বুধবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২১

প্রতিটি ব্যবসার ৫টি মৌলিক দিক রয়েছে

প্রতিটি ব্যবসার ৫টি অন্যতম দিক (The 5 parts to every business: The personal MBA by Josh Kaufman).

উদ্যোক্তা এবং বাণ্যিজ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ পল ফ্রিট বলেন, ‘ব্যবসা মানে অর্থ তৈরির একটা প্রক্রিয়া তৈরি করা, যে প্রক্রিয়ায় বারবার অর্থ তৈরি হতে থাকবে। এছাড়া বাদ বাকি সবকিছু বলা চলে শখ হিসাবে।’

মোটামুটিভাবে বলা যায়, একটি ব্যবসা হচ্ছে পুনরাবৃত্তিযোগ্য একটি প্রক্রিয়া যা:
১। মূল্যবান কিছু তৈরি করে এবং বিতরণ করে . . .
২। লোকজন চায় বা তাদের প্রয়োজন আছে এমন কিছু . . .
৩। এর বিনিময়ে লোকজন একটা দাম দিতে ইচ্ছুক . . .
৪। পণ্য বা সেবাটা কোন না কোনভাবে গ্রাহকের চাহিদা ও প্রত্যাশা পূরণ করে . . .
৫। ব্যবসা এমন হতে হবে যাতে করে যথেষ্ট মুনাফা নিয়ে আসে, কারণ ব্যবসাকে সার্থকভাবে চালিয়ে নিতে মালিকদের মুনাফার দরকার আছে।

আপনি একটি একক উদ্যোগ বা কোটি টাকার কোম্পানি চালাচ্ছেন কিনা তা বিবেচ্য নয়। এই পাঁচটি বিষয়ের যেকোনো একটিকে দূরে সরালে দেখবে আপনার আর কোন ব্যবসা নেই। আপনি আর যাই করেন, আপনার উদ্যোগ যদি অন্যদের জন্য গুণগত মান তথা ভ্যালু তৈরি না করে তবে ব্যবসা নয়; বরং শখ। এমবিএ পাঠ করার সুবিধা একটা আছে। কিন্তু এখানে আপনি যা কিছু শিখবেন, তা অন্য কোথাও পাবেন না।

একটা উদ্যোগ যদি অন্যদের জন্য গুণগত মান তথা ভ্যালু তৈরি না করে তবে তা ব্যবসা নয়; বরং শখ। একটা উদ্যোগ যদি মানুষের মনোযোগ কাড়তে না পারে তবে তা ফ্লপ তথা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। একটা উদ্যোগ যদি এর গুণগত মান তথা ভ্যালু বিক্রি না করে তবে তা অলাভজনক। একটা উদ্যোগ যদি এর ওয়াদা মতো অঙ্গীকার পূরণ করতে না পারে তবে তা স্ক্যাম তথা প্রতারণা। একটা উদ্যোগ যদি তা পরিচালনার জন্য যথেষ্ট অর্থ তৈরি করতে না পারে তবে তা নির্ঘাত বন্ধ হয়ে যাবে।

প্রতিটি ব্যবসার মূলে রয়েছে এই পাঁচটি বিষয় (এ ব্যাপারে পরে আরও আলোচনা হবে)। এগুলো ঠিক থাকলে পরিবর্তন হওয়ার কি কোন দরকার আছে? আমার তা মনে হয় না। আপনি নিজেই বিচার করে নিন:

১। গুণগত মান তথা ভ্যালু সৃষ্টি: মানুষের কী প্রয়োজন বা তারা কী চায় তা আবিষ্কার করুন, তারপর তা তৈরি করুন।
২। মার্কেটিং: আপনার যা আছে তার জন্য মনোযোগ আকর্ষণ করা দরকার এবং চাহিদা তৈরি করতে হবে।
৩। বিক্রয় তথা সেলস: সম্ভাব্য গ্রাহকদের ক্রয়কারী গ্রাহকে পরিণত করা।
৪। ভ্যালু ডেলিভারি: আপনি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা আপনার গ্রাহকদের দেওয়া এবং
তারা যে সন্তুষ্ট তা নিশ্চিত করা।
৫। অর্থ: আপনার ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যথেষ্ট অর্থ আয় করা এবং আপনার প্রচেষ্টাকে সার্থক বানানো।

আপনার কাছে কি এই পাঁচটি জিনিস শুনতে বেশ সহজসরল বলে মনে হচ্ছে? আসলে এগুলো তাই। ব্যবসা মানে কোন রকেট বিজ্ঞান নয় যে অতি জটিল কিছু। ব্যবসা মানে একটা সমস্যা চিহ্নিত করা, একে সমাধান করতে একটি উপায় বের করা এবং একটি সিস্টেম তথা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাধানকে লোকজনের কাছে পৌঁছে দেওয়া, যাতে করে উভয় পক্ষ উপকৃত হতে পারে। বিজনেস ট্রেনিং এর ওপর বেস্টসেলিং বই জশ কফম্যান রচিত দ্য পারসোনাল এমবিএ বইয়ে লেখক এ কথাই বলেছেন। এছাড়া, যেকেউ আপনাকে ব্যবসা শব্দের মাধ্যমে ব্যাপারটাকে জটিল করে তোলার চেষ্টা করে, বুঝবেন এটা হয় আপনাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে অথবা আপনার প্রয়োজন নেই এমন কিছু বিক্রি করার চেষ্টা করছে।

এ বিষয়গুলোই হচ্ছে প্রতিটি ব্যবসার ৫টি মৌলিক দিক। আপনি যেকোন ব্যবসায়িক আইডিয়া, উদ্যোগ বা ব্যবসায়িক পরিকল্পনার সফলতাও এই ৫টি মৌলিক দিক দিয়ে পরিমাপ করে ফেলতে পারবেন। আপনি যদি এই ৫টি মৌলিক দিক সম্পর্কে পরিষ্কারভাবে ধারণা রাখতে পারেন, তবে যেকোন ব্যবসা কীভাবে কাজ করে সেই সম্পর্কে আপনি খুব সহজভাবেই অবহিত হয়ে যাবেন। আপনি যদি একটি নতুন ব্যবসা শুরু করার বিষয়ে চিন্তা করে থাকে, তবে এই ৫টি মৌলিক দিক বা প্রক্রিয়া দেখতে কেমন হতে পারে তা পরিকল্পনা করাই আপনার জন্য সর্বপ্রথম এবং সর্বোত্তম কাজ হবে। আর আপনি যদি আপনার ব্যবসার আইডিয়া এই ৫টি মৌলিক দিক থেকে বর্ণনা বা চিত্রিত করতে না পারেন, তবে আমি বলব আপনি এখনো ব্যবসার মৌলিক দিকগুলো কাজে লাগানোর ব্যাপারে যথেষ্ট ভালোভাবে বুঝতে পারেননি। আপনি আরও একবার ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তা করে দেখতে পারেন।

তথ্যসূত্র:

দ্য পারসোনাল এমবিএ বই অনুসারে

জনগণের খোঁয়াড়-দক্ষিণ আমেরিকার এক চমকপ্রদ গল্প

এল কোরালিটো (El Corralito) তথা জনগণের খোঁয়াড়

২০০১ সালের শেষের দিকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনা এক অর্থনৈতিক সংকটের কবলে পড়েছিল। টানা তিন বছর ধরে আয় কমছে, বেকারত্ব বাড়ছে এবং দেশটি বিশাল এক আন্তর্জাতিক ঋণ জড়ো করছিল। এই পরিস্থিতির পেছনে কারণ ছিল ১৯৮৯ সালে কার্লোস মেনেম গঠিত সরকারের নেওয়া কিছু নীতি। তারা মূলত এসব নীতি গ্রহণ করে দেশের অত্যধিক মুদ্রাস্ফীতি রোধ এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কিছু সময়ের জন্য তারা সফলও হয়েছিল।

১৯৯১ সালে মেনেম আর্জেন্টাইন মুদ্রা পেসোকে মার্কিন ডলারের সাথে সংযুক্ত করেন। এক আইন অনুসারে এক আর্জেন্টাইন মুদ্রা পেসো ছিল এক ডলারের সমান। বিনিময় হারে কোন পরিবর্তন ছিল না। এখানেই গল্পের শেষ। সরকার যে এই আইনকে প্রতিষ্ঠা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তা জনগণকে বোঝানোর জন্য তারা জনগণকে ইউএস ডলারে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে প্ররোচিত করে। এরপর সব জায়গায় ডলার ব্যবহার করা যেত। রাজধানী বুয়েনস আইরেসের যেকোন দোকানে এবং শহরজুড়ে ছড়িয়ে থাকা এটিএম মেশিন থেকেও নগদ ডলার বের করা যেত। একটা সময় পর্যন্ত এই নীতি দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করেছে। কিন্তু এতে একটা বড় ধরনের ঘাটতি ছিল। এটা আর্জেন্টিনার রপ্তানিকে অত্যন্ত ব্যয়বহুল করে তোলে এবং বিদেশী আমদানিকে অত্যন্ত সস্তা করে তোলে। এতে করে রপ্তানি থমকে দাঁড়ায় এবং আমদানি হঠাৎ প্রচণ্ড মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। [আর একটি দেশের জন্য আপনি যখন রপ্তানি করে আয় করতে পারছেন না, কিন্তু আমদানি করে প্রচুর ব্যয় করছেন, তখন অর্থ যোগাড় করার একটাই উপায় থাকে। তা হচ্ছে ঋণ নেওয়া।] তাদের জন্য অর্থ সংগ্রহের একমাত্র উপায় ছিল ঋণ নেওয়া। এটা ছিল একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি। জনগণ যত বেশি  আর্জেন্টাইন মুদ্রা পেসোর ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হতে লাগল, পেসোর স্থিতিশীলতা ততই কমতে লাগল এবং মানুষজন বেশি বেশি করে তাদের ব্যাংক একাউন্টে ডলার জমাতে লাগল। আর যাই হোক, সরকার যদি আইনটা ছিঁড়ে ফেলে এবং পেসোর মান কমিয়ে দেয়, তবে ব্যাংকের ডলার মান তো ঠিকই থাকবে। তাই না? জনগণ পেসোর ব্যাপারে দুশ্চিন্তায় ছিল এটা সত্য, তবে তারা ডলারের ব্যাপারে অতি আশাবাদী ছিল, তাও সত্য।


২০০১ সালের ১ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার সরকার সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে ফেলে। প্রাথমিকভাবে এটা ছিল নব্বই দিনের জন্য। শুধু একটা ছোট পরিমাণ নগদ অর্থ উত্তোলনের জন্য অনুমোদিত ছিল। তাও আবার সপ্তাহে একবার করে। প্রথমে এটার পরিমাণ ছিল ২৫০ পেসো। তখন পর্যন্ত ২৫০ পেসো ছিল ২৫০ ডলারের সমান। তারপর হলো ৩০০ পেসো। কিন্তু এটি শুধু পেসো থেকে উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কাউকে তাদের ডলার একাউন্ট থেকে ডলার উঠানোর অনুমোদন দেওয়া হয়নি। যদি না তারা ডলারকে পেসোতে রূপান্তর করতে রাজি হয়, তাহলে পেসোও উঠাতে পারবে না। কেউ তা করতে চায়নি। আর্জেন্টাইনরা এই পরিস্থিতিকে নাম দিয়েছে এল কোরালিটো বলে, "দ্য লিটল কোরাল": আমানতকারীদের গরুর মতো একটি খোঁয়াড়ে আটকানো হয়েছিল-কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। অবশেষে জানুয়ারি মাসে মুদ্রার অবমূল্যায়ন কার্যকর করা হয় এবং এক ডলারের জন্য এক পেসোর মান পরিবর্তন করা হয়। এতে ছিল এক ডলার সমান চার পেসো। যারা মনে করেছিল তাদের সঞ্চয় ডলারে রেখেছে, এতে সরকার কী করতে পারবে তাদের জন্য এটা একটা ভালো উদাহরণ। সরকার এখানেই থেমে যায়নি। এরপর সরকার জোরপূর্বক ব্যাংকের সব ডলার পেসোতে রূপান্তর করে ফেলে। কিন্তু পূর্বের বিনিময় হারে। এক ডলারের বিপরীতে এক পেসো। তারপর ব্যাংকের একাউন্টধারীদের দেয় চার পেসোর বিপরীতে এক ডলার। অর্থাৎ কেউ যদি ব্যাংকে ১ হাজার ডলার জমা রাখে। হঠাৎ সে একাউন্টে দেখবে মাত্র ২৫০ ডলার আছে। এভাবে সরকার জনগণের তিন-চতুর্থাংশ অর্থই আত্মসাৎ করেছে।


অর্থনীতিবিদদের জন্য, আর্জেন্টিনা একটি বিভ্রান্তিকর দেশ। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ সাইমন কুজনেটস (Simon Kuznets) এ সম্পর্কে এক বিখ্যাত মন্তব্য করেছিলেন যে বিশ্বে চার ধরনের দেশ আছে: উন্নত, অনুন্নত, জাপান এবং আর্জেন্টিনা। কুজনেটস এমনটা চিন্তা করেছিলেন কারণ তিনি বিবেচনায় নিয়েছিলেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কার আর্জেন্টিনাকে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় আর্জেন্টিনা ছিল বিশ্বে ধনী দেশগুলোর একটি। এরপর এটা অন্যান্য ধনী দেশ, পশ্চিম ও উত্তর আমেরিকার তুলনায় ক্রমাগত পিছিয়ে পড়তে থাকে। ১৯৭০ এবং ৮০ এর দশকে তো এই পতন স্পষ্ট হয়ে দেখা দেয়। যেকেউ যখন এই পতনকে ইনক্লুসিভ এবং এক্সট্রাক্টিভ ইনস্টিটিউশনের দৃষ্টিতে দেখবে তার কাছে এই পতন স্পষ্ট হয়ে দেখা দিবে। [ইনক্লুসিভ ইনস্টিটিউশন তথা জনগণের অংশগ্রহণমূলক বা অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান এবং এক্সট্রাক্টিভ ইনস্টিটিউশন তথা শোষণমূলক প্রতিষ্ঠান]।


