বুধবার, ৯ জুন, ২০২১

ওপেন-ইন্ডেড (Open-ended) প্রশ্ন কী?

ওপেন-ইন্ডেড (open-ended) প্রশ্ন হচ্ছে এমন প্রশ্ন যার উত্তর সরাসরি 'হ্যাঁ' বা 'না' তে দেয়া সম্ভব নয়। এতে করে আপনার নিজের আগে থেকে অনুমান করে রাখা উত্তর 'না' দেখে গ্রাহকের কাছে জানা, গ্রাহকের ব্যাখ্যা শোনা যায়।

ওপেন-ইন্ডেড (open-ended) প্রশ্নের উদাহরণ:

আপনি আপনার ভবিষ্যতকে কেমন দেখেন?

আমি কীভাবে জানব যে আমার অনুবাদকৃত বই পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন?

ওপেন-ইন্ডেড (open-ended) প্রশ্ন শুরু হয় কেন? (Why) কীভাবে? (How) এমন যদি হতো? (What if) দিয়ে।

ওপেন-ইন্ডেড (open-ended) প্রশ্নকে আমরা বলতে পারি 'কী' প্রশ্ন। আর ক্লোজড-ইন্ডেড (closed-ended) প্রশ্নকে আমরা বলতে পারি 'কি' প্রশ্ন।

বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান থেকে উদ্ধৃত করা হলো:

কী - অব্য. বিস্ময়সূচক পদ (কী আশ্চর্য!)। সর্ব. কোন বস্তু (কী চাও?)। বিণ. কেমন (কী করে?)। তুল. কি (পৃ ৩০৫)

কি - অব্য. ১ সংশয়সূচক প্রশ্নবাচক শব্দ যার উত্তর 'হ্যাঁ' কিংবা 'না' (সে কি আসবে?)। ২ অথবা (ছেলে কি মেয়ে কেউ একজন)। তুল. কী (পৃ ৩০৮)

মঙ্গলবার, ১ জুন, ২০২১

অক্সফোর্ড ইউনিয়নে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের চুম্বক অংশ।

 


অক্সফোর্ড ইউনিয়নে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের চুম্বক অংশ।

১। আজকের তরুণরা ইতিহাসের যেকোনো প্রজন্মের চেয়ে বেশি সম্ভাবনাময় এবং শক্তিশালী।

২। আজকের তরুণদের হাতে প্রযুক্তি আছে, এমন এমন প্রযুক্তি আছে যেগুলো দিয়ে তারা মহামানবের মতো কাজ করতে পারে, নানান সমস্যার সমাধান করতে পারে।

৩। আমি এমন এক দেশ থেকে এসেছি যেখানে কেবল হতাশা আর হতাশা। যেন কিছুই করার নেই। মানুষ দুর্ভিক্ষের কারণে হতাহত, মৃত্যুপ্রায়, কিন্তু আমি যেন কিছুই করতে পারছি না। এমন হতাশা থেকে আমি আমার বিশ^বিদ্যালয়ের বাইরে গ্রামে গিয়ে মানুষের সাথে কথা বলেছি। মানুষের সমস্যা সম্পর্কে জেনেছি।

৪। আমি দেখলাম, ঋণদাতারা মানুষকে ছোট ছোট অংকের অর্থ দিয়ে, সুদের নাম করে মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করছে। চিন্তা করলাম, কী করব? কী করা যায়? কীভাবে এ সমস্যার সমাধান করা যায়?

৫। এ সমস্যা হয়তো সারা পৃথিবীর সমস্যা। কিন্তু আমি সবার সমস্যা দূর করতে পারব না। কিন্তু আমি এই গ্রামের, এই কয়েকজন মানুষের সমস্যার দূর করতে পারি। কীভাবে?

৬। আমি তাদেরকে ঋণ দিতে পারি। ছোট করে ঋণ দিয়েছি। সমস্যার ছোট একটা সমাধান দিয়েছি। এক-দুইজন করে আরম্ভ করেছি। তারপর যখন অনেক মানুষ ঋণ নিতে এসেছে, তখন ব্যাংকের সাথে আলাপ করেছি।

৭। এভাবে আমি এখন যখনই কোনো সমস্যা দেখি, আমি সেই সমস্যা সমাধানে একটি ব্যবসায়িক মডেল (business model) তৈরি করি, যাতে করে ব্যবসা করার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করা যায়।

৮। এখন এটা আমার জন্য একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আমি যখনই কোনো সমস্যা দেখি, আমি সেই সমস্যা সমাধানে একটি ব্যবসায়িক মডেল (business model) তৈরি করি, যাতে করে ব্যবসা করার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করা যায়।

৯। আমাদের গ্রামীণ ব্যাংক সদস্যদের পরিবারের সন্তানরা স্কুলে যেত না। আমাদের লক্ষ্য ছিল প্রথম প্রজন্ম অশিক্ষিত হয়েছে, কিন্তু দ্বিতীয় প্রজন্মকে অবশ্যই শিক্ষিত হতে হবে। আমরা তাদেরকে শিক্ষা অর্জনে সহযোগিতা করেছি।

১০। তারপর এসব শিক্ষিত তরুণরা চাকরির খোঁজে নামে, কিন্তু চাকরি পাচ্ছে না। তারপর আমরা এ সমস্যা দূর করলাম চাকরি না খুঁজে তরুণরা হবে চাকরি সৃষ্টিকারী (job creator)-এ মতবাদ নিয়ে।

১১। তরুণরা হবে চাকরি সৃষ্টিকারী। তারা হবে উদ্যোক্তা। আর আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করি। আমরা গ্রামীণ ব্যাংক এসব উদ্যোক্তার উদ্যোগে বিনিয়োগ করি।

১২। গরিবরা গরিব কারণ তারা সুযোগ পায় না। আপনি পৃথিবীর ব্যাংক ব্যবস্থার দিকে তাকান। দেখবেন, এসব ব্যাংকের গ্রাহক সব ধনী লোকজন। পৃথিবীর সব প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে ধনীদের জন্য। আপনি গরিবদের সুযোগ না দিয়ে যদি বলেন, তারা গরিব, কারণ তা তাদের নিজেদের দোষে। এ কথা সত্য নয়। গরিবরা গরিব, কারণ আমরা তাদেরকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দিইনি।

১৩। গরিবরা বনসাই গাছের মতো। বনসাই গাছ ছোট আকারের হয়। কারণ তার বীজে কোনো সমস্যা নেই। বনসাই গাছ ছোট আকৃতির হয়, কারণ এটাকে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দেয়া হয় না। আমি বলি, গরিবরা হচ্ছে বনসাইয়ের মতো। সুযোগের অভাবে তারা গরিব।

১৪। আপনার যদি কোনো আইডিয়া নাও থাকে, তবে আপনার মায়ের দিকে তাকান। তিনি অল্প কিছু দিয়ে হলেও অসাধারণ কাজ করেছে। আপনার মায়ের থেকে আইডিয়া নিয়ে সেই আইডিয়াকে ২০ গুণ, ৫০ গুণ করে বড় করে চিন্তা করুন। কারণ আপনি শিক্ষিত।

১৫। এভাবে সমাজের যেকোনো সমস্যা নিন। সমস্যা সমাধানে একটি ব্যবসার উদ্ভাবন করুন। তারপর তা নিয়ে কাজে নেমে পড়ুন।