মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৫

প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী।



ব্যক্তিগত উন্নয়ন শিক্ষায় আল কুরআন, ৫২ সূরা আত্বতূর, আয়াত – ২১।
“প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী।”

আল্লাহ সরাসরি উল্লেখ করেছেন যে প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ কাজের জন্য দায়ী। একজন পুরুষ যেমন কাজ করবে তেমন ফলাফল লাভ করবে। ইহা কেবলমাত্র পৃথিবীতেই নয় বরং আখিরাতের জন্যও ইহা সত্য।

আমাদের কাজের চারটি ধাপ রয়েছে। চিন্তা করা, তথ্য সংগ্রহ করা, পরিকল্পনা করা এবং কাজ করা। যে পুরুষ একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যের জন্য আকাঙ্ক্ষা করে, চিন্তা করে তিনি সেই লক্ষ্যটি সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করে। এই তথ্যগুলো দিয়ে পরিকল্পনা করে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে কাজ করা, পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা। কারণ একজন পুরুষ যখন পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে এবং ইহা সম্পন্ন করে তখন তিনি সাফল্য বা ব্যর্থতা এই দুইটির যেকোন একটি লাভ করে থাকেন।

আল্লাহ আমাদেরকে জীবনের পথে চলার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান করেছেন। আমরা এগুলো পাঠ করবো, পরিকল্পনা করবো এবং তদানুযায়ী কাজ করবো। তবে আমরা আমাদের কাজে সন্তোষজনক ফলাফল লাভ করবো। ইহা না করলে একজন কেবল আল্লাহ দেয়নি বলে অজুহাত দিলে চলবে কেন?

আল্লাহ আমাদেরকে চিন্তা করার জন্য মন এবং মস্তিষ্ক তৈরী করে দিয়েছেন, কাজ করার জন্য দেহ তৈরী করে দিয়েছেন, এত বড় এবং সুন্দর পৃথিবী দিয়েছেন নিজের জন্য পছন্দ মতন কাজ খুঁজে নেওয়ার জন্য। এমনকি কিভাবে সেই কাজগুলো খুঁজে নেব এবং কিভাবে কাজগুলোতে সাফল্য অর্জন করবো সেই সম্বন্ধেও আল কুরআনে নির্দেশ দিয়েছেন। এখন একজন পুরুষ যদি চিন্তা ব্যতীত, তথ্য সংগ্রহ ব্যতীত, পরিকল্পনা ব্যতীত এবং কাজ ব্যতীত সাফল্য অর্জন করতে চায় এবং অপেক্ষা করতে চায় তাকে কি বলবেন?

আমার এক বন্ধু, তার নাম ইমরান। তিনি আমাকে একবার একটি গল্প শুনিয়েছিলেন। গল্পটি হচ্ছে, একদা একজন পুরুষ বন্যার মধ্যে পানিতে ডুবে যাচ্ছিলেন। তিনি স্বল্প সাঁতার জানতেন। অন্যান্য পুরুষরা তাকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে এলেন তার ডুবন্ত অবস্থা দেখে।

তিনি বললেন, “আল্লাহ আমাকে বাঁচাবেন”।

তিনি কারও সাহায্য নিলেন না।

তারপর পানি আরও বাড়তে লাগলো।

একটি নৌকা এল তাকে ডুবন্ত অবস্থা হতে উদ্ধার করার জন্য।

তিনি বললেন, “আল্লাহ আমাকে বাঁচাবেন”।

এরপর পানি আরও বাড়তে লাগলো। তিনি প্রায় ডুবে যাচ্ছিলেন। এমন সময় একটি হেলিকপ্টার এল তাকে ডুবন্ত অবস্থা হইতে উদ্ধার করার জন্য।

তিনি বললেন, “আল্লাহ আমাকে বাঁচাবেন”।

এরপর হেলিকপ্টার চলে গেল এবং পুরুষটি ডুবে মারা গেল।

মৃত্যুর পর পুরুষটি আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন যে, হে আল্লাহ, আমি বিপদে পড়েছিলাম, পানিতে ডুবে যাচ্ছিলাম অথচ আপনি আমাকে বাঁচালেন না কেন?
জবাব এল, “একটি নৌকা, একটি হেলিকপ্টার এবং অন্যান্য পুরুষদের কে পাঠিয়েছিল?”

এমন পুরুষ সম্বন্ধে কি বলবেন। যার কাছে সাহায্য এল কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করলেন না, তাকে কিভাবে আপনি সাহায্য করবেন?

তাই আপনি এমন পুরুষ হোন যে নিজেকে সাহায্য করে। কারণ যে পুরুষ নিজেকে সাহায্য করে আল্লাহ তাকে সাহায্য করে।

ব্যক্তিগত উন্নয়ন শিক্ষায় আল কুরআন, সূরা আত্বতূর, আয়াত – ২১ এ উল্লেখ আছে, “প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী”। নিজের কাজের দায়িত্ব নিজেই নিন। চিন্তা করুন, তথ্য সংগ্রহ করুন, পরিকল্পনা করুন, কাজ করুন এবং আল্লাহ আপনাকে সাফল্য অর্জনে সাহায্য করবেন। কারণ আল্লাহ অতিশয় দয়ালু। আল্লাহকে সাহায্যকারী রূপে গ্রহণ করুন এবং সাফল্য অর্জন করুন।

তথ্য সহযোগিতায়:

১। আল কুরআন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন