সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৯

প্রতিকূল অবস্থা নতুন নতুন সুযোগ ও সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে।

আমি বিশ্বাস করি জীবনে যদি সমস্যা না থাকে তবে তা আমাদের সম্ভাবনাকে সীমিত করে ফেলে। এজন্যই আমি যত উদ্যোক্তাদের দেখি তাদের প্রত্যেকের জীবনে অসংখ্য বাধাবিপত্তি ও প্রতিকূল অবস্থার ঘটনা খুঁজে পাই। আর তাদের সেই বাধাবিপত্তি ও প্রতিকূল অবস্থাই তাদের সামনে নতুন নতুন সুযোগ ও সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে। উদাহরণ স্বরূপ, বার্নাই মার্কাসের (Bernie Marcus) কথা বলা যায়। তিনি এক দরিদ্র রাশিয়ান কাঠমিস্ত্রির সন্তান ছিলেন। তিনি নিউ জার্সির হেন্ডি ডেন নামক এক কোম্পানিতে চাকরি করতেন। (হেন্ডি ডেন নিজের-কাজ-নিজে-করুন এমন একটি হার্ডওয়ার বা হাতুড়ি পেরেকের দোকান।) তাকে হঠাৎ চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়।

(ছবিসূত্র : https://bensbargains.com/thecheckout/features/5-best-5-worst-things-to-buy-at-home-depot/)

তখন ১৯৭৮ সাল। চাকুরিচ্যুত হয়ে মার্কাস আর্থার ব্ল্যাংকের (Arthur Blank) সাথে মিলে তাদের নিজস্ব ব্যবসা আরম্ভ করেন। ১৯৭৯ সালে তারা তাদের প্রথম দোকান নেয় জির্জিয়ার আটলান্টাতে। এর নাম ছিল হোম ডিপোট। আজকে আমেরিকায় হোম ডিপোটের ৭৬০ টিরও বেশি দোকান আছে। সেখানে ১ লাখ ৫৭ হাজার লোক কাজ করে। তারা তাদের ব্যবসা দেশের বাইরেও ছড়িয়ে দিয়েছে। প্রতি বছর তাদের বাৎসরিক বিক্রয় হয় ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। [বাংলাদেশের ২০১৯-২০ বাজেটের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। হোম ডিপোটের মতো একটি কোম্পানির বাৎসরিক বিক্রয় বাংলাদেশের এক বছরের ব্যয়ের অর্ধেক। এতে করে আপনি সহজেই বুঝতে পারছেন ব্যবসার মাধ্যমে অর্থ আয়ের ব্যাপ্তি কত বিশাল হতে পারে। আর সেবার বিস্তৃতি তো আরও ব্যাপক।]

(ছবিসূত্র : https://en.wikipedia.org/wiki/The_Home_Depot)

আমি নিশ্চিত, বার্নাই মার্কাস তার চাকরি চলে যাওয়া খুব একটা খুশি হননি। কিন্তু তিনি যদি চাকরিতেই থাকতেন তবে কে জানে, তিনি আজকে যে সাফল্য অর্জন করেছেন তা অর্জন করতে পারতেন কিনা।

সামনে এরকম আরও কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করা হবে যেখানে আপনি দেখতে পাবেন প্রতিকূল অবস্থা কীভাবে নতুন নতুন সুযোগ ও সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে। ঠিক ধারণার সাথে থাকুন। ধন্যবাদ।

শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৯

নতুন বছরে এমন স্বপ্ন দেখুন যা আগে কখনো দেখা হয়নি

ব্যবস্থাপনা বিষয়ক খ্যাতিমান লেখক পিটার ড্রুকার (Peter Drucker) বলেন, 'পরিকল্পনা কেবল এক নামকাওয়াস্তের উদ্দেশ্যে পরিণত হয় যদি না তা আপনাকে তাৎক্ষণিক কঠোর পরিশ্রম করতে উদ্বুদ্ধ করে।' (Plans are only good intentions unless they immediately degenerate into hard work.) আগামী ২০২০ সালের জন্য কী পরিকল্পনা করছেন যা আপনাকে আপনার স্বপ্ন পূরণের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে?