এটা সত্য যে ১৯১৪ সালের আগে আর্জেন্টিনা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রায় পঞ্চাশ বছরের ফলাফল লাভ করেছিল। কিন্তু এটা ছিল এক্সট্রাক্টিভ ইনস্টিটিউশন তথা শোষণমূলক প্রতিষ্ঠানের অধীনে থাকা প্রবৃদ্ধির উদাহরণ। আর্জেন্টিনা তখন অল্প কিছু অভিজাত দ্বারা শাসিত হচ্ছিল। তাদের সর্বোচ্চ বিনিয়োগ ছিল কৃষি পণ্য রপ্তানির দিকে। তখন সারা বিশ্বেই এক ধরনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল। বিশ্বের সেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মাঝে আর্জেন্টিনা গরুর মাংস, চামড়া এবং শস্য রপ্তানি করে। আর তা রপ্তানি করে বিশ্ববাজারের দামে। এতে করে অন্য সব এক্সট্রাক্টিভ ইনস্টিটিউশন তথা শোষণমূলক প্রতিষ্ঠানের মতোই প্রচুর টাকা দেশে আসে। আসলে বলা উচিত, প্রচুর টাকা দেশের অল্প কিছু অভিজাত মানুষের হাতে আসে। এক্ষেত্রে ছিল না কোন সৃজনশীল ধ্বংস (creative destruction) এবং উদ্ভাবন (innovation)। আর এটা টেকসইও ছিল না। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সশস্ত্র আন্দোলনের মধ্যে আর্জেন্টিনার অভিজাতরা দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে আরও বিস্তৃত এবং প্রসারিত করতে পারত, কিন্তু এই পরিসরকে তারা হয়তো নিয়ন্ত্রণ করতে পারত না। তাই তারা এ ব্যাপারে কিছুই করেনি। অবশেষে ১৯৩০ সালে এলো প্রথম সামরিক অভ্যুত্থান। তখন থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত স্বৈরাচার ও গণতন্ত্রের মধ্যে দোদুল্যমান এবং বিভিন্ন এক্সট্রাক্টিভ ইনস্টিটিউশন তথা শোষণমূলক প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও দোদুল্যমান অবস্থা বিরাজমান। দেশের অভ্যন্তরে সেনাবাহিনীর শাসনের ফলে গণ-নিপীড়ন চলছিল। কেবল ১৯৭০ এর দশকেই প্রায় ৯ হাজার লোক, হয়তো আর বেশি লোককে বেআইনীভাবে মেরে ফেলা হয়। হাজার হাজার লোককে জেলে দেওয়া হয় এবং নির্যাতন করা হয়।


বেসামরিক শাসনের সময়ে নির্বাচন হতো। তা ছিল এক ধরনের গণতন্ত্রের মতোই। কিন্তু সেই রাজনৈতিক সিস্টেম ইনক্লুসিভ ইনস্টিটিউশন তথা জনগণের অংশগ্রহণমূলক বা অন্তর্ভুক্তিমূলক সিস্টেম থেকে বহু দূরের কথা। ১৯৪০ সাল থেকে জুয়ান পেরন এর কাল শুরু হয়। তিনি যেই রাজনৈতিক দল তৈরি করেন, সেই রাজনৈতিক দলই আর্জেন্টিনার কর্তৃত্বশালী রাজনৈতিক দল হিসাবে আর্বিভূত হয়। তার রাজনৈতিক দল পার্টিডো জাস্টিশিয়ালিস্টাকে (Partido Justicialista) সাধারণত পেরনের পার্টিই (Perónist Party) বলা হত। নির্বাচনের পর পেরনিস্টরা বিপুল ভোটে জয় লাভ করে। অবশ্য এর জন্য ধন্যবাদ দিতে হয় রাজনৈতিক কূটকৌশলকে। টাকা দিয়ে ভোট কেনা, পৃষ্ঠপোষকতা বিতরণ করা মানে বিভিন্ন সরকারি খাস জমি কাকে কাকে দিবে তা নিয়ে আগেই নির্বাচন করে দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া এবং দুর্নীতি করা। আবার সরকারি কন্ট্রাক্ট এবং চাকরি দেওয়ার নাম করেও রাজনৈতিক সমর্থন আদায় করে নেয়। দেখতে গেলে এটাকেও এক ধরনের গণতন্ত্র বলা যায়। কিন্তু একে বহুত্ববাদী (pluralistic) রাজনীতি তথা জনগণের অংশগ্রহণমূলক বা অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বলা যায় না। দেশের রাজনীতির পুরো শক্তি পেরনের পার্টির মধ্যেই কেন্দ্রীভূত হতে থাকে। এতে করে দলটি খুব কমই বাধার সম্মুখীন হয়েছে। যা খুশি করতে পেরেছে। কিন্তু এমন অবস্থা থাকার কারণে পরবর্তীতে সামরিক বাহিনী খুব সহজেই এটাকে ক্ষমতা থেকে নিক্ষেপ করতে পেরেছে। কোন একটি রাজনৈতিক দলের নিরুঙ্কুশ ক্ষমতা থাকলে তা কী করে সেই সম্পর্কে আরও পড়ুন হোয়াই নেশনস ফেইল  ইংরেজি বইয়ের পৃষ্ঠা ৩২৯-৩৩২। যদি দেশের সর্বোচ্চ আদালত তথা সুপ্রিম কোর্টও সরকারের কোন নীতিকে চ্যালেঞ্জ জানায়, তবে তো সুপ্রিম কোর্টেরও খবর আছে।


