বুধবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৯

কীভাবে বই পাঠ করবেন? (জ৪প পদ্ধতি)

বাংলাদেশের পাঠকের বোঝার সুবিধার্থে আমি (ফজলে রাব্বি) অনুবাদ করার ক্ষেত্রে দেশের সংস্কৃতি বিবেচনা করেছি। আমি বিভিন্ন ভাষার বই, সংবাদ, চলচ্চিত্র, আলোচনা, অডিও, ভিডিও এবং বন্ধুদের সাথে আড্ডায় পাঠককে বোঝাতে সহায়ক যেসব উদাহরণ পেয়েছি তা প্রয়োগ করেছি। পাঠকের সাফল্য সম্বন্ধে সহযোগিতা করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। তাই এ কথাকে আমি সাফল্য প্রকাশনীর স্লোগান হিসাবে ব্যবহার করি। আমি পূর্বে উল্লেখ করেছি : পাঠ → বোঝা → উপলব্ধি। আমি পাঠ করি, পাঠ করার পর বোঝার চেষ্টা করি এবং পাঠকের কাছে বোধগম্য রূপে উপস্থাপনের চেষ্টা করি। আমি পাশ্চাত্যের বক্তব্য পদ্ধতি অনুসরণ করি― যে বক্তা তার দায়িত্ব হচ্ছে শ্রোতা বা পাঠককে বক্তব্য সম্পর্কে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে বলা। আপনি এ সম্পর্কে আরও পাঠ করতে পারেন― আউটলায়ার্স। মূল : ম্যালকম গ্ল্যাডওয়েল। অনুবাদ : এ.এম. নাইম হোসেন ও ফজলে রাব্বি। ঢাকা, সাফল্য প্রকাশনী, ২০১৮। পৃ. ১২২। এরপর উপলব্ধির জায়গায় পাঠক সেই শিক্ষা বাস্তবে প্রয়োগ করে এর কার্যকারিতা উপলব্ধি করবে।

বই পাঠ করার সবচেয়ে সহজ ও প্রচলিত উপায় সম্পর্কে বলছি। এর জন্য আমি আমার শিক্ষক অধ্যাপক মো. আলী নকী স্যারের প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। বই পড়ার উত্তম ও কার্যকর এই পদ্ধতির নাম জ৪প। জ’তে জরিপ, আর ৪প মানে― প্রশ্ন, পাঠ, পুনরূদ্ধার, পর্যালোচনা। জ৪প পদ্ধতিকে চিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করা হল :



জরিপ

১। বইয়ের মূল বক্তব্য কী?
বইয়ের আকার আয়তন, প্রচ্ছদ, বাঁধাই, কাগজ, ছাপা, ঘ্রাণ ইত্যাদি পরখ করে দেখুন।
নাম, শিরোনাম ও উপশিরোনামের দিকে লক্ষ করুন।
ছবি, তালিকা, টেবিল বা মানচিত্রের নিচের লেখা পাঠ করুন।
সূচনার দিকে লক্ষ দিন। শেষ অনুচ্ছেদ দেখুন। প্রায়ই দেখা যায় শেষ অনুচ্ছেদে মূল বক্তব্য বলার চেষ্টা করা হয়।

প্রশ্ন

এই অধ্যায় কী নিয়ে?
এই অধ্যায়ে কী কী প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে?
এই তথ্য আমাকে কীভাবে সহায়তা করবে?

