মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৫

আপনার ইতিবাচক মনকে অনুপ্রেরণা দিতে উক্তিগুলোর ৩১টি থেকে ৪০টি।


আপনার মনকে সাহস যোগাতে এবং অনুপ্রাণিত করতে ১০টি অনুপ্রেরণামূলক বাক্য।


৩১। যখন কাজগুলো করা সহজ হয় তখন আমরা বেড়ে উঠি না, যখন আমরা সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হই তখন আমরা বেড়ে উঠি।

৩২। পাঁচজনে পারে যাহা, তুমিও পারিবে তাহা। - কালী প্রসন্ন ঘোষ (বাঙালি সাহিত্যিক : ১৮৪৩-১৯১০)

৩৩। নেতারা মহান হয়ে ওঠে তাদের ক্ষমতার জন্য নয়, বরং কারণ হচ্ছে অন্যান্যদের ক্ষমতাবান করার তাদের সক্ষমতার ওপর।

৩৪। স্বপ্ন দেখা ভালো, কিন্তু স্বপ্ন দেখা এবং কাজ করা ইহার চেয়েও ভালোতর। আস্থা হচ্ছে শক্তিশালী, কিন্তু আস্থার সাথে কাজ করা হচ্ছে অধিক শক্তিশালী। - থমাস রবার্ট গেইনস

৩৫। জীবন হচ্ছে একটি প্রভাব তৈরী করার বিষয়, কেবল আয় করার জন্য নয়। - কেভিন ক্রস

৩৬। ঊর্ধ্বতন লোকদের চিহ্নিত করার অনেকগুলো দিকের মধ্যে একটি দিক হচ্ছে যে তারা কাজ নির্ভর। সাধারণ লোকদের চিহ্নিত করার অনেকগুলো দিকের মধ্যে একটি দিক হচ্ছে যে তারা কথা নির্ভর। - ব্রায়ান ট্রেসি

৩৭। সাফল্য তাদের কাছে আসে যারা সাফল্য-সচেতন। ব্যর্থতা তাদের কাছে আসে যারা উদাসীনভাবে নিজেদের অনুমতি দিয়েছে ব্যর্থতা-সচেতন হয়ে উঠার। - নেপোলিয়ন হিল


৩৮। কোন কিছুই কাজ করবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি কিছু করছেন। - জন উডেন

৩৯। সাফল্য অর্জিত হয় তাদের দ্বারা যারা চেষ্টা করে এবং সাফল্য বজায় থাকে তাদের দ্বারা যারা ইতিবাচক মানসিক ভঙ্গীর সাথে চেষ্টা করতে থাকে।
তথ্যসূত্র - Success Through a Positive Mental Attitude by Napoleon Hill and W. Clement Stone.

৪০। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি ভালো কিছু করতে পারেন। ভালো কিছু করার জন্য এখনও খুব বেশি দেরি হয়নি।

তথ্যসূত্র -

১। Success Through a Positive Mental Attitude by Napoleon Hill and W. Clement Stone.

২। দৈনিক প্রথম আলো।

৩। Global Citizen.

আপনার মনকে সাহস যোগাতে এবং অনুপ্রাণিত করতে আরও পৃষ্ঠা - ০১ ০২ ০৩ ০৪ ০৫ ০৬ ০৭ ০৮ ০৯ ১০

সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১৫

আমরা আল্লাহর জন্য দরিদ্র্য নই। আমরা দরিদ্র্য কারণ তোমার বাবা কখনও ধনী হওয়ার একটি আকাঙ্ক্ষা তৈরী করেনি।


ব্যক্তিগত উন্নয়ন শিক্ষায় আল কুরআন, ৫৭ সূরা আলহাদীদ, আয়াত –০৪।
 “আর তিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন তোমরা যেখানেই থাক না কেন। তোমরা যা কিছু কর আল্লাহ তা দেখেন।”

আমরা যা কিছু বা যেকোন কাজ করি, আল্লাহ তা দেখেন। একজন যদি তার নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণ করতে কাজ করে আল্লাহ তার সঙ্গে থাকবেন। তবে কাজের উদ্দেশ্য অবশ্যই সৎ হতে হবে।