১৯৪০ সালে পেরন আর্জেন্টিনার শ্রমিক আন্দোলনকে তার রাজনৈতিক ভিত্তি হিসাবে গড়ে তোলেন। যখন এটা ১৯৭০ এবং ৮০ এর দশকে সামরিক দমন-নিপীড়নের মুখে পড়ে দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন তার দল গতিপথ পরিবর্তন করে। তার দল ভোট কেনা আরম্ভ করে। অর্থনৈতিক নীতি এবং প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণকে আয়ের ব্যবস্থা করে দেয়। এগুলো তো রাজনীতির ক্ষেত্রে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে না। মূলত অর্থনৈতিক নীতি এবং প্রতিষ্ঠানগুলো আসেই তো রাজনৈতিক নীতি এবং প্রতিষ্ঠান থেকে। যাই হোক, ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন কার্লোস সাউল মেনেম আকিল (২ জুলাই ১৯৩০ - ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১)। তিনি ছিলেন আর্জেন্টিনার একজন আইনজীবী এবং রাজনীতিবিদ। রাষ্ট্রপতি মেনেম যখন পুনরায় নির্বাচনে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে বাধা পান, তখন তিনি বিদ্যমান নীতিকে বদলাতে কেবল সংবিধান সংশোধন করে ফেললেই হয়। এমন সংখ্যাগরিষ্ঠতাও তাদের দলের ছিল। এল কোরালিটো পরিস্থিতি থেকে আমরা দেখেছি, যদিও আর্জেন্টিনায় নির্বাচন হতো এবং জনপ্রিয় নির্বাচিত রাজনৈতিক দলই ক্ষমতায় যেত, সরকার কিন্তু সম্পত্তি আইন (property rights) পুনরায় লিখতে পারত এবং নিজের দেশের জনগণকে সম্পত্তি থেকে যখন তখন দখলচ্যুত করতে পারত। আর এতে করে সরকারের কোন শাস্তিও হবে না। কারণ এজন্য সরকার শাস্তি থেকে মুক্তি পেতেও দায়মুক্তি আইন পাস করিয়ে নিতে পারে এবং করেছেও। এতে করে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপতি এবং রাজনৈতিক এলিটদের ওপর সামান্যতম চেক (check ) থাকে না। আর সেখানে নিশ্চিতভাবে নেই কোন বহুত্ববাদী (pluralistic) রাজনীতি তথা জনগণের অংশগ্রহণমূলক বা অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি।

নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ সাইমন কুজনেটস (Simon Kuznets) আর্জেন্টিনার ব্যাপারে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়েছেন তা সন্দেহ নেই। অন্য যারাই বুয়েনস আইরেসে গিয়েছেন, তারাই দেখেছেন এ শহরটি পেরুর রাজধানী লিমা, গুয়াতেমালার প্রজাতন্ত্রের রাজধানী গুয়াতেমালা থেকে আলাদা। এমনকি মেক্সিকো সিটি থেকেও আলাদা। আপনি এখানে কোন আদিবাসীদের দেখবেন না এবং আপনি এখানে কোন প্রাক্তন দাসদের বংশধরদেরও দেখতে পাবেন না। বেশিরভাগ সময় আপনি দেখবেন বেল যুগের (১৮৫২ খেকে ১৮৭০ পর্যন্ত সময়কালকে Belle Epoch তথা বেল যুগ বলা হয়) গৌরবময় স্থাপত্য এবং ভবনগুলো। এই বছরগুলো ছিল মূলত এক্সট্রাক্টিভ ইনস্টিটিউশন তথা শোষণমূলক প্রতিষ্ঠানের অধীনে অগ্রগতির সময়কাল। কিন্তু বুয়েনস আইরেসে আপনি শুধু আর্জেন্টিনার একটি অংশই দেখবেন। [যেমন ঢাকা বাংলাদেশের একটি অংশ মাত্র, পুরো বাংলাদেশের চিত্র ঢাকার মতো নয়।] উদাহরণস্বরূপ, মেনেম বুয়েনস আইরেসের বাসিন্দা নন। তিনি লা রিওজা (La Rioja) প্রদেশের অ্যানিলাকোতে (Anillaco) জন্মগ্রহণ করেন। যা ছিল বুয়েনস আইরেস থেকে উত্তর-পশ্চিমে, অনেক দূরে পাহাড়ে এবং তিনি তিন দফা সময়কাল পর্যন্ত উক্ত প্রদেশের গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। স্প্যানিশদের দ্বারা আমেরিকা আবিষ্কারের সময় আর্জেন্টিনার এই অঞ্চলটি ছিল ইনকা সাম্রাজ্যের একটি বহির্মুখী অংশ এবং এখানে আদিবাসীদের ঘনবসতি ছিল (বিস্তারিত দেখুন হোয়াই নেশনস ফেইল  ইংরেজি বইয়ের পৃষ্ঠা ১৭, মানচিত্র ১)। স্প্যানিশরা এখানে এনকোমিয়েন্ডা (encomiendas) তৈরি করেছিল।


সামনে যাওয়ার আগে, এনকোমিয়েন্ডা সম্পর্কে একটু বলে নেওয়া ভালো। এনকোমিয়েন্ডা (encomienda) ছিল একটি স্প্যানিশ শ্রম ব্যবস্থা যা অ-খ্রিস্টান জনগণের শ্রম দিয়ে বিজয়ী খ্রিস্টান সেনাপতি বা কর্মচারীদের পুরস্কৃত করে। স্প্যানিশ রাজা যখন অ-খ্রিস্টান জনগণের ওপর বিজয় লাভ করে, তখন পরাজিত জনগণ বিজয়ী রাজার জন্য শ্রম দিবে। এভাবেই রাজা শ্রমের ফসল ঘরে তুলবে। ক্যাথলিক ধর্মে এটা একটি প্রধান সুবিধা হয়ে দাঁড়ায়। এনকোমিয়েন্ডা প্রথমে স্পেনেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যখন তারা মুরিশ অঞ্চল (খ্রিস্টানদের কাছে রিকনকুইস্তা - Reconquista নামে পরিচিত) জয় করে। মুর এবং মুরিশ হাসানিয়া আরবি ভাষা কথা বলা একটি নির্দিষ্ট জাতিগোষ্ঠীকে বোঝাত। তারা মৌরিতানিয়া এবং আলজেরিয়া, পশ্চিম সাহারা, তিউনিসিয়া, মরক্কো, নাইজার এবং মালির কিছু অংশে বসবাস করত। পরে এটা আমেরিকা এবং স্প্যানিশ ফিলিপাইনের স্প্যানিশ উপনিবেশের সময় অনেক বড় পরিসরে প্রয়োগ করা হয়েছিল। পরাজিত জনগণ স্প্যানিশ রাজার দাস হিসাবে বিবেচিত হত। রাজা সরকারি অনুদান হিসাবে কোন একজন বিশেষ ব্যক্তিকে এনকোমিয়েন্ডা (encomienda) স্বরূপ উক্ত জায়গা এবং জনগণের শ্রম ভোগদখল করার সুযোগ দিতেন। ষোড়শ শতাব্দীর সময়, স্পেনের সাম্রাজ্য বিস্তারের সময় এই অনুদানগুলোকে আদিবাসীদের শ্রমের উপর একচেটিয়া অধিকার বলে মনে করা হত। যারা এই অনুদান পেতেন তারা এনকোমেন্ডেরো নামে পরিচিত ছিল এবং তাদের বংশধররা এই সুবিধা চিরস্থায়ীভাবে লাভ করে।