জন এফ কেনেডি (John Fitzgerald Kennedy) ১৯৬৩ সালের ২৮ জুন আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনে স্বপ্ন সম্পর্কে বক্তৃতা দিতে গিয়ে বলেন, 'আমাদের এমন পুরুষ দরকার যারা এমন সব স্বপ্ন দেখতে পারবে যা আগে কখনো দেখা হয়নি।' (We need man who can dream of things that never were.)


স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে একে অপরকে সহায়তা করতে হয়। এ ব্যাপারে অনুপ্রেরণার লেখক ও বক্তা জিগ জিগ্লার (Zig Ziggler) উত্তম বলেছেন, 'একে অপরকে ধ্বংস করার চেয়ে একে অপরকে উন্নত হতে সহায়তা করুন।' (Help each other grow instead of destroying each other.)

২০২০ সালের জন্য আপনার পরিকল্পনা করুন, স্বপ্ন দেখুন এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে একে অপরকে সহায়তা করুন।

শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৯

প্রতিকূল অবস্থার সুবিধা

মনোবিদ ড. জয়চি ব্রাদার্স বলেন, ‘যে ব্যক্তি জীবনে সাফল্য অর্জন করতে চায় তাকে অবশ্যই ব্যর্থতাকে একটি সুস্থ্য স্বাভাবিক বিষয় হিসাবে ধরে নিতে হবে। একে জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করতে হবে।’ এমনকি বাধাবিপত্তি ও ব্যর্থতাকে সাফল্য অর্জনের পথে বাধা তো নয়ই; বরং অনেকটা দিকনির্দেশনার মতো। সাফল্য অর্জনের জন্য পথে এদেরকে আবশ্যকীয় উপাদান হিসাবে চিন্তা করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে প্রতিকূল অবস্থার অনেক সুবিধা রয়েছে। এখানে কিছু মৌলিক সুবিধা সম্পর্কে উল্লেখ করা হল যাতে করে আরও সহজে প্রতিকূল অবস্থাকে বোঝা যায় :


প্রতিকূল অবস্থা জীবনকে প্রাণবন্ত করে তোলে


প্রতিকূল অবস্থা ও ব্যর্থতার মতো আর কোন কিছু জীবনকে এত প্রাণবন্ত করতে পারে না। ১৯৮০ সালের দিকে টাইম ম্যাগাজিন একদল লোকের ওপর জরিপ চালায়। এ জরিপ থেকে মানুষ প্রতিকূল অবস্থায় পড়লে জীবনের যে প্রাণচাঞ্চল্য বৃদ্ধি পায় তাই ফুটে ওঠে। তারা এমন একদল লোকের ওপর জরিপ চালায় যারা কোম্পানির প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে তিন তিনবার চাকরি হারিয়েছেন। মনোবিজ্ঞানীরা চিন্তা করলেন এরা নিশ্চয় হতাশ হয়ে পড়েছে। কিন্তু ফলাফল দেখা গেল তার বিপরীত; তারা বরং আশাবাদী। তাদের প্রতিকূল অবস্থা বরং তাদের জন্য এক ধরনের সুবিধা তৈরি করেছে। যেহেতু তারা প্রথমবার চাকরি হারিয়ে আবার চাকরির জন্য চেষ্টা করেছে, এরপরও এরকম দুইবার ঘটেছে, ফলে দেখা যায় তারা অন্য যারা কেবল এক কোম্পানিতেই চাকরি করেছে এবং কখনো চাকুরিচ্যুত হয়নি তাদের চেয়ে বেশি দক্ষভাবে বাধাবিপত্তি বা প্রতিকূল অবস্থার মোকাবিলা করতে পারে। তাই প্রতিকূল অবস্থাকে গ্রহণ করুন এবং জীবনকে প্রাণবন্ত করে তুলুন।

প্রতিকূল অবস্থা যে জীবনকে প্রাণবন্ত করে তুলতে পারে তা দেখার জন্য একটি চলচ্চিত্র দেখতে পারেন। ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ফরেস্ট গাম্প (Forrest Gump)


বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৯

বাধাবিপত্তি কী একজনের মনোভাবকে উন্নত করতে পারে?