আল্লাহ একজন পুরুষের সৎ কাজগুলো যেমন দেখেন তেমনি অসৎ কাজগুলোও দেখেন। কিন্তু ফলাফল দুই ভাগে দেওয়া হবে। উভয় সৎ বা অসৎ কাজের ফলাফলের এক ভাগ দুনিয়াতে এবং অপর ভাগ আখিরাতে দিবেন।

আল্লাহ সর্বদাই আমাদের সাথে আছেন। আমরা হয়ত আমাদের দুঃখ, কষ্ট বা ব্যর্থতার কারণে, কুয়াশাচ্ছন্ন মনের কারণে আল্লাহর সঙ্গ অনুধাবন করতে পারি না। তবে আমরা যত দুঃখে বা কষ্টেই থাকি আল্লাহ সর্বদাই আমাদের সাথে থাকেন এবং আমাদের সাফল্যের পথ দেখান। এমনই এক ঘটনা আপনাদের এখন জানাবো। যেখানে একজন পুরুষ আল্লাহর সাহায্য চেয়েছেন এবং আল্লাহ তাকে পথ দেখিয়ে সাহায্য করেছেন।

হাসান (ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে) একটি প্রান্তিক কৃষক পরিবারের সাত সন্তানের একজন ছিলেন। তিনি তার পাঁচ বছর বয়স থেকেই কাজ আরম্ভ করেন। নয় বছর বয়সে গরু চালনা শেখেন। সেখানে বিশেষ তেমন কিছুই ছিল না। অন্যান্য কৃষকের সন্তানদের মতন সেও ভোরে উঠতো এবং কাজ আরম্ভ করতো। এই পরিবারগুলো তাদের দারিদ্র্যতাকে নিয়তি বলে মেনে নেয় এবং উত্তম কিছুর জন্য কখনও চেষ্টা করেনি।

কিশোর হাসান অবশ্য একটি দিক দিয়ে তার বন্ধুদের থেকে আলাদা ছিলেন। ইহা হচ্ছে তার অবিস্মরণীয় মা। তার মা তাদের সন্তানদের জন্য এই দিন-আনো-দিন-খাও পরিস্থিতি কখনও মেনে নেননি। যদিও তিনি এই পরিস্থিতির মধ্য বড় হয়েছেন এবং এখনো ইহার মধ্যেই রয়েছেন। তিনি অনুভব করতেন যে সেখানে নিশ্চয়ই কোন ত্রুটি রয়েছে তাদের এমন দরিদ্র্য পরিস্থিতির জন্য। তিনি প্রায়ই তার সন্তানদের সাথে তার স্বপ্নগুলো নিয়ে কথা বলতেন।

তিনি প্রায়ই বলতেন, “আমাদের দরিদ্র্য থাকা উচিত নয় এবং কখনই ইহা আমাকে যেন শুনতে না হয় যে আমরা দরিদ্র্য কারণ ইহা আল্লাহর ইচ্ছা। আমরা আল্লাহর জন্য দরিদ্র্য নই। আমরা দরিদ্র্য কারণ তোমার বাবা কখনও ধনী হওয়ার একটি আকাঙ্ক্ষা তৈরী করেনি। আমাদের গোষ্ঠীর মধ্যে কেউই কখনই এমন একটি আকাঙ্ক্ষা তৈরী করেনি।”

কেউই এমন একটি আকাঙ্ক্ষা তৈরী করেনি। এই ধারণাটি হাসানের মনে গভীরভাবে এমন প্রভাব ফেলে যে তার সমগ্র জীবনই বদলে যায়। তিনি আরম্ভ করেন ধনী হওয়ার একটি আকাঙ্ক্ষা তৈরী করতে। তিনি তার মনকে সেই জিনিসগুলোর প্রতি মনোযোগী করতেন যা তিনি চান এবং সেই জিনিসগুলোর প্রতি অমনোযোগী হতেন যা তিনি চান না। এইভাবেই, তিনি ধনী হওয়ার একটি জ্বলন্ত আকাঙ্ক্ষা তৈরী করলেন। দ্রুততম পথে অর্থ তৈরীর জন্য, তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, কিছু বিক্রয় করতে হবে। তিনি সাবান চয়ন করলেন। বারো বছর ধরে তিনি ইহা বিক্রয় করে চললেন, দরজা থেকে দরজা।