স্প্যানিশরা আর্জেন্টিনায় অত্যন্ত শোষণমূলক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে যাতে করে উত্তর দিকে পোটোসির খনি শ্রমিকদের জন্য খাবার ও খচ্চর উৎপাদন করা যায়। প্রকৃতপক্ষে লা রিওজা বুয়েনস আইরেসের মতো ছিল না। লা রিওজা ছিল পেরু এবং বলিভিয়ার পোটোসি অঞ্চলের মতো। উনবিংশ শতাব্দীতে, লা রিওজা বিখ্যাত যুদ্ধবাজ ব্যক্তি ফাকুন্ডো কুইরোগার মতো ব্যক্তিকে গড়ে তুলেছে। যিনি এ অঞ্চলকে অন্যায় এবং নীতিহীনভাবে শাসন করেন। এক সময় তিনি বুয়েনস আইরেস দখলের জন্য সেনাবাহিনী নিয়ে অগ্রসর হন। 


আর্জেন্টিনার রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বিকাশের গল্প হচ্ছে কীভাবে অভ্যন্তরীণ প্রদেশগুলো যেমন লা রিওজা বুয়েনস আইরেসের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। এ চুক্তিগুলো ছিল মূলত যুদ্ধবিগ্রহের চুক্তি। এগুলো ছিল সাময়িক যুদ্ধবিরতির চুক্তি। লা রিওজার যুদ্ধবাজরা বুয়েনস আইরেসকে টাকা আয় করার সুযোগ দিল। আর শর্ত ছিল বছর বছর তারা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ লা রিওজার যুদ্ধবাজদের কাছে পাঠাবে। এর ফলে বুয়েনস আইরেসের অভিজাতরা প্রদেশের অভ্যন্তরে যে প্রতিষ্ঠান গড়বে এবং জনগণের জন্য সংস্কারমূলক কাজ করবে তা ছেড়ে দিল। চুক্তি অনুযায়ী, অভিজাতদের কেবল টাকা দরকার এবং পার্শ্ববর্তী যুদ্ধবাজদের সেই অর্থের কিছু অংশ দিয়ে টিকে থাকার প্রয়োজন রইল।

প্রথমে আর্জেন্টিনাকে দেখলে পেরু বা বলিভিয়ার মতোই একটা আলাদা দুনিয়া বলে মনে হয়। কিন্তু বুয়েনস আইরেসের বিস্তৃত সড়ক (the elegant boulevards of Buenos Aires) বাদ দিলে এটা পেরু বা বলিভিয়ার চেয়ে আলাদা কিছু নয়। যুদ্ধ থেকে বাঁচার জন্য অভিজাতরা আত্মরক্ষার যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পন্থা অবলম্বন করলো তা আর্জেন্টিনার প্রতিষ্ঠানগুলোর ধমনী তৈরি করে দিয়েছে, যে পথ দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হয়। এ থেকেই বোঝা যায় আর্জেন্টিনা কেন লাতিন আমেরিকার অন্যান্য এক্সট্রাক্টিভ তথা শোষণমূলক দেশগুলোর মতো আচরণ করে। লাতিন আমেরিকার অন্যান্য এক্সট্রাক্টিভ দেশগুলো প্রতিষ্ঠানের মতো আর্জেন্টিনায়ও এমন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

লাতিন আমেরিকার দেশসমূহ: লাতিন আমেরিকায় দেশ আছে ২০টি। আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, ব্রাজিল, চিলি, কলম্বিয়া, পেরু সহ অন্যান্য দেশ।


কেবল নির্বাচন হলেই যে ইনক্লুসিভ রাজনৈতিক সিস্টেম তথা জনগণের অংশগ্রহণমূলক বা অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা তৈরি হয়ে যাবে তা নয়। এটা আমরা লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশের নির্বাচন দেখেই বুঝতে পারছি। কলম্বিয়াতে আধা সামরিক বাহিনী জাতীয় নির্বাচনের এক-তৃতীয়াংশ ঠিক করতে পারে। ভেনেজুয়েলায় যেমন গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার হুগো শ্যাভেজ তার বিরোধীদের আক্রমণ করে, সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করে, সংবাদ পছন্দ না হলে সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয় এবং ভিন্ন রাজনৈতিক মতাবলম্বীদের সহায়-সম্পত্তি দখন করে, ঠিক তেমন আর্জেন্টিনাতেও চলছে। আজকে হুগো শ্যাভেজ যা যা করতে পারে, ১৭২০ সালে স্যার রবার্ট ওয়ালপোল ব্রিটিনে ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও তা করতে পারত না। কারণ স্যার রবার্ট ওয়ালপোল আইনকানুনের কাছে অনেকভাবে বাঁধা ছিল, জবাবদিহিতা করতে হতো। কিন্তু শ্যাভেজকে তা করতে হয় না। ১৭২০ সালে ব্রিটেনের স্যার রবার্ট ওয়ালপোল ব্ল্যাক এক্ট তথা কালো আইন দ্বারা (পৃষ্ঠা ৩০২-৩০৮) জন হান্ট্রিজকে ততটা ক্ষতির মুখোমুখি দাঁড় করাতে পারেননি যতটা আজকে ভেনেজুয়েলা বা আর্জেন্টিনায় নানা ধরনের আইনকানুন দিয়ে বিরোধী পক্ষকে দমন করা হচ্ছে। জনগণ যখন এসব আইনকানুন এবং এর প্রয়োগ দেখেও বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন করে এসব আইনকানুনকে বাধা দিতে পারে না বা বাধা দেয় না, তখন এক সময় না এক সময় ক্ষমতাসীন সরকার ঠিক একই আইনকানুন দিয়ে জনগণকে দমনপীড়ন করে। কেউই রাজনৈতিক বলয়ের বাইরে নয়। আজকে আমার সামনে আরেকজনকে নির্যাতন করছে। আগামীদিন আমাকে নির্যাতন করবে।


যদিও লাতিন আমেরিকায় গণতন্ত্রের উদয় হচ্ছে নীতিগতভাবে

অভিজাত শাসনের বিরোধী, এবং অলঙ্কৃত ও কর্মে এটি চেষ্টা করে

অন্তত একটি অংশ থেকে দূরে অধিকার এবং সুযোগ পুনর্বন্টন

অভিজাতদের মধ্যে, এর শিকড় দৃঢ়ভাবে দুটি নিষ্কাশন শাসনের উপর ভিত্তি করে

ইন্দ্রিয় প্রথমত, নিষ্কাশনমূলক শাসনব্যবস্থার অধীনে বহু শতাব্দী ধরে বিদ্যমান বৈষম্যগুলি নতুন উদীয়মান গণতন্ত্রের ভোটারদের পক্ষে ভোট দেয়

