সোমবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০১৮

নিজেকে উন্নত করতে, আত্মসম্মান সৃষ্টিতে দরকার শৃঙ্খলা।


আমাদের মনের দুই বিরোধী ভাব রয়েছে। এটা অদ্ভুত বলে মনে হলেও সত্য। তারচেয়েও বেশি অদ্ভুত হচ্ছে এই দুই বিরোধী ভাব একই সাথে, একই মনে বাস করে। যখন এটা বলি তখন ওটা মনে আনি না, যখন ওটা বলি তখন এটা মনে আনি না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার বই ‘পঞ্চভূত’ এ লিখেছেন, ‘এমন-কি ঘোরতর পশুত্ব থাকিলেও পূজার ব্যাঘাত হয় না। তাহারা একদিকে স্বামীকে মানুষ ভাবে লাঞ্ছনা গঞ্জনা করিতে পারে, আবার অন্যদিকে দেবতা ভাবে পূজাও করিয়া থাকে। একটাতে অন্যটা অভিভূত হয় না। কারণ আমাদের মনোজগতের সহিত বাহ্যজগতের সংঘাত তেমন প্রবল নহে।’

এটাকে যে যাই মনে করুক না কেন এতে সর্বোপরি আমাদের চরিত্রের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে। স্বামীকে দেবতা বললে স্ত্রীর ভক্তি পাইবার জন্য স্বামীর কিছুমাত্র যোগ্যতা লাভের আবশ্যক হয় না। আর যোগ্যতা লাভ করতে হলে আমাদেরকে আমাদের আলস্য শৈথিল্য বর্জন করতে হবে। তা কি সম্ভব! একই বইয়ে রবী ঠাকুর বলেছেন, ‘বাঙালির বেশভূষা চালচলনের অভাবে একটা অপরিমিত আলস্য শৈথিল্য স্বেচ্ছাচার ও আত্মসম্মানের অভাব প্রকাশ পায়।’ এটাকে কী বলে তা আপনি নিজেই জানেন।

যাইহোক, অনেক আলোচনা সমালোচনা হলো। এবার সমাধানে যাওয়া যাক। আমাদের ধনীরাও যে অশোভনভাবে চলাফেরা করে তার কারণ জড়তা ও মূঢ়তা। আমাদের বেতনবৃদ্ধি হলেও চেতনা বৃদ্ধি পায়নি। এজন্য আত্মসম্মান যে নাই বা আত্মসম্মান কী তাও বুঝি না।

নিজেকে উন্নত করতে, আত্মসম্মান সৃষ্টিতে দরকার শৃঙ্খলা। আপনি যদি নিজেকে উন্নত করতে চান তবে আপনি পারবেন। ব্রায়ান ট্রেসি তার বই ‘টাইম ম্যানেজমেন্টে’ লিখেছেন, ‘কাগজে লিখে পরিকল্পনা তৈরি করুন। মুখে মুখে পরিকল্পনা তৈরি করা বন্ধ করুন।’ এর সাথে যদি আগের রাতেই আজকের কী কী কাজ করবেন তা একটি ডাইরিতে লিখে ফেলতে পারেন তবে আরো ভালো হয়। এতে করে আপনি নিশ্চিন্তে ডাইরি দেখলেন এবং কাজগুলো করে গেলেন। আজকে এতটুকুই। ভালো লাগলে মন্তব্য করতে এবং আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আপনার মন্তব্য আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ধন্যবাদ।

ফজলে রাব্বি

***ব্রায়ান ট্রেসির টাইম ম্যানেজমেন্ট বইটি বাংলায় পাবেন সাফল্য প্রকাশনীতে।

শনিবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৮

সমুদ্র দেবতা প্রোটিয়াস ছিলেন নমনীয়।