তারপর তিনি একদিন জানতে পারলেন যেই প্রতিষ্ঠানটি তাকে সাবান দেয় সেই প্রতিষ্ঠানটি বিক্রয়ের জন্য নিলাম করা হবে। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় দাম হবে ৳১৫,০০,০০০। বারো বছরের বিক্রয় প্রতিনিধি রূপে কাজ করে, এক এক টাকা সঞ্চয় করে, তার জমা হয়েছিল ৳২,৫০,০০০। তারপর তিনি একটি চুক্তি করলেন প্রতিষ্ঠানের মালিকের সাথে যে তিনি ৳২,৫০,০০০ জামানত দিয়ে বাকি ৳১২,৫০,০০০ পরিশোধ করবেন পরবর্তী দশ দিনের মধ্যে। চুক্তিতে শর্ত ছিল, তিনি যদি দশ দিনের মধ্যে উক্ত টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন তবে তার জামানত উঠাতে পারবেন না, তার জামানত বাজেয়াপ্ত করা হবে।

একজন সাবান বিক্রয় প্রতিনিধি রূপে ১২ বছর কাজ করার সময়, হাসান অনেক ব্যবসায়ীদের সাথে সম্মান এবং সুসম্পর্ক অর্জন করেন। আজ তিনি তাদের কাছে গেলেন। তিনি ব্যক্তিগত বন্ধুদের কাছেও গেলেন এবং ঋণ প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান হইতে অর্থ সংগ্রহ করলেন। দশম দিনের সন্ধ্যায়, তিনি সংগ্রহ করেছিলেন ৳১১,৫০,০০০। তার এখনও ৳১,০০,০০০ কম ছিল।

পরবর্তী সময় তিনি সেই দিনগুলোর কথা স্মরণ করে বলেন, “আমার জানা মতন অর্থের প্রতিটি উৎস খুঁজে আমি হতাশ হয়ে পড়ি। তখন রাত হয়ে আসছিল। রাতের আঁধারে আমি নির্জন একটি কক্ষে বসেছিলাম। আমি হাঁটু গেড়ে বসলাম এবং প্রার্থনা করলাম। আল্লাহর কাছে পথের সন্ধান চাইলাম এবং অনুরোধ করলাম যেন আমাকে এমন একজন লোকের সাথে সাক্ষাৎ করিয়ে দেয় যেন তিনি আমাকে এই সময় ৳১,০০,০০০ ধার দেন। আমি নিজেকে বললাম যে আমি এই রাস্তা ধরে এগিয়ে যাব এবং রাস্তা শেষ হওয়ার আগেই আল্লাহ আমাকে আলো দেখাবেন যাতে আমি আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করতে পারি। আমি আল্লাহর কাছে চাইলাম যেন তিনি সেই আলো তৈরী করে দেন এবং আমাকে দেখিয়ে দেন

তখন রাত হয়ে গিয়েছিল। প্রায় সব দোকানই বন্ধ। হাসান রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলছেন। রাস্তার শেষে তিনি দেখতে পেলেন এক ব্যবসায়ীর দোকানে আলো জ্বলছে।

হাসান ভিতরে হেঁটে গেলেন। তিনি ব্যবসায়ীকে দেখলেন এবং বুঝতে পারলেন যে তাকে সাহসী হতে হবে।