শিল্পী ডেভিড বেলিস ও টেড ওরল্যান্ড একবার এক আর্ট শিক্ষকের কথা বলেছিলেন। আর্ট শিক্ষক তার ক্লাসের শিক্ষার্থীদের দুই ভাগে ভাগ করেন এবং এক ধরনের পরীক্ষানিরীক্ষা চালান। পরীক্ষাটি ছিল ব্যর্থতার সুবিধা নিয়ে। পরীক্ষার ফলাফল ছিল এমন :


মৃৎশিল্পের শিক্ষক একদিন তার ক্লাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের জানালেন তিনি আজকে ক্লাসের শিক্ষার্থীদের দুই ভাগে ভাগ করে দিবেন। ক্লাসের সকলকে ছবি আঁকতে হবে। ক্লাসের বাম দিকে যারা আছেন তাদেরকে কেবল ছবির পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে গ্রেড নম্বর দেওয়া হবে। আর ক্লাসের ডান দিকে যারা আছেন তাদেরকে কেবল ছবির গুণগত মানের ওপর ভিত্তি করে গ্রেড নম্বর দেওয়া হবে। পদ্ধতি বেশ সহজ : যারা পঞ্চাশটি ছবি আঁকবে তাদেরকে ‘এ’ গ্রেড। চল্লিশটির জন্য ‘বি’ গ্রেড। আর যাদেরকে গুণগত মানের ওপর ভিত্তি করে গ্রেড নম্বর দেওয়া হবে তাদেরকে কেবল একটি ছবি আঁকলেই হবে। এক মাস পর সকলেই তাদের ছবি নিয়ে হাজির হল। দারুণ বিষয় হল : যারা পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে ছবি এঁকেছে তারা গুণগত মানের ওপর ভিত্তি করে আঁকা ছবির চেয়ে বেশি ভালো করেছে। এখান থেকে দেখা গেল : পরিমাণ ভিত্তিক দলটি অনেক বেশি ছবি এঁকেছে, ভুল করেছে, ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছে এবং আবার এঁকেছে। আর গুণগত মান ভিত্তিক দলটি অনেক বেশি তত্ত্ব নিয়ে আলাপ করেছে, যথার্থ ছবি বা ছবির পরিপূর্ণতা নিয়ে অনেক আলাপ করেছে কিন্তু কাজকর্মের মাধ্যমে সেই চেষ্টা তুলে ধরতে পারেনি।


শিল্প, ব্যবসা, খেলাধূলা, সম্পর্ক বা অন্য যেকোনো ধরনের কাজকর্মে আপনার কী উদ্দেশ্য তা কোনো ব্যাপার নয়। আসল ব্যাপার হল― সামনে এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র পন্থা হচ্ছে আগে আগে ব্যর্থ হোন, প্রায়ই ব্যর্থ হোন এবং ব্যর্থ হয়েও সামনে এগিয়ে যান (The only way you can get ahead is to fail early, fail often, and fail forward)।

মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৯

ইতিবাচক অভ্যাস গঠন করুন।



মনোভাব হচ্ছে এক ধরনের চিন্তার অভ্যাস।  [একজন মানুষ তার নিজের অভ্যাস নিজেই তৈরি করতে পারে।  এ অভ্যাস হতে পারে ভালো বা মন্দ।] অভ্যাস ভালো হোক বা মন্দ হোক, এসব অভ্যাস তৈরির পদ্ধতি কিন্তু এক।  জীবনে সফল হওয়ার জন্য যেমন ভালো অভ্যাস তৈরির পদ্ধতি খুব সহজেই অনুসরণ করা যায়, আবার তেমন ব্যর্থ হওয়ার জন্য মন্দ অভ্যাসও খুব সহজেই অনুসরণ করা সম্ভব।

অভ্যাস আমাদের সহজাত প্রবৃত্তি বা স্বাভাবিক প্রবণতা নয়। অভ্যাসের জন্য ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া দরকার।  হঠাৎ করে অভ্যাস তৈরি হয় না।  এগুলো গঠনের পিছনে কারণ থাকে।  [দীর্ঘদিনের চর্চা থাকে।  অনেকদিন ধরে একই ধরনের কাজ করে যাওয়া হয় অথবা একই ধরনের কাজ না করা হয়।] যখন আমরা অভ্যাস তৈরির প্রকৃত কারণ খুঁজে পাই, সেই কারণ সম্পর্কে দৃঢ়চেতা হয়ে উঠি তখন তা কর্মে প্রকাশ করার ব্যাপারে আমরা উদ্বুদ্ধ হই। এ সময়ও আমরা অভ্যাসের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে সক্ষম।  সেই কারণ সম্পর্কে আমরা সচেতন হওয়ার পর আমরা অভ্যাস গঠন করব নাকি করব না, সেই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ আমাদের আয়ত্তের মধ্যে।  আমরা অভ্যাস তৈরির জন্য দরকারি কাজগুলো করতে পারি অথবা সেগুলো থেকে বিরত থাকতে পারি।  আমাদের সেই নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা আছে।  বেশিরভাগ লোকজন অভ্যাস দ্বারা নিজেদেরকে নিয়ন্ত্রিত মনে করে।  যখন সেসব অভ্যাসগুলো মন্দ বলে বিবেচিত হয় তখন তারা নেতিবাচকভাবে মনোভাব পোষণ করে।


নিচের ধাপগুলো আপনাকে আপনার মন্দ অভ্যাস দূর করে ভালো অভ্যাস গঠনে সহায়তা করবে :


ধাপ #১ : আপনার মন্দ অভ্যাসগুলোর একটি তালিকা তৈরি করুন।

ধাপ #২ : এগুলোর প্রকৃত কারণ কী?

ধাপ #৩ : এগুলো সমর্থন করে এমন সহায়ক কারণ কী?

ধাপ #৪ : মন্দ অভ্যাসের বদলে ভালো ও ইতিবাচক এক অভ্যাস বেছে নিন।

ধাপ #৫ : ভালো অভ্যাসটি নিয়ে চিন্তা করুন। এর সুবিধা ও ফলাফল নিয়ে চিন্তা করুন।

ধাপ #৬ : এই অভ্যাস গঠন করার জন্য কাজ আরম্ভ করুন।

ধাপ #৭ : এই অভ্যাসকে আরও সুদৃঢ় করার জন্য প্রতিদিন কোন না কোন কাজ করুন।

ধাপ #৮ : ভালো অভ্যাসের দরুন একটি সুবিধা লাভ করে থাকলে নিজেকে তার জন্য পুরস্কৃত করুন।

বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯

গর্তে পড়ে যাওয়া এক ব্যাং।


একদিন এক ব্যাং রাস্তার পাশ দিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ সে বড় এক গর্তে পড়ে যায়। অনেক চেষ্টা করেও উঠতে পারল না। পাশ দিয়ে এক খরগোশ যাচ্ছে। গর্তে ব্যাং দেখে তার মায়া হল। সেও চেষ্টা করল। কিন্তু ব্যাংকে গর্ত থেকে বের করতে পারল না। এসময় জঙ্গল থেকে আর পশুপাখি এল। তারা সকলে মিলে চেষ্টা করল। কিন্তু তাতেও কোনো ফল হল না। পশুপাখিরা বলল, ‘তোমার জন্য কিছু খাবার নিয়ে আসি। যেহেতু তোমাকে কিছু সময়ের জন্য এখানেই থাকতে হবে।’ এই বলে তারা কিছুদূর এগিয়ে গেল। এমন সময় পিছন ফিরে দেখল সেই ব্যাংটি লাফিয়ে লাফিয়ে আসছে। পশুপাখিরা তো অবাক। জিজ্ঞেস করল, ‘তুমি উঠলে কী করে?’ ব্যাং বলল, ‘আমি দেখলাম একটি বড় ট্রাক গর্তের ওপর এসে পড়ছে। তখন আমাকে গর্ত থেকে বের হতেই হল।’

আমরাও জীবনের গর্ত থেকে তখন বের হই যখন বের হতেই হবে। ঠিক সেই ব্যাং এর মতো। যতক্ষণ আমাদের হাতে চেনাজানা পন্থা আছে ততক্ষণ আমরা পরিবর্তিত হব না। সত্য কথা হচ্ছে বেশিরভাগ লোকজন পুরাতন সমস্যার নতুন কোন সমাধান করার চেয়ে পুরাতন সমস্যা নিয়ে থাকতেই বেশি আরামবোধ করে। যেমন ময়লা রাস্তা পরিষ্কার করার নতুন কোন সমাধান করার চেয়ে মানুষ ময়লা নিয়ে থাকতেই বেশি আরামবোধ করে। তারা নতুন কোন সমাধান করার ক্ষেত্রে কেমব্রিজের নবাবের মতো বক্তব্য দেয়।

তিনি বলেছিলেন, ‘যেকোনো সময়ে, যেকোনো কারণ থাকলেও কোনো ধরনের পরিবর্তন ঘটানো নিন্দার বিষয়।’

