সোমবার, ১১ জুলাই, ২০২২

মুদ্রাস্ফীতি: গরুর মাংসের কেজি হবে ১,৪০০ টাকা।


মুদ্রাস্ফীতি (Inflation)
================
মুদ্রাস্ফীতি মানে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থে আপনি আগের তুলনায় আজ অনেক কম জিনিস ক্রয় করতে পারেন। বর্তমানে বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতি ৬.১৭%। এটা শুনতে তেমন খারাপ লাগে না। ৬.১৭% তো বেশি না। খুবই সামান্য বলে মনে হয়। চলুন, আমরা এই ব্যাপারটা একটু চিন্তা করে দেখি।

আজকে (১৩/০৭/২০২২) সয়াবিন তেল ১ লিটার ২০০ টাকা। বাংলাদেশের বর্তমান মুদ্রাস্ফীতি ৬.১৭%। এবার ৭০ কে আমরা ৬.১৭ দিয়ে ভাগ করি। ৭০/৬.১৭ = ১১.৩৫ বছর। অর্থাৎ ১১ বছর ৪ মাস পর আজকের ২০০ টাকার ১ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে হবে ৪০০ টাকায়। বিপরীতভাবে বলা যায়, আজকের ২০০ টাকার মূল্যমান ১১ বছর ৪ মাস পর অর্ধেক অর্থাৎ ১০০ টাকা হয়ে যাবে।

গতকালই আমাদের কুরবানির ঈদ গেল। চলুন দেখি তো গরুর মাংসের ওপর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব কেমন। আজকে গরুর মাংস ৭০০ টাকা কেজি। যদি বাংলাদেশের মুদ্রাস্ফীতি ৬.১৭% থাকে, তবে ১১ বছর পর, ২০৩৩ সালে গরুর মাংসের কেজি হবে ১,৪০০ টাকা।

(মুদ্রাস্ফীতির হারকে ৭০ দিয়ে কেন ভাগ করলাম? এটা একটা গাণিতিক তত্ত্ব। একে লগারিদম বলে। এক্সপোনেনশিয়াল গ্রোথ তথা সূচকীয় অগ্রগতি বের করতে এর ব্যবহার হয়। এটা গুগলে সার্চ করে দেখতে পারেন।)

ছবিতে, কফির দামের ক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতি বোঝানো হয়েছে। ১৯৭০ সালে যেই কফির দাম ছিল ২৫ পয়সা। ২০২২ সালে সেই একই পরিমাণ কফির দাম হয়েছে ১ টাকা ৮৫ পয়সা। এটা একটা প্রতীকী ছবি মাত্র। যাইহোক, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে আপনাদের কোন গল্প থাকলে কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

তথ্যসূত্র: The Art of Thinking Clearly. Rolf Dobelli. UK, Sceptre Publication, 2013. P. 107.

শনিবার, ৯ জুলাই, ২০২২

মোরগ ডাকলে নাকি সূর্য ওঠে!


False Causality: আমার এক বন্ধু, রাইয়ানের বাচ্চার বয়স ৮ মাস। তো বাচ্চাকে নিয়ে বন্ধু মার্কেটে গেল। সেখান দেখা হয়ে যায় তার এক বান্ধবীর সাথে। বান্ধবীর নাম শর্মিলি। শর্মিলি বাচ্চাকে দেখে বলে, বাহ! বাচ্চাটা তো দেখতে বেশ। এর বয়স কত?
রাইয়ান: ৮ মাস।
শর্মিলি: বলিস কী! আমি তো ভেবেছিলাম দেড় বছর।

এরপর বাসায় আনার পর বাচ্চার জ্বর হলো। রাইয়ান তার এক বন্ধু সোহেলকে বলছে, এই শর্মিলির কথার কারণেই আমার বাচ্চার জ্বর হলো। একেই বলে ফলস কজালিটি তথা মিথ্যা কার্যকারণ সম্পর্ক।

মিথ্যা কার্যকারণ সম্পর্ক মূলত এক ধরনের ভ্রান্তি। এটা ল্যাটিন শব্দ ❝post hoc, ergo propter hoc তথ পোস্ট হক, আরগো প্রপটার হক❞ থেকে উৎসারিত। এর মানে হচ্ছে, প্রথমটার কারণে দ্বিতীয়টা হয়েছে। যেমন, শর্মিলি বাচ্চাকে সুন্দর বলেছে বলেই বাচ্চার জ্বর এসেছে।

আবার বললে, মিথ্যা কার্যকারণ সম্পর্ক বলতে বোঝায় প্রথম ঘটনা ঘটার পর যেহেতু এই ঘটনা ঘটেছে, তাই প্রথম ঘটনা দ্বিতীয় ঘটনার কারণ। যেমন, আমি যেদিনই আমা সাইকেলটা ধুই সেদিনই বৃষ্টি আসে। অথবা, আমি নীলক্ষেতে রাস্তার মোড়ে গেলেই ট্রাফিক গাড়ি থামার সিগনাল দেয়।

তথ্যসূত্র: The Art of Thinking Clearly. Rolf Dobelli. UK, Sceptre Publication, 2013. P. 115.