“আপনি কি ৳১০,০০০ আয় করতে চান?” হাসান সরাসরি জিজ্ঞেস করলেন।

“জী, অবশ্যই।” ব্যবসায়ী বললেন।

“তাহলে আমাকে ৳১,০০,০০০ এর একটি চেক তৈরী করে দেন এবং আমি যখন আপনাকে ইহা ফেরত দিবো তখন আপনাকে ৳১০,০০০ মুনাফা দিবো।” হাসান আরও বললেন অন্যান্য ব্যবসায়ীদের কথা যারা তাকে অর্থ ধার দিয়েছে এবং তার ব্যবসা সম্বন্ধে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে বললেন।

তারপর হাসান যখন সেই ব্যবসায়ীর দোকান থেকে বের হলেন তার পকেটে ছিল ৳১,০০,০০০ এর একটি চেক। পরবর্তীতে, হাসান কেবল সেই প্রতিষ্ঠানটিই ক্রয় করেনি, তিনি আরও সাতটি প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হয়েছেন, এগুলোর মধ্যে ছিল চারটি প্রসাধনী সামগ্রী প্রতিষ্ঠান, একটি মোজা তৈরীর প্রতিষ্ঠান, একটি ছাপাখানা এবং একটি সংবাদপত্র।

যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয় তার এই সাফল্যের রহস্য কি। তিনি জবাব দেন, বহু বছর পূর্বেকার তার মায়ের উক্তিগুলো দিয়ে।

“আমরা আল্লাহর জন্য দরিদ্র্য নই। আমরা দরিদ্র্য কারণ তোমার বাবা কখনও ধনী হওয়ার একটি আকাঙ্ক্ষা তৈরী করেনি। আমাদের গোষ্ঠীর মধ্যে কেউই কখনই এমন একটি আকাঙ্ক্ষা তৈরী করেনি।”

তিনি বলেন যে, “আমি সর্বদাই জানতাম যে আমি কি চাই কিন্তু আমি ইহা কিভাবে পাব তা জানতাম না। তাই আমি পথ দেখানোর জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইলাম এবং ব্যক্তিগত উন্নয়ন বিষয়ক বইগুলো পাঠ করা আরম্ভ করলাম।” ব্যক্তিগত উন্নয়ন বিষয়ক বাংলা বইগুলো হচ্ছে – (১) নেপোলিয়ন হিলের চিন্তা করুন এবং ধনী হোন, (২) উচ্চাকাঙ্ক্ষার ম্যাজিক এবং (৩) ডেল কার্নেগীর রচনাসমগ্র।

এইভাবে আল্লাহর সাহায্য নিয়ে জীবনে এগিয়ে যান এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করুন।

তথ্য সহযোগিতায়:

১। আল কুরআন

বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৫

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো।

টেকসই উন্নয়নের জন্য বিষয়সূচি ২০৩০।




১। দারিদ্র্যতা নয়।

সব জায়গায় দারিদ্র্যতার প্রকারগুলো দূরীকরণ।

উদ্দেশ্যগুলো


১। ১

২০৩০ পর্যন্ত, সকল লোকজনের জন্য সব জায়গায় দারিদ্র্যতা নির্মূল করা, বর্তমানে যেসব লোকজনকে পরিমাপ করা হয় যারা একদিনে ১০০ টাকার নিচে জীবন যাপন করে।

১। ২

২০৩০ পর্যন্ত, সকল বয়সের পুরুষদের, নারীদের এবং শিশুদের কমপক্ষে অর্ধেক হ্রাস করা যারা দারিদ্র্যতায় জীবন যাপন করে এবং যারা জাতীয় দরিদ্র্য সীমার অধীনে রয়েছে।

১। ৩

জাতীয়ভাবে উপযুক্ত সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা এবং সকলকে জরিপ করা, অতি নিম্নবর্গসহ এবং ২০৩০ পর্যন্ত দরিদ্র্যদের ও অরক্ষিতদের জন্য টেকসই সুরক্ষা অর্জন করা।