পাঠ

বই থেকে বইকে উপলব্ধি করা।
আপনার প্রশ্নের উত্তর খুঁজুন।

পুনরূদ্ধার

পূর্বে জানা কোনো জ্ঞানকে বর্তমান বই থেকে লব্ধ জ্ঞানের সাথে সমন্বয় করা।
কারও সাথে বইয়ের বিষয় নিয়ে আলাপ করুন। এতে করে আপনি যা কিছু পড়ে তা আরও পরিষ্কার হবে।

পর্যালোচনা

টীকা ও বই থেকে প্রাপ্ত আপনার উপলব্ধি লিখুন।
আপনার তথ্য ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পর্যালোচনা লিখুন।


তথ্যসূত্র :

১। আউটলায়ার্স। মূল : ম্যালকম গ্ল্যাডওয়েল। অনুবাদ : এ.এম. নাইম হোসেন ও ফজলে রাব্বি। ঢাকা, সাফল্য প্রকাশনী, ২০১৮।

২। স্টার্ট উইথ হোয়াই। মূল : সাইমন সিনেক। অনুবাদ : ফজলে রাব্বি। ঢাকা, সাফল্য প্রকাশনী, ২০১৯।

রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৯

আপনার সময় কোথায় যায় তা আগে দেখুন

#সময়_ব্যবস্থাপনার_যত_কলাকৌশল

আপনি যদি না জানেন আপনি কোথায় যেতে চান তবে কী করে বলেন আপনি ঠিক বা ভুল জায়গায় আছেন?


তত্ত্ব :

আপনি আপনার বর্তমান অবস্থানকে দুইভাবে দেখতে পারেন। প্রথম হচ্ছে অনুমান করে পরিমাপ। এর জন্য সবচেয়ে সহজ হচ্ছে বৃত্তাকার চার্ট ব্যবহার করা। একে পাই চার্টও বলা হয়। এতে আপনি বিভিন্ন জিনিস সম্পর্কে জানতে পারেন। যেমন :

লেখালেখি
টেলিফোন
মিটিং
পরিকল্পনা

এছাড়াও আপনি আরও ব্যক্তিগত ও প্রয়োজনীয় বিষয় যোগ করতে পারেন। এতে করে আপনি বুঝতে পারবেন কোন কাজে আপনার কতটুকু সময় অতিবাহিত হচ্ছে।

দ্বিতীয় উপায় হচ্ছে একটি ডাইরিতে আপনার কর্মসূচি বা অনুসূচি লিখে রাখা। এতে করে আপনি আপনার নিজের সময় সম্পর্কে ছবির মতো স্পষ্ট দেখতে পাবেন। কমপক্ষে এক সপ্তাহ ধরে নিয়মিত অনুসূচি তৈরি করুন এবং পালন করতে থাকুন। এরপর অনুসূচির ডাইরি দেখলেই কোথায় কত সময় যায় এ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাবেন।


আপনি বেশ সহজে এই অনুসূচি দেখে আপনার সময় কোন কোন খাতে যায় তা দেখতে পাবেন। এতে করে কোন কোন খাতে আপনার সময় ব্যয় করা উচিত সেই সম্পর্কে বেশ সহজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

হাতে কলমে কাজ :

পাই চার্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনি আপনার গুরুত্ব অনুযায়ী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তালিকা প্রস্তুত করতে পারেন। এতে করে আপনি কোন কোন বিষয়ে প্রাধান্য দিচ্ছেন এবং কতটুকু সময় দিচ্ছেন তা বুঝতে পারবেন। এতে করে আপনার মস্তিষ্কে একটি স্পষ্ট ছবি তৈরি হবে। সময় ব্যবস্থাপনার যত কলাকৌশল জানার আগে এই ছবি তৈরি হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এসব কাজ করে আপনি দেখতে পাবেন আপনি আপনার সময়কে কোন পথে, কোনদিকে ব্যয় করছেন। আপনার কাজ কোনদিকে, কোন ফলাফল বয়ে আনবে। এসব কাজ করে কী আপনার জীবনে কোন ইতিবাচক ফলাফল আসবে কিনা তাও বুঝতে পারবেন।


তথ্যসূত্র :

১। টাইম ম্যানেজমেন্ট (সময় ব্যবস্থাপনা)। মূল : ব্রায়ান ট্রেসি। অনুবাদ : ফজলে রাব্বি। ঢাকা, সাফল্য প্রকাশনী, ২০১৭।