চরম নীতির সাথে রাজনীতিবিদরা। আর্জেন্টাইনরা যে ঠিক তা নয়

নির্বোধ এবং মনে করেন যে জুয়ান পেরন বা আরও সাম্প্রতিক পেরোনিস্ট রাজনীতিবিদ যেমন মেনেম বা কির্চনাররা নিঃস্বার্থ এবং খুঁজছেন

তাদের স্বার্থ, অথবা ভেনেজুয়েলানরা তাদের পরিত্রাণ দেখতে পায় চাভেজের মধ্যে। পরিবর্তে, অনেক আর্জেন্টাইন এবং ভেনিজুয়েলানরা অন্য সকলকে স্বীকৃতি দেয়

রাজনীতিবিদ ও দলগুলো এতদিন তাদের আওয়াজ দিতে ব্যর্থ হয়েছে

তাদের সবচেয়ে মৌলিক জনসেবা প্রদান করে, যেমন রাস্তা এবং

শিক্ষা, এবং স্থানীয় অভিজাতদের শোষণ থেকে তাদের রক্ষা করা। তাই

অনেক ভেনিজুয়েলা আজকে চাভেজ যে নীতি গ্রহণ করছে তাকে সমর্থন করে

এমনকি যদি এই একই ভাবে দুর্নীতি এবং অপচয় সঙ্গে আসে

1940 এবং 1970 এর দশকে অনেক আর্জেন্টাইন পেরনের নীতি সমর্থন করেছিল।

দ্বিতীয়ত, এটি আবার অন্তর্নিহিত নিষ্কাশন প্রতিষ্ঠানগুলি তৈরি করে

রাজনীতি এত আকর্ষণীয়, এবং তাই পক্ষপাতদুষ্ট, যেমন শক্তিশালীদের পক্ষে

পেরোন এবং শ্যাভেজ, একটি কার্যকর পার্টি সিস্টেম উৎপাদনের পরিবর্তে

সামাজিকভাবে পছন্দসই বিকল্প। পেরন, শ্যাভেজ এবং আরও কয়েক ডজন

লাতিন আমেরিকার শক্তিশালী ব্যক্তিরা হল অলিগার্কির লৌহ আইনের আরেকটি দিক, এবং নাম থেকেই বোঝা যায়, এই লৌহ আইনের শিকড় রয়েছে

অন্তর্নিহিত অভিজাত-নিয়ন্ত্রিত শাসনব্যবস্থা।




তথ্যসূত্র:

হোয়াই নেশনস ফেইল, ৩৮৩ পৃষ্ঠা

https://en.wikipedia.org/wiki/Encomienda

https://en.wikipedia.org/wiki/Moors

https://bn.wikipedia.org/wiki/লাতিন_আমেরিকা


শুক্রবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২১

এমবিএ পাঠ করার সুবিধা একটা আছে


নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ক্লে শার্কি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানগুলো যেসব সমস্যার সমাধান করে, তারা চেষ্টা করে সেসব সমস্যাকে জিইয়ে রাখতে।’ তিনি এ বিষয়ক একটি বইও লিখেন। বইয়ের শিরোনাম: Cognitive Surplus: How technology makes consumers into collaborators by Clay Shirky. বাংলায় অর্থ করলে বইয়ের শিরোনাম এমন দাঁড়ায় যে মূল নির্যাস: কীভাবে প্রযুক্তি গ্রাহকদের সহযোগীতে পরিণত করছে।

বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এমবিএ পাঠ করার সুবিধা একটা আছে। আর তা হচ্ছে সেখান থেকে ফরচুন ৫০ কোম্পানিগুলো কর্মী সংগ্রহ করে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান, বিশাল বড় একাউন্টিং ফার্ম, ব্যাংক এবং বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত থাকে। 

আসলে বড় বড় কোম্পানির ম্যানেজারদের এত সময় কোথায় শত শত লোকজন থেকে বাছাই করে তাদের কোম্পানির জন্য কর্মী নিয়োগ করবে। তারচেয়ে বরং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যেহেতু আগ্রহী এবং মেধাবী এমবিএ শিক্ষার্থীদেরকে বাছাই করে নেয়, সেখান থেকে তাদের প্রয়োজনীয় কর্মী খুঁজে নেওয়া সহজ।

আর তাছাড়া এমবিএ প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়াটাও তো বিশাল ঝামেলার বিষয়। তার ওপর লাখ টাকা টিউশন ফি তো আছেই। এসব টিউশন ফি দেওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের ঋণও দেওয়া হয়। আমেরিকায় একটি মধ্যম মানের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করতেও দেড় লাখ ডলার খরচ হয়। বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। এমবিএ করার ব্যাপারটা এখন ইউরোপে ব্যবসায়িক অবস্থান থেকে তুঙ্গে। পরিবর্তন হওয়ার কি কোন দরকার আছে? অবশ্য এ টাকাটা যেকোন শিক্ষার্থী যেকোন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়েও করতে পারে। এতে করে এই ঋণ তাকে পরবর্তী জীবনে কাজ করে, চাকরি করে পরিশোধ করতে হবে। তাই বলা যায়, এটা একটা ট্র্যাক বা পথ। যেই পথে একবার ঢুকলে বাকিটা গড় গড় করে বলে দেওয়া যায়। আর এখান থেকে হুট করে বের হওয়াটাও বেশ মুশকিল। আপনি এমবিএ করার জন্য ঋণ নিলেন। তারপর এমবিএ শেষ করে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিলেন, যেখানে বেতন বছরে ৮৫ লাখ টাকা। সেখান ৪-৫ বছর চাকরি করার পর হয়তো আপনি আপনার খরচ মিটিয়ে ঋণ শোধ করতে পারলেন। আর কোম্পানিতে ৪-৫ বছর কাজ করার পর, অভিজ্ঞতার পর, পরবর্তী পদোন্নতির জন্য লোকজন দেখবে আপনি এই ৪-৫ বছরে কী করেছেন। তখন আর কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছেন, পড়ালেখা করেছেন তা দেখে পদোন্নতি দেওয়া হয় না। আর এই ৪-৫ বছরে সপ্তাহে ৮০ ঘণ্টারও ওপর কাজ করতে হয়। কাজের প্রচুর চাপ থাকে। তাই এ ধরনের এমবিএ কোর্সে ভর্তি হতে গেলে সতর্ক থাকতে হয়। কারণ আপনি একবার এই ট্র্যাকে প্রবেশ করলে, হুট করে পরিবর্তনের সুযোগ কম।