যেসব মানুষ বিশ্বাস করে প্রথমবার বলে এ কাজ করা যাবে না তারা কোনোদিন কোনো কাজ সম্পন্ন করতে পারে না।

মানুষের পক্ষে পরিবর্তন হওয়ার সম্ভব। আর এ কথাই হচ্ছে অনুপ্রেরণার মূল কথা। আপনি যখন অনুধাবন করবেন আপনাকে সবসময় একই রকম থাকার কোনো দরকার নেই তখন আপনার আকাঙ্ক্ষা জ্বলে উঠবে। আপনি তখন নিজের মধ্যে পরিবর্তনের এক জ্বলন্ত আকাঙ্ক্ষা অনুভব করবেন। পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করুন। পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জের প্রেমে পড়ে যান এবং দেখবেন পরিবর্তিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা কী করে বেড়ে উঠছে।

মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৯

অবজারভেশন (পর্যবেক্ষণ) বইয়ের পর্যালোচনা


অবজারভেশন (পর্যবেক্ষণ) বই কী নিয়ে? ১৭টি অধ্যায় নিয়ে অবজারভেশন (পর্যবেক্ষণ) বই। প্রথমে জীবনে সাফল্য অর্জনের জন্য পর্যবেক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। লেখক রাসেল এইচ. কনওয়েল হয়েছে ভারতবর্ষের এক গল্প দিয়ে তার বক্তব্য আরম্ভ করেন। ভারতবর্ষের জনগণ একজন রাজা খুঁজছেন। জ্যোতিষীরা নক্ষত্র গণনা করলেন।

নক্ষত্র জবাব দিল :

"দেশের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুঁজে দেখুন এবং যখন আপনি এমন একজন পুরুষকে খুঁজে পাবেন যাকে পশুপাখিরা অনুসরণ করে, সূর্য সেবা করে, পানি মেনে চলে এবং মানুষজন ভালোবাসা, তখন আপনাকে তার বংশ পরিচয় সম্পর্কে জানার দরকার নেই। সেই পুরুষই হবে রাজ্যের কাঙ্ক্ষিত উত্তরাধিকারী যিনি সিংহাসনে বসার যোগ্য ও রুপার মুকুটের অধিকারী।"

বইয়ের আরও প্রবন্ধগুলোর মধ্যে হচ্ছে কে প্রকৃত নেতা?, নারীর প্রভাব, গৃহপাঠ, আত্ম সহায়তা সহ প্রভৃতি। 


চিত্র : অবজারভেশন (পর্যবেক্ষণ) বইয়ের সূচি।

পর্যবেক্ষণ বই কেন পড়বেন? ব্যক্তির নিজের উন্নতির জন্য পর্যবেক্ষণ দরকার। যদি আপনি মানুষের জন্য উপকারী সেবা সম্পন্ন করতে চান তাতেও পর্যবেক্ষণ দরকার। অবজারভেশন (পর্যবেক্ষণ) বইয়ের ১৪ পৃষ্ঠা থেকে উদ্ধৃত : 

"শিকারি বলল, যখন আমি পাহাড়ে ফিরে এলাম আমি লক্ষ্য করলাম পাহাড়ের পাশেই একটি বড় গোল পাথর পড়ে আছে" শিকারি সেই পাথর সরিয়ে এক গর্ত করল। সেখানে বাঁধ দিয়ে পানি জমিয়ে রাখল। যাতে করে পাহাড়ের নিচের মানুষজন গ্রীষ্মকালে পানি ব্যবহার করতে পারে।

এই যে লক্ষ্য করার বিষয় বলা হয়েছে এই হচ্ছে পর্যবেক্ষণ। "ডক্টর জনসন, বলেন কিছু মানুষ দশ মাইলের পথ হেঁটে যা দেখতে পায় তা অন্যরা পুরো দেশগুলো দেখতে পায় না।" - পৃষ্ঠা ৫৯।

এভাবে আরও বহু গল্প, ঘটনা ও তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে লেখক পর্যবেক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। আশা করি এই বই আপনাকে সমৃদ্ধ করবে।

তথ্যসূত্র : অবজারভেশন। মূল : রাসেল এইচ. কনওয়েল। অনুবাদ : ফজলে রাব্বি। ঢাকা, সাফল্য প্রকাশনী, ২০১৭।