১। ৪

২০৩০ পর্যন্ত, নিশ্চিত করা যে সকল পুরুষরা এবং নারীরা, বিশেষ করে দারিদ্র্যতায় এবং অরক্ষিত যারা তারা যেন অর্থ উপার্জনের উপায়গুলোতে সমান অধিকারগুলো পায়, ঠিক তেমনিই যেন অংশ গ্রহণের সুযোগ পায় মৌলিক সেবাগুলোতে, স্বত্বাধিকারে এবং জমির ওপর মালিকানাতে এবং সম্পত্তির অন্যান্য প্রকারগুলোতে, উত্তরাধিকার, প্রাকৃতিক সম্পত্তিগুলো, উপযুক্ত নতুন প্রযুক্তি এবং আর্থিক সেবাগুলোতে, ক্ষুদ্র ঋণসহ।

১। ৫

২০৩০ পর্যন্ত, দরিদ্র্যদের জন্য এবং যারা অরক্ষিত অবস্থাগুলোতে রয়েছে তাদের জন্য স্বাভাবিক অবস্থা তৈরী করা। যারা অরক্ষিত অবস্থাগুলোতে রয়েছে এবং পরিবেশ সংক্রান্ত চরম ঘটনাগুলো, অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত আঘাতগুলো এবং দূর্যোগগুলোতে রয়েছে তাদের অনাবৃত ও অরক্ষিত অবস্থা হ্রাস করা।

১। ক

বিভিন্ন উৎসগুলো হতে সার্থক উপায়গুলোর সংযোজন নিশ্চিত করা, উন্নত নীতিগুলো অন্তর্ভুক্ত করা যাতে পর্যাপ্ত এবং অনুমানযোগ্য উপায়গুলোতে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহযোগিতা করা যায়, বিশেষ করে স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে কার্য সূচিগুলো এবং নীতিগুলো বাস্তবায়ন করা যাতে দারিদ্র্যতার সকল মাত্রাগুলোর সমাপ্তি ঘটে।

১। খ


দেশীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাৎপর্যময় নীতিগুলোর অবকাঠামো সৃষ্টি করা, এগুলোর ভিত্তি হবে দারিদ্র্যতা-পূর্ব এবং লিঙ্গ-সম্বন্ধীয় উন্নত কৌশলগুলোর ভিত্তিতে, যাতে দারিদ্র্যতা মূলোৎপাটনের কাজগুলোতে বিনিয়োগ দ্রুততর হয়।


তথ্যসূত্র - https://sustainabledevelopment.un.org/?menu=1300

মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৫

প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী।



ব্যক্তিগত উন্নয়ন শিক্ষায় আল কুরআন, ৫২ সূরা আত্বতূর, আয়াত – ২১।
“প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী।”

আল্লাহ সরাসরি উল্লেখ করেছেন যে প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ কাজের জন্য দায়ী। একজন পুরুষ যেমন কাজ করবে তেমন ফলাফল লাভ করবে। ইহা কেবলমাত্র পৃথিবীতেই নয় বরং আখিরাতের জন্যও ইহা সত্য।

আমাদের কাজের চারটি ধাপ রয়েছে। চিন্তা করা, তথ্য সংগ্রহ করা, পরিকল্পনা করা এবং কাজ করা। যে পুরুষ একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যের জন্য আকাঙ্ক্ষা করে, চিন্তা করে তিনি সেই লক্ষ্যটি সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করে। এই তথ্যগুলো দিয়ে পরিকল্পনা করে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে কাজ করা, পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা। কারণ একজন পুরুষ যখন পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে এবং ইহা সম্পন্ন করে তখন তিনি সাফল্য বা ব্যর্থতা এই দুইটির যেকোন একটি লাভ করে থাকেন।

আল্লাহ আমাদেরকে জীবনের পথে চলার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান করেছেন। আমরা এগুলো পাঠ করবো, পরিকল্পনা করবো এবং তদানুযায়ী কাজ করবো। তবে আমরা আমাদের কাজে সন্তোষজনক ফলাফল লাভ করবো। ইহা না করলে একজন কেবল আল্লাহ দেয়নি বলে অজুহাত দিলে চলবে কেন?

আল্লাহ আমাদেরকে চিন্তা করার জন্য মন এবং মস্তিষ্ক তৈরী করে দিয়েছেন, কাজ করার জন্য দেহ তৈরী করে দিয়েছেন, এত বড় এবং সুন্দর পৃথিবী দিয়েছেন নিজের জন্য পছন্দ মতন কাজ খুঁজে নেওয়ার জন্য। এমনকি কিভাবে সেই কাজগুলো খুঁজে নেব এবং কিভাবে কাজগুলোতে সাফল্য অর্জন করবো সেই সম্বন্ধেও আল কুরআনে নির্দেশ দিয়েছেন। এখন একজন পুরুষ যদি চিন্তা ব্যতীত, তথ্য সংগ্রহ ব্যতীত, পরিকল্পনা ব্যতীত এবং কাজ ব্যতীত সাফল্য অর্জন করতে চায় এবং অপেক্ষা করতে চায় তাকে কি বলবেন?

আমার এক বন্ধু, তার নাম ইমরান। তিনি আমাকে একবার একটি গল্প শুনিয়েছিলেন। গল্পটি হচ্ছে, একদা একজন পুরুষ বন্যার মধ্যে পানিতে ডুবে যাচ্ছিলেন। তিনি স্বল্প সাঁতার জানতেন। অন্যান্য পুরুষরা তাকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে এলেন তার ডুবন্ত অবস্থা দেখে।

তিনি বললেন, “আল্লাহ আমাকে বাঁচাবেন”।

তিনি কারও সাহায্য নিলেন না।

তারপর পানি আরও বাড়তে লাগলো।

একটি নৌকা এল তাকে ডুবন্ত অবস্থা হতে উদ্ধার করার জন্য।

তিনি বললেন, “আল্লাহ আমাকে বাঁচাবেন”।

এরপর পানি আরও বাড়তে লাগলো। তিনি প্রায় ডুবে যাচ্ছিলেন। এমন সময় একটি হেলিকপ্টার এল তাকে ডুবন্ত অবস্থা হইতে উদ্ধার করার জন্য।

তিনি বললেন, “আল্লাহ আমাকে বাঁচাবেন”।

এরপর হেলিকপ্টার চলে গেল এবং পুরুষটি ডুবে মারা গেল।

মৃত্যুর পর পুরুষটি আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন যে, হে আল্লাহ, আমি বিপদে পড়েছিলাম, পানিতে ডুবে যাচ্ছিলাম অথচ আপনি আমাকে বাঁচালেন না কেন?
জবাব এল, “একটি নৌকা, একটি হেলিকপ্টার এবং অন্যান্য পুরুষদের কে পাঠিয়েছিল?”

এমন পুরুষ সম্বন্ধে কি বলবেন। যার কাছে সাহায্য এল কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করলেন না, তাকে কিভাবে আপনি সাহায্য করবেন?

তাই আপনি এমন পুরুষ হোন যে নিজেকে সাহায্য করে। কারণ যে পুরুষ নিজেকে সাহায্য করে আল্লাহ তাকে সাহায্য করে।

ব্যক্তিগত উন্নয়ন শিক্ষায় আল কুরআন, সূরা আত্বতূর, আয়াত – ২১ এ উল্লেখ আছে, “প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী”। নিজের কাজের দায়িত্ব নিজেই নিন। চিন্তা করুন, তথ্য সংগ্রহ করুন, পরিকল্পনা করুন, কাজ করুন এবং আল্লাহ আপনাকে সাফল্য অর্জনে সাহায্য করবেন। কারণ আল্লাহ অতিশয় দয়ালু। আল্লাহকে সাহায্যকারী রূপে গ্রহণ করুন এবং সাফল্য অর্জন করুন।

তথ্য সহযোগিতায়:

১। আল কুরআন

সোমবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৫

মানুষ শুধু তাই পায় যা সে অর্জন করে।



ব্যক্তিগত উন্নয়ন শিক্ষায় আল কুরআন, ৫২ সূরা আত্বতূর, আয়াত – ২১ এ আল্লাহ বলেছেন,
“প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী।”