বাংলাদেশেও শিক্ষাখাতে ধীরে ধীরে ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে শহর জীবনযাপনের খরচ তো দ্রুতগতিতে বাড়ছে। আর উচ্চ শিক্ষার ব্যয় আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক প্রতিষ্ঠান তো বর্হিবিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করছে। তা কেবল খরচের দিক থেকেই নয়, গবেষণা এবং অন্যান্য দিক থেকেও এ ধরনের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। সেক্ষেত্রে নিজে নিজে পড়ালেখা করে নিজের ব্যক্তিগত উন্নয়ন এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করার বিকল্প নেই। এদিক থেকে দ্য পারসোনাল এমবিএ বইটি আপনাকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। এর পাশাপাশি কিছু বইয়ের নাম দিচ্ছি। এসব বইয়ের নাম দ্য পারসোনাল এমবিএ বই থেকেই নেওয়া। এই বইগুলো আপনার দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে।

ম্যানেজমেন্ট ও লিডারশিপের জন্য: দ্য পারসোনাল এমবিএ বইয়ের অধ্যায় ৯ দেখতে পারেন।

ফাইন্যান্স (অর্থ ও বিনিয়োগ) এবং একাউন্টিং (হিসাববিজ্ঞান) এর জন্য: দ্য পারসোনাল এমবিএ বইয়ের অধ্যায় ৬ দেখতে পারেন। আরও জানতে দেখুন:

-         Accounting made simple by Mike Piper

-         Essentials of accounting by Robert N. Anthony and Leslie K. Breitner

-         The McGraw-Hill 36-hour Course in Finance for Nonfinancial Managers by Robert Cooke

-         How to Read a Financial Report by John A. Tracy

তথ্য এবং বিভিন্ন আইডিয়া বিশ্লেষণ করার জন্য:

-         Principles of Statistics by M. G. Bulmer

-         Turning Numbers into Knowledge by Jonathan G. Koomey

ব্যক্তিগতভাবে আমি বই পাঠের সময় রঙিন কলম ব্যবহার করি এবং বইয়ের মধ্যেই দাগ দিই অথবা লিখি। এতে করে আমি পরবর্তী সময় আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ লাগা বাক্য এবং বিষয়াবলি সহজেই খুঁজে পাই। বিজনেস ট্রেনিং এর ওপর বেস্টসেলিং বই জশ কফম্যান রচিত দ্য পারসোনাল এমবিএ তে লেখক পরামর্শ দিয়েছেন বই পাঠের সময় পাশে একটি খাতা ও কলম রাখতে। এতে করে দরকারি জিনিস টুকে নিতে পারেন। আপনি বই পাঠের সময় কী করেন? আমাদের জানান। পরবর্তী রচনা আসবে প্রতিটি ব্যবসার ৫টি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ নিয়ে আলোচনা।


তথ্যসূত্র:

দ্য পারসোনাল এমবিএ বই অনুসারে

https://www.amazon.com/McGraw-Hill-36-Hour-Finance-Non-Financial-Managers/

বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২১

পরিবর্তন হওয়ার কি কোন দরকার আছে?

সবাই পৃথিবীকে বদলানোর কথা বলে, কিন্তু কেউ নিজেকে বদলানোর কথা ভাবে না। - নিও তলস্তয়। 

পরিবর্তন হওয়ার কি কোন দরকার আছে?

দুনিয়া বদলে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে। কিন্তু আমাদের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায়িক শিক্ষা কি বদলাচ্ছে? দুনিয়া এখন ইন্টারনেটের যুগ। আর প্রতিনিয়ত শত শত প্রযুক্তি এসে বর্তমান সময়কে পরিবর্তন ও পরিবর্ধিত করে দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে আমাদের ব্যবসা শিক্ষার সিলেবাস সেই আগের যুগের বিষয়াবলি ধরে রেখেছে। এখনকার ব্যবসা আকারে ছোট হয়ে পড়েছে, আগের থেকে অনেক কম পুঁজিতেও ব্যবসা করা যায় এবং অনেক কম কর্মচারী দিয়েও ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব। আমেরিকান ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রশাসন, পুরো আমেরিকার ৯৯.৭ শতাংশ ক্ষুদ্র ব্যবসা মালিকদের প্রতিনিধিত্ব করে। তারা দেশের বেসরকারি অংশের অর্ধেকেরও বেশি কর্মের যোগান দেয়। গত ১৫ বছরে তারা নতুন ৬৪ শতাংশ কর্মের যোগান দিয়েছে। এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দেশের অকৃষি পণ্যের ৫০ শতাংশ পণ্য তৈরি করেছে। কিন্তু আপনি যদি দ্বিতীয় শ্রেণির কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা শিক্ষার সিলেবাস দেখেন, তবে দেখবেন সেখানে এসব প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করার মতো কিছু নেই অথবা এসব প্রতিষ্ঠান নিয়েও কোন আলাপ-আলোচনা নেই। দেখে মনে হয় যেন এমবিএ প্রোগ্রাম কেবল বড় বড় ব্যবসা পরিচালনার জন্যই তৈরি হয়েছে।

পূর্বে মার্কেটিংও হত বৃহৎ আকারে। রেডিও, টেলিভিশন সর্বত্র প্রচার করার চেষ্টা ছিল। কিন্তু এখন বিজ্ঞাপনের নানা মাধ্যম আবিষ্কৃত হওয়ায় বিজ্ঞাপন ব্যয় টাকা থেকে পয়সাতে নেমে এসেছে। বর্তমানে ব্যবসা সফল হতে সবচেয়ে বেশি দরকার গতি, নমনীয়তা এবং উদ্ভাবনী দক্ষতা। কিন্তু এসব গুণ অর্জন করা বড় বড় প্রতিষ্ঠানের জন্য দুরূহ ব্যাপার। আর এসব বিষয়ে ক্লাসরুমেও শেখানো হয় না। বড় বড় প্রতিষ্ঠান যেমন এসব গুণ অর্জন করতে অক্ষম, তেমন আমাদের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমও এগুলো গ্রহণ করতে অপারগ।

বাজারের তীব্র প্রতিযোগিতা এক্সিকিউটিভদেরকে স্বল্পমেয়াদি মুনাফার দিকে ধাবিত করে। যেখানে তারা দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের দিকে না ঝুঁকে স্বল্পমেয়াদি কলাকৌশল অর্জনের দিকে ছুটছে। আবার একই সময়ে কর্মীরাও আরও বেশি কর্তৃত্ব, আরও বেশি চাকরির নিরাপত্তার দিকে ছুটছে। যা প্রথাগত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো প্রদান করতে পারছে না। আপনি এখন এমন কাউকে কীভাবে আপনার কোম্পানিতে চাকরি করতে রাজি করাবেন যার জন্য আপনার কোম্পানিতে কাজ করা হয়তো প্রথম অপশন বা প্রস্তাব নয়? তার হয়তো আরও অনেক জায়গায় কাজ করার সুযোগ আছে। সেক্ষেত্রে আপনি কীভাবে তাকে আপনার কোম্পানিতে কাজ করতে উৎসাহী করবেন?

এমবিএ প্রোগ্রামগুলো হয়তো এসব সমস্যার সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা এখনো প্রথাগত তত্ত্ব ও রীতিনীতিতে আটকে আছে। আর তাছাড়া বর্তমানের এমবিএ প্রোগ্রামগুলো খুবই মুনাফাজনক এবং সম্মানজনক। সেক্ষেত্রে পরিবর্তন হওয়ার দরকার কি? ছাত্রছাত্রীরা যতক্ষণ পর্যন্ত না ব্যবসা শিক্ষার প্রোগ্রাম তথা এমবিএ প্রোগ্রামগুলোতে যুক্ত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের বিদ্যমান অবস্থাই ধরে রাখবে।

শেষ করব, সক্রেটিসের একটি বক্তব্য দিয়ে, ‘পরিবর্তনের গোপন সূত্র হচ্ছে আপনার সব শক্তি দিয়ে পুরাতনের সাথে লড়াই করা নয়; বরং নতুন কিছু তৈরির পেছনে সর্বাত্মক শক্তি প্রয়োগ করা।’


তথ্যসূত্র:

দ্য পারসোনাল এমবিএ বই অনুসারে

https://blog.hubspot.com/sales/quotes-about-change

বুধবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২১

বিজনেস ট্রেনিং এর ওপর বেস্টসেলিং বই জশ কফম্যান রচিত দ্য পারসোনাল এমবিএ


আমরা আজকে আলোচনা করব বিজনেস ট্রেনিং এর ওপর বেস্টসেলিং বই জশ কফম্যান রচিত দ্য পারসোনাল এমবিএ  বই নিয়ে। দ্য পারসোনাল এমবিএ এর বাংলা অনুবাদ হতে পারে নিজে নিজে পড়ালেখা করে এমবিএ তথা ব্যবসায়িক সর্বোচ্চ ডিগ্রির সমমনা জ্ঞান অর্জন করা। আমেরিকার কোটিপতি ব্যবসায়ী রবার্ট ক্র্যাফ্ট বলেন, নিজে নিজে পড়ালেখা করার মানে হচ্ছে অন্য কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির সহযোগিতা ছাড়াও পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া এবং এতে করে নিজের প্রতি নিজের আত্মবিশ্বাস বহুগুণে বৃদ্ধি পায়।


আসলে নিজে নিজে পড়ালেখা করার প্রতি অনেকেই উৎসাহিত করেছেন। আপাতত আমি রবার্ট ক্র্যাফ্টের উক্তি দিয়ে ব্যাপারটার একটি ইঙ্গিত দেওয়ার চেষ্টা করলাম। এখন আমরা জশ কফম্যানের দ্য পারসোনাল এমবিএ বইয়ের কথা বলি। প্রথমে বলব, আপনি যদি ব্যবসার কলাকৌশল শিখতে চান, তবে তার জন্য বড় এবং সুনামধন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে হবে না। আপনি নিজে নিজেও আধুনিক ব্যবসার মৌলিক সূত্রাবলি শিখতে পারেন।


ঘটনা হচ্ছে ব্যবসার মধ্যে দুইটি জিনিস থাকে। এক হচ্ছে মৌলিক কিছু নীতি বা সূত্র। আর দ্বিতীয় হচ্ছে পদ্ধতি। এখন পদ্ধতি হাজারো থাকতে পারে। কিন্তু মনে রাখবেন, মৌলিক নীতি বা সূত্র দেশ কাল পাত্র ভেদে একই থাকে। আপনি দ্য পারসোনাল এমবিএ বই থেকে শিখতে পারবেন:


কীভাবে ভালো ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নিতে হতে হয়?

কীভাবে আপনার ব্যক্তিগত উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা যায়?

কীভাবে অনিশ্চয়তা এবং অস্পষ্টতা পরিচালনা করবেন?

কীভাবে পরীক্ষানিরীক্ষা চালাবেন এবং আপনার কাঙ্ক্ষিত ফলাফল তুলে আনবেন?


দ্য পারসোনাল এমবিএ বইটি এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে করে আপনি এখান থেকে আপনার ব্যবসা বা কাজকর্ম পরিচালনার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা পান। বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গিয়ে নিজের বাবা-মা অথবা নিজেকে ঋণে জর্জরিত না করেও আপনি নিজের ব্যবসায়িক জ্ঞান বৃদ্ধি করতে পারেন। ক্লাসরুমে না গিয়ে আরও কম সময়ে এবং কম খরচে ব্যবসার নানাবিধ জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করার জন্যই এ বই রচিত।


ব্যবসা আসলে কাজ করেই শিখতে হয়। কেবল তত্ত্ব পড়লেই হয় না। বাস্তবে কাজ করার পরেই বোঝা যায় ব্যবসার কলাকৌশল। তবে কিছু কিছু তত্ত্ব সম্পর্কেও আপনাকে ধারণা দেওয়া হবে যাতে করে আপনি ব্যবসায়িক দুনিয়ার নানা শব্দ ও পরিভাষা সম্পর্কে পরিচিত হতে পারেন।


দ্য আয়রন ল অফ দ্য মার্কেট: কিছু কিছু ব্যবসায়িক ক্ষেত্র অনেক বড় হয়, আবার কিছু ছোট হয়। এটার কারণ কী? কীভাবে নতুন ব্যবসায়িক ক্ষেত্র খুঁজে বের করতে হয়?


একটি বাজারকে পরিমাপ করার ১০টি উপায়: কিছু ব্যবসায়িক আইডিয়া অন্যান্য ব্যবসায়িক আইডিয়ার চেয়ে উত্তম হয়। তবে তা আপনি কীভাবে জানবেন? এটা জানার জন্য বইয়ে দেওয়া আছে ১০টি উপায়।


মূল্যবান সম্পদ গড়ে তোলার ১২টি উপায়: ব্যবসায় কেবল পণ্য বা সেবা নয়, আরও বহু কিছু রয়েছে। এ জন্য বাকি বিষয় সম্পর্কে জানতে এই ১২টি উপায় ব্যবহার করতে পারেন।


মুনাফা করার ৪ পদ্ধতি: মুনাফা করার ৪টি পদ্ধতি আছে। আপনি কি জানেন?


ব্যবসায়িক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসলে প্রকৃত নেতা তৈরি হয় না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মানুষ জ্ঞান অর্জন করে, দক্ষতা লাভ করে এবং সাফল্য লাভ করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তত্ত্ব শেখে।


তাই আজই দ্য পারসোনাল এমবিএ  পড়ুন এবং ব্যবসায়িক কলাকৌশল শিখে পেশাগত জীবনে উন্নতি করুন।


তথ্যসূত্র:

https://personalmba.com/

https://www.azquotes.com/quote/706545