আমার জীবনের ব্যক্তিগত উনয়ন বিষয়ক প্রথম বই
হচ্ছে ডেল কার্নেগি রচনাসমগ্র। একটি অসাধারণ এবং চমৎকার বই। আমি উচ্চ মাধ্যমিক
বিদ্যালয়ে পাঠকালে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হই। এইসব সমস্যার সমাধান করতে না পেরে
আমি হতাশ এবং বিমর্ষ হয়ে উঠি। এই হতাশা কাটিয়ে ওঠা এবং পরবর্তী জীবনের নানান
সমস্যা আমি কাটিয়ে উঠতে এবং নিজের কাজে চেষ্টা চালিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা পাই ডেল
কার্নেগি রচনাসমগ্র হইতে।
বইটি প্রথম আমাকে এনে দেন আমার পিতা, মো: রুহুল আমিন। তখন ছিল ২০০৮ সাল। তিনি পেশায় একজন বই বিক্রেতা। আমার পিতার সাথে আমার
সরাসরি আলাপ না হলেও তিনি সর্বদা আমাকে অনুপ্রাণিত করতে বা ব্যক্তিগত উন্নয়নে
উৎসাহ দিয়ে গেছেন। যেমন হয়ত তিনি আমার হতাশা অনুভব করে আমাকে ডেল কার্নেগি রচনাসমগ্র এনে দেন এবং বলেন যে, “ইহা একটি ভালো বই। তুমি পড়ে দেখতে পার।”
ডেল কার্নেগি রচনাসমগ্র থেকে বাস্তব জীবনে
প্রথম যে জ্ঞান আমি কাজে লাগাই তা ছিল আমার অনিয়মিত ঘুমকে নিয়মিত করা। ঘুমানোর সময়
চোখ বন্ধ করে মনে চিন্তা করা যে সকাল ৬ টায় উঠবো এবং ঘুম না এলে ১০০ থেকে উল্টা ০১
পর্যন্ত গণনা। ইহা আমি আজও করে যাচ্ছি।
দ্বিতীয় জ্ঞানটি ছিল স্ব-পরামর্শ। একটি কাজ
আমি সম্পন্ন করতে চাই এবং কাজটির ইতিবাচক বিষয়টি নিয়ে বারবার নিজেকে বলা যে আমি
পারবো। আমার স্মরণ মতে, আমি ক্রিকেট খেলা সর্বদাই ভালো খেলতাম না, বিশেষ করে
ব্যাটিং। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একদিন এই স্ব-পরামর্শ প্রয়োগ করে একটি চার
হাঁকিয়ে ছিলাম। কেউ ব্যাপারটি অনুভব করেনি কারণ সবাই আমার থেকে ভালো খেলতো, কিন্তু
আমি সেইদিন ব্যাপারটি বেশ উপভোগ করেছিলাম।
বইটির অন্যতম দিক হচ্ছে, ইহার বাক্যগুলো আমাকে
হতাশার স্রোতে ভেসে যেতে দেয়নি। বাক্যগুলো দাঁড় স্বরূপ কাজ করেছে। যখনই আমি
সমস্যায় হতাশ হয়েছি, আমার মস্তিষ্ক আমাকে ডেল কার্নেগি রচনাসমগ্র হইতে একটি বাক্য
তুলে পথ দেখিয়েছে যে আমাকে এগিয়ে যেতে হবে এবং কিভাবে আমি এগিয়ে যাব। ধন্যবাদ ডেল
কার্নেগি রচনাসমগ্র।