ব্যক্তিগত উন্নয়ন শিক্ষায় আল কুরআন, ৫৩ সূরা আননাজম, আয়াত – ৩১, ৩৯ এ আল্লাহ আরও বলেছেন,
আয়াত – ৩১
“যা কিছু আছে আসমানে এবং যা কিছু আছে যমীনে তা সবই আল্লাহর। যাতে তিনি যারা মন্দ কাজ করে তাদেরকে তাদের কাজের প্রতিফল দেন এবং যারা নেক কাজ করে তাদেরকে দেন উত্তম পুরস্কার।”
আয়াত – ৩৯
“এবং মানুষ শুধু তাই পায় যা সে অর্জন করে।”

এবার একটি গল্প বলা যাক যাতে ইহা পরিষ্কার হয়ে ওঠে যে, মানুষ যা পায় তা নির্ভর করে যা সে পূর্বে করে।

এক ছোট্ট ছেলে তার বাবার সাথে পাহাড়ের পাশে হাঁটছিল। হঠাৎ ছেলেটি একটি পাথরের সাথে ধাক্কা খেল এবং পড়ে গিয়ে আঘাত পেল। ব্যাথা পেয়ে বলে উঠলো, “আহ”। ছেলেটিকে অবাক করে দিয়ে পাহাড়ের কোন এক জায়গা থেকে আওয়াজের পুনরাবৃত্তি হলো, “আহ”।

উৎসুক ছেলেটি চিৎকার করে জানতে চাইলো, “কে?”
উত্তর আসলো, “কে?”

ছেলেটি তখন চিৎকার করে বললো, “তুমি খুব ভালো”।
অজানা কণ্ঠে উত্তর আসলো, “তুমি খুব ভালো”।

প্রচণ্ড রেগে গিয়ে ছেলেটি বললো, “কাপুরুষ!”
উত্তর আসলো, “কাপুরুষ!”

ছেলেটি ভয় পেয়ে তার বাবাকে জিজ্ঞেস করলো, “বাবা, এসব কি হচ্ছে?”
স্মিতহাস্যে বাবা বললো, “বাবা, একটু মনোযোগ দিয়ে বোঝার চেষ্টা কর”।

ছেলেটি তখন পাহাড়ের দিকে উদ্দেশ্য করে উচ্চকণ্ঠে বললো, “ঠিক আছে। তুমিই জিতেছ”।
কণ্ঠস্বরের উত্তর, “ঠিক আছে। তুমিই জিতেছ”।

হতভম্ব ছেলেটি তখনও কিছু বুঝতে পারলো না। ফ্যাল ফ্যাল করে বাবার দিকে তাকিয়ে রইলো।
তার বাবা তাকে বোঝালো, “মানুষ ইহাকে প্রতিধ্বনি বলে, কিন্তু আসলে ইহাই হচ্ছে জীবন। তুমি যা বলো কিংবা কর ইহা তোমাকে তাই ফিরিয়ে দেয়। আমাদের জীবনটি হচ্ছে আমাদের কৃতকর্মেরই প্রতিফলন। তুমি যদি বেশি ভালোবাসা চাও, অন্যকে বেশি ভালোবাসা দাও। তুমি যদি অন্যের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা কর, নিজে ভালো হয়ে যাও। আমাদের জীবনের সবকিছুর ক্ষেত্রেই ইহা প্রযোজ্য। তুমি জীবনকে যা দিয়েছ, জীবন তোমাকে ঠিক সেটাই ফিরিয়ে দেবে।”

আমাদের জীবন হচ্ছে আমাদের কর্মের প্রতিফলন। আমাদের কর্মগুলোকে আরও দক্ষতার সাথে করার জন্য আমাদের ব্যক্তিগত উন্নয়ন বিষয়ক পাঠগুলো থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আমরা এই শিক্ষাগুলো থেকে আমাদের সমস্যাগুলো সমাধান করে আরও ভালোভাবে আমাদের কর্মগুলো করার সাহস নিবো এবং আমাদের জীবনে সাফল্য অর্জন করবো।

তথ্য সহযোগিতায়:

১। আল কুরআন।

২। http://sstudentorg.blogspot.com/