ বা লুটেরা প্রতিষ্ঠান প্রাধান্য বিস্তার করে সেখানে কোনো সাময়িক বিপ্লব বা পরিবর্তন এলেও, এই লুটেরা প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের ইচ্ছাকে চাপিয়ে রেখে পুনরায় লুণ্ঠনের সংস্কৃতি চালু করে। ফলে, এই ধরনের লুটেরা প্রতিষ্ঠানের দেশে জনগণের সম্পদের লুণ্ঠন দুষ্টচক্রের মতো বারবার ফিরে আসে।
আসেমেগলুর মতে, এ ধরনের দেশ নিজস্ব সম্পদ যেমন খনিজ, অথবা শ্রমসম্পদ অথবা কৃষিকে ব্যবহার করে আপাত কিছু উন্নয়ন সম্ভব। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন ধরে রাখতে যে সৃষ্টিশীলতা এবং প্রাযুক্তিক পরিবর্তন দরকার, তা কোনোমতেই এ ধরনের দেশে অর্জিত হয় না। ফলে আপাত উন্নয়ন এবং প্রবৃদ্ধি অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই থমকে দাঁড়ায়।

কারণ, এলিটরা এই সৃষ্টিশীলতা এবং প্রযুক্তির পরিবর্তনকে ঠেকিয়ে রাখে। পরিবর্তনের ধাক্কায় এলিটদের পুঁজি ও ক্ষমতা বিপর্যস্ত হতে পারে যা তারা কোনোমতেই হতে দেয় না। আসেমেগলুর এই ধারণার প্রমাণ পাই আমরা মার্ক্সবাদী অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্কাম্পিটারের ক্রিয়েটিভ ডিসট্রাকশন বা সৃষ্টিশীল ধ্বংসতত্ত্বে। তিনি বলেছেন, অর্থনীতিতে প্রযুক্তির পরিবর্তন অথবা নতুন আইডিয়ার আবির্ভাবে পুরাতন বিজনেস মডেলে আঘাত আসে, যার ফলে বিদ্যমান অর্থনৈতিক কাঠামোয় আঘাত হানলেও তা পরবর্তী সময়ে উন্নয়নে গতি আনতে পারে। আসেমেগলু বলেন, প্রথাগত এলিটরা নিজের ক্ষমতা এবং সম্পদ টিকিয়ে রাখার জন্যে এই সৃষ্টিশীল ধ্বংসের পথ বন্ধ করে রাখে।

আসেমগলুর মতে, এই ধরনের কর্তৃত্বপরায়ণ রাষ্ট্রে দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন কখনোই সম্ভব হয় না। কারণ, এই রাষ্ট্র উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং পরিবর্তনের জন্যে উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দেয় না। ক্ষমতা ধরে রাখার জন্যে কেন্দ্রমুখী পরিকল্পনার মাধ্যমে কিছু উদ্ভাবনের আশ্রয় নিলেও পরিকল্পনার জটিলতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক অক্ষমতার কারণে সেগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। খুব মোটাদাগে এই কথাগুলোকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ব্যাপকভাবে ব্যাখ্যা করার সুযোগ আছে, এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিমতের সুযোগও আছে।

কিন্তু এটা পরিষ্কার, জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের যে বাধাগুলোর কথা আসেমেগলু বলেছেন তার সব ক্রমাগতই বাংলাদেশে স্পষ্ট হচ্ছে। এখন ব্যাংক, প্রশাসন, পুলিশ, ব্যবসা, শ্রমিক অধিকার, ধর্ম, বিচার ব্যবস্থা, সংস্কৃতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মিডিয়া, আন্তর্জাতিক সম্পর্কসহ সব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতাকে ভেঙে এমনভাবে সবকিছু হস্তগত করা হচ্ছে, যেন আগামীকালই পৃথিবীর শেষ দিন।

জনগণের মধ্যে আস্থা তৈরি করতে দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের নীতির বদলে কিছু গোষ্ঠীকে তুষ্ট করাই সরকারের প্রধান নীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে কী হয়েছে তা আমরা নিয়ত টের পাচ্ছি। প্রবাসী ও পোশাকশ্রমিকের ঘামে-রক্তের বিনিময়ে ফুলে ওঠা রিজার্ভ, নিত্য নতুন ট্যাক্স বসিয়ে বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাসের দাম দফায় দফায় বাড়িয়ে রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং সঞ্চয়পত্র থেকে অস্বাভাবিক পরিমাণ ঋণ নিয়ে সরকারের খরচ চালানো হচ্ছে। পৃথিবীর সর্বোচ্চ মূল্যে তৈরি কিছু সেতু, রাস্তা ও উড়ালসড়ককেই বলা হচ্ছে উন্নয়ন। কিন্ত জীবনযাত্রায়, নাগরিক সুবিধাতে, চিকিৎসা বা শিক্ষা ব্যবস্থায় ক্রমাগতভাবে জনগণকে নাজেহাল হতে হচ্ছে।

মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সেই বাস্তবতাকে লুকিয়ে একটা হীরক রাজার দেশের পরাবাস্তব উন্নয়ন বুদ্‌বুদ তৈরি করা হচ্ছে। এই ছলনা থেকে মুক্তি পেতে অর্থনৈতিক সুযোগের সন্ধানে পালানো যুবকদের ঠাই হচ্ছে ভূমধ্যসাগরে আর মালয়েশিয়ার গণকবরে। আসেমেগলুর তত্ত্বকে আমলে নিলে এর পূর্ণ দায় আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা এবং কর্তৃত্বপরায়ণ রাষ্ট্রের ওপরেই পড়ে।

প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে শাসন চালিয়ে যাওয়া বিএনপি, আওয়ামী লীগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ সব আমলেই ছিল। অন্যদিকে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরির জন্যে রাজনীতিবিদ এবং আমলাদের ওপরে সব সময়েই সিভিল সোসাইটি এবং বৃহত্তর সমাজের চাপ ছিল। কিন্তু কে শোনে কার কথা?

এমআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক ডারেন আসেমেগলুর হোয়াই নেশনস ফেইল বইটা আজকে তাই আমাদের পরিষ্কার সংকেত দিচ্ছে। জিডিপির প্রবৃদ্ধি যে ধারাই থাকুক না কেন লুটেরা প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশকে অনিবার্যভাবে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে বা করবে। বীজগণিতের সূত্রের মতো লিখে দেওয়া এই নিয়তি কি কেউ ঠেকাতে পারবে? সেটাই সামনের প্রশ্ন।
জিয়া হাসান: রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

তথ্যসূত্র: https://www.prothomalo.com/opinion/%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A7%8B-%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%89%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A6%BF-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%86%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%89-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%A4%E0%A6%BE-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A6%BE

অনুপ্রেরণার ৩৬৫ দিন

অনুপ্রেরণার ৩৬৫ দিন,
২২০তম দিন,
৭ আগস্ট:

আমাদের মনমস্তিষ্ক হচ্ছে যন্ত্রপাতির মতো, ফেলে রাখলে জং ধরে যায়। - নেপোলিয়ন হিল




যখন মরার সময় আসবে তখন যেন এ উপলব্ধি না হয় যে আমরা যথাযথভাবে বেঁচে থাকার আনন্দ উপলব্ধি করতে পারিনি। - হেনরি ডেভিড থোরো

তথ্যসূত্র: 365 days of inspiration

বৃহস্পতিবার, ৫ আগস্ট, ২০২১

প্রত্যাশা নয়, আপনার কাছে যখন আশা থাকে তখন জীবনটাই আনন্দময় হয়ে ওঠে


আশা হচ্ছে এমন কিছু যা আপনি ঘটুক বলে আকাঙ্ক্ষা বা ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু প্রত্যাশা জিনিসটা এমন নয়। প্রত্যাশা বলতে বোঝায় এমন কিছু ঘটতে পারে যা আপনার মনে হয় ঘটবে, কিন্তু তা ঘটুক আপনি চান না। এটা কিছুটা নেতিবাচক। তবে আশা ইতিবাচক। তাই আশা করুন। ২০০৮ সালে নির্মিত স্লামডগ মিলিয়নিয়ারের চলচ্চিত্র পরিচালক ড্যানি বয়েল (১৯৫৬-) যেমন বলেছেন,

প্রত্যাশা নয়, আপনার কাছে যখন আশা থাকে তখন জীবনটাই আনন্দময় হয়ে ওঠে।


আশা নিয়ে বাঁচতে হলে আপনার আশেপাশে দরকার আশাবাদী মানুষ। আর তারা যদি আপনার বন্ধু হয় তবে তো সোনায় সোহাগা। প্রাণের বন্ধু খোঁজার পরামর্শ দিয়েছেন খ্যাতিমান লেখক মার্ক টোয়েন (১৮৩৫-১৯১০)। তিনি বলেন,

বন্ধুর জন্য মারা যাওয়াটা সমস্যা না, সমস্যা হচ্ছে এমন একজন বন্ধু খুঁজে পাওয়া যার জন্য মরাও উত্তম।


তাই এমন বন্ধু নিয়ে বাঁচুন যার মধ্যে আনন্দ নিয়ে বাঁচার আশা আছে, চেষ্টা আছে। তাকে সঙ্গে নিয়ে জীবনকে উপভোগ করুন। জীবনের ছোটোখাটো বিষাদ ভুলে যান। ছোটোখাটো আনন্দ নিয়ে জীবনকে ভরিয়ে তুলুন। এ ব্যাপারে বরি অর (১৯৪৮-) বলেন,

কীভাবে জীবন কাটাচ্ছেন বা কাজ করছেন তার স্টাইল বা ধরন ভুলে যান; সবসময় ফলাফল নিয়ে চিন্তা করুন।

সোমবার, ২ আগস্ট, ২০২১

হোয়াই নেশনস ফেইল বইয়ের সারমর্ম

Why Nations Fail: A Summary



হোয়াই নেশনস ফেইল বইয়ের বাংলা সারমর্ম:

বইয়ের সংক্ষিপ্তসার…

উন্নত দেশগুলো 'অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের' কারণে ধনী - মূলত রাজ্য এবং মুক্ত বাজারের সংমিশ্রণ যেখানে:

১। রাষ্ট্র ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকারের নিশ্চয়তা দেয় এবং চুক্তি আইন প্রয়োগের মাধ্যমে জনগণকে বিনিয়োগ ও উদ্ভাবনের জন্য উৎসাহ প্রদান করে।

২। শিক্ষা ও অবকাঠামো প্রদানের মাধ্যমে রাজ্যের বিনিয়োগ ও বৃদ্ধি সক্ষম করে।

৩। রাষ্ট্র একটি ছোট অভিজাতদের দ্বারা একচেটিয়া হওয়ার পরিবর্তে তার নাগরিকদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।  গুরুত্বপূর্ণভাবে, কর্মক্ষেত্রে একটি গণতান্ত্রিক নীতি থাকা দরকার যেখানে রাজনীতিতে মানুষ এমন প্রতিষ্ঠান ও আইন প্রতিষ্ঠা করে যা সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জন্য কাজ করে, কেবল ধনীদের উপকারের জন্য কাজ না করে।

৪। রাষ্ট্রকেও সহিংসতা তথা সন্ত্রাসের ওপর একচেটিয়া অবস্থান বজায় রাখতে হবে।

যেসব দেশ উন্নয়নের জন্য 'অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান' গড়ে তোলে, দেশের উন্নয়নে তারা উৎসাহ দেয়। 'অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান' হচ্ছে জনগণের অংশগ্রহণমূলক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান। এতে করে উন্নত দেশসমূহ তাদের দেশের জনগণকে অন্তর্ভুক্তমূলক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়। এর বিপরীতে, লেখকরা উলটা 'এক্সট্রাক্টিভ ইকোনমিক ইনস্টিটিউশন তথা শোষণমূলক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান'। এক্ষেত্রে লেখকরা বলেন, দুর্নীতিবাজ স্বৈরশাসক এবং তার চক্র সুইস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা রাখার মাধ্যমে মনে করে তারা উন্নত হচ্ছে। আসলে তা নয়। লেখকরা বলেন এতে করে দেশের উন্নতি স্বল্পমেয়াদে বৃদ্ধি হতে পারে,  কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে দারিদ্র্য দেখা দিবে।

লেখকরা আরও পরামর্শ দেন যে গত তিন থেকে চার শতাব্দীতে অনেক অনুন্নত দেশে কাজ করার জন্য 'একটি দুষ্ট চক্র' রয়েছে। এগুলোকেই লেখকরা উচ্চবিত্ত শ্রেণী দ্বারা গঠিত শোষণমূলক প্রতিষ্ঠান বলেছেন। এসব শোষণমূলক প্রতিষ্ঠান প্রথমে ঔপনিবেশিক শক্তি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল (সাধারণত ইতোমধ্যে বিদ্যমান অভ্যন্তরীণ শোষণমূলক প্রতিষ্ঠানের উপর নির্মিত)। যা স্বাধীনতার পর আরও বেশি শোষণমূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। এতে করে, দেশের অভ্যন্তরে গৃহযুদ্ধ শুরু হয় এসব শোষণমূলক প্রতিষ্ঠানের ওপর কর্তৃত্বের ক্ষমতা নেয়ার জন্য। এতে করে, দেশটি বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়ে এবং একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়। লেখকরা এই ধরনের দেশের জন্য খুব অল্পই আশা দেখতে পান।

এর বিপরীতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো তিন থেকে চার শতাব্দী ধরে ‘গুণী চক্র’ দ্বারা শাসিত। এটাকে লেখকরা বলেন, জনগণের অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বা অন্তর্ভুক্তমূলক প্রতিষ্ঠান। যেখানে অনেক বেশি জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে করে ক্রমান্বয়ে সেসব দেশে উদ্যোক্তা ও অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার জন্য প্রণোদনা তৈরি করেছে।


যেসব দেশ একে অপরের সাথে ভৌগোলিকভাবে নিকটে রয়েছে সেসব দেশের তুলনামূলক গবেষণার মাধ্যমে লেখকরা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন:

 মেক্সিকো/ আমেরিকা

 দক্ষিণ/ উত্তর কোরিয়া

 বতসোয়ানা/ জিম্বাবুয়ে

 তারা যুক্তি দেন যে এই জোড়া দেশগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হল প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো যা গত কয়েক দশক/ শতাব্দীর মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এটাই তাদের আপেক্ষিক উন্নয়ন/ অনুন্নততার ব্যাখ্যা দেয়।

 বইটির সারমর্ম এর ভূমিকা এবং প্রথম অধ্যায়ে নিবিড়ভাবে তুলে ধরা হয়েছে।


হোয়াই নেশনস ফেইল তথা কেন জাতি ব্যর্থ হয়: ভূমিকা

মিশরের মতো দেশগুলো দরিদ্র কারণ তারা একটি সংকীর্ণ অভিজাত শ্রেণীর দ্বারা শাসিত হয়েছে। যারা বিশাল জনগোষ্ঠীর ব্যয়ে নিজেদের সুবিধার জন্য সমাজকে সংগঠিত করেছে। (এটা উত্তর কোরিয়া, সিয়েরা লিওন, জিম্বাবুয়ের জন্যও প্রযোজ্য)

এর বিপরীতে গ্রেট ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলো ধনী, কারণ তাদের নাগরিকরা ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণকারী অভিজাতদের উৎখাত করেছিল এবং এমন একটি সমাজ তৈরি করেছিল যেখানে রাজনৈতিক অধিকারগুলো আরও বিস্তৃতভাবে বিতরণ করা হয়েছিল, যেখানে সরকার তার নাগরিকদের কাছে দায়বদ্ধ এবং দায়িত্বশীল ছিল, যেখানে বিপুল জনগণ অর্থনৈতিক সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারে। (এটা জাপান এবং বতসোয়ানার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য)

প্রথম অধ্যায় - এত কাছাকাছি, তবুও কত ভিন্নতা

প্রথম অধ্যায়ের আলোচনা আরম্ভ হয় নোগলেসের দুই দিকের তুলনার মাধ্যমে। যার অর্ধেক রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এরিজোনায়, আর বাকি অর্ধেক রয়েছে মেক্সিকোতে।


এরিজোনার অর্ধেকের বেশি মানুষের গড় আয় $30,000 তথা ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, প্রাপ্তবয়স্কদের অধিকাংশই হাইস্কুল পাশ, রাস্তাঘাট পাকা, আইন -শৃঙ্খলা আছে, অধিকাংশ মানুষ ৬৫ বছরের বেশি সময় পর্যন্ত জীবিত থাকে। অথচ দক্ষিণ দিকের (যে অংশ ম্যাক্সিকোতে পড়েছে) অর্ধেকের বেশি মানুষের গড় আয় তিনগুণ কম। আর অন্যান্য সবকিছু একইভাবে খারাপ।

লেখকরা উল্লেখ করেছেন যে এই পার্থক্য কেবল পরিবেশ বা সংস্কৃতির কারণে হতে পারে না। এটা অবশ্যই রাজনীতি এবং অর্থনৈতিক সুযোগের কারণে হতে পারে।

তারা আরও যুক্তি দেয় যে পার্থক্যটি বোঝার জন্য, আপনাকে ১৬ এবং ১৭ শতকের প্রথম দিকে উপনিবেশবাদের দিকে ফিরে যেতে হবে।

মেক্সিকোই প্রথম দাসত্ব এবং শোষণমূলক প্রতিষ্ঠান ও ব্যবস্থার অধীনে উপনিবেশিত হয়েছিল। ১৫ শতাব্দীতে, স্প্যানিশরা মূলত তাদের নিজেদের সুবিধার জন্য ইতোমধ্যে বিদ্যমান দাস পদ্ধতি ব্যবহার করে এবং স্বর্ণ ও রৌপ্যের পাহাড় উত্তোলন করে, যা এলিট-শাসনের উত্তরাধিকার এবং সংখ্যাগরিষ্ঠদের জন্য রাজনৈতিক অধিকারের অভাব রেখে যায়।

এলিট-শাসনের উত্তরাধিকার বলতে ধনী পরিবারের লোকজনই কেবল শাসন করবে। যেমন, বাবা যদি ধনী পরিবারের হয়, তবে তারপর তার ছেলে বা বউ ঐ অঞ্চল শাসন করবে। এতে করে জনগণের অধিকার ক্ষুণ্ন হয়। জনগণ মেধার ভিত্তিতে শাসক পায় না; বরং উত্তরাধিকার সূত্রে ধনী পরিবারের হাতে বন্দি হয়ে পড়ে।

উত্তর আমেরিকা, মূলত ইংরেজদের দ্বারা ১০০ বছর পরে বসতি স্থাপন বা উপনিবেশ করা। উত্তর আমেরিকার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মধ্যে দাসত্বের অনুপস্থিতি ছিল এবং জনসংখ্যার কম ঘনত্বের কারণে দাস প্রথাগুলো কাজ করছিল না। যদিও ইংরেজরা তাদের শুরুর দিকের উপনিবেশ করতে গিয়ে প্রথম বিশ বছর বা তার কিছু বেশি সময় দাস প্রথা চালানোর চেষ্টা করে। অবশেষে, ইংল্যান্ডে ফিরে এল উপনিবেশ স্থাপনকারী কোম্পনি (দ্য ভার্জিনিয়া কোম্পানি)। কোম্পানি বুঝতে পারল যে উপনিবেশবাদ কাজ করার একমাত্র উপায় হচ্ছে বসতি স্থাপনকারীদের জন্য প্রণোদনা প্রদান করা - তাই তারা কাজের বিনিময়ে তাদের জমি প্রদান করে। এটাই পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সংবিধান এবং কংগ্রেসের ভিত্তি স্থাপন করেছিল, যা তখনকার দিনের ইংরেজ সরকারের জন্য সমস্যা তৈরি করেছিল।

বাকি অধ্যায় যুক্তি দেখায় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেন এখন এত ধনী এবং কেন লাতিন আমেরিকার (আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, ব্রাজিল, চিলি, মেক্সিকো প্রভৃতি) বেশিরভাগ দেশ এত দরিদ্র তা বোঝার জন্য পরবর্তী ৩০০ বছরের ইতিহাস অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

আমেরিকার ৩০০ বছরের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রয়েছে, যেখানে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কমপক্ষে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করে (লেখকরা উদাহরণস্বরূপ মাইক্রোসফটের একচেটিয়া ব্যবসা ভাঙার কথা উল্লেখ করেছেন) ব্যাপকভাবে তাদের (জনগণের) প্রত্যেকের জন্য কাজ করে। পেটেন্ট সিস্টেম তথা মেধাস্বত্ত্ব ব্যবস্থা, ক্রেডিট সিস্টেম তথা ঋণ ব্যবস্থা, এবং শিক্ষার মতো অন্যান্য বিষয়গুলো যে কেউ এটাকে সমৃদ্ধ করার সুযোগ দেয় এবং সম্পদের সুবিধা ভোগ করে।

লাতিন আমেরিকা (মেক্সিকো) এর বিপরীতে, ১৯৯০ এর দশক পর্যন্ত বেশিরভাগ দেশ রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং একশ্রেণির স্বৈরশাসন দেখেছিল যেখানে ছোট এলিটদের একটি ধারাবাহিক ব্যবস্থা তাদের নিজস্ব সুবিধার জন্য শাসন করেছিল। এই অস্থিতিশীলতা একচেটিয়া শক্তির উত্থানের দিকে পরিচালিত করে। এরকম অবস্থার সুযোগ নিয়ে যেকেউ চেষ্টা করে ধনী হতে পারে যতক্ষণ পর্যন্ত না পরবর্তী স্বৈরশাসক আপনার সমস্ত অর্থ নিয়ে যায়। যাই হোক, অর্থ এবং শিক্ষার অভাব প্রতিযোগিতাকে বাধা দেয়।

গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে, ঐতিহাসিকভাবে একটি দেশ কেন সৌভাগ্যবান এবং ধনী তা ব্যাখ্যা করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এতে করে সহজেই বোঝা যাবে বর্তমানে দরিদ্র দেশগুলো কীভাবে বিকশিত হতে পারে। যদিও তা সহজ নয়, কারণ একটি দেশের সংস্কৃতি যদি হয় একচেটিয়া ব্যবসা, দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক অধিকারের অভাব।

তৃতীয় অধ্যায় - সমৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য তৈরি করা

এ অধ্যায়ে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ৩৮ তম প্যারালাল (38th parallel) দ্বারা ভাগ করা হয়। ১৯৪০ সালের দিকে তাদের উন্নতি হয়তো একই পর্যায়ে ছিল, কিন্তু আজ তা আকাশ-পাতাল তফাত। যাই হোক, তাদের অর্থেনৈতিক অবস্থার বিস্তর পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার জীবনযাত্রার মান উত্তর কোরিয়ার চেয়ে ১০ ‍গুণ বেশি। দক্ষিণ কোরিয়ার জীবনমান পর্তুগালের মতো। আর উত্তর কোরিয়ার জীবনমান আফ্রিকার উপ-সাহারার দেশগুলোর মতো। উত্তর কোরিয়ার লোকজন দক্ষিণ কোরিয়ার লোকজনের চেয়ে ১০ বছর কম বাঁচে।




এই দুইটি দেশের মধ্যকার তফাতকে ইনস্টিটিউশন তথা প্রাতিষ্ঠানিক পার্থক্য ছাড়া আর কিছু দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায় না।

দক্ষিণ কোরিয়াতে, বেসরকারি সম্পত্তি এবং বাজার নির্মাণের জন্য উৎসাহিত করা হয় (যদিও প্রথম দিকে স্বৈরশাসক দ্বারা দেশটি শাসিত ছিল)। এভাবে বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করা হয়। একই সময় সরকার শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ করে। এর ফলে নতুন নতুন কলকারখানা শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর সুযোগ-সুবিধা নিতে সক্ষম হয়।

অপরপক্ষে, উত্তর কোরিয়াতে বেসরকারি সম্পত্তি এভং বাজার নির্মাণ করা নিষিদ্ধ। আর সরকার থেকে একটি কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক পরিকল্পনা আরোপ করা হয়। এটা সরাসরি দেশের মধ্যে স্থবিরতা তৈরি করে।


এক্সট্রাক্টিভ এবং ইনক্লুসিভ ইনস্টিটিউশন

বিভিন্ন দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সাফল্যের যে পার্থক্য বিদ্যমান তার কারণ তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান - এসব প্রতিষ্ঠানের আইনকানুন দেশের অর্থনৈতিক গতিপ্রকৃতিকে প্রভাবিত করে এবং জনগণকে উৎসাহ দেয়। এ আইনকানুনের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে বেসরকারি সম্পত্তির অধিকার - যে অধিকারকে রাষ্ট্র আইন দ্বারা সমর্থন দেয়। দক্ষিণ কোরিয়াতে, লোকজন জানে তারা তাদের প্রচেষ্টার পুরস্কার পাবে। কিন্তু এর বিপরীতে উত্তর কোরিয়াতে, এ ধরনের ব্যক্তি উদ্যোগের জন্য কোন প্রণোদনা বা উৎসাহ দেওয়ার মতো আইন বা নীতি নেই। মানুষ নতুন কিছু উদ্ভাবন করবে না, নতুন কিছুতে বিনিয়োগ করবে না, কারণ রাষ্ট্র তাদের এমন উদ্যোগের সুবিধা ভোগ করবে। তাদের কাছ থেকে তাদের প্রচেষ্টার ফসল ছিনিয়ে নিবে। এখানে রাষ্ট্র বলতে মূলত রাষ্ট্রের অল্প সংখ্যক এলিট বা উচ্চবিত্ত শ্রেণিকে বোঝানো হয়েছে।

একটি সমাজকে উন্নত হতে হলে সেখানে ‘ইক্লুসিভ তথা জনগণের অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বা অন্তর্ভুক্তমূলক প্রতিষ্ঠান’ দরকার - এমন এক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে যাতে অধিক সংখ্যক মানুষের উন্নতি ঘটে - 






























এক্সট্রাক্টিভ ইকোনমিক ইনস্টিটিউশন তথা শোষণমূলক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান

জনগণের অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান বা অন্তর্ভুক্তমূলক প্রতিষ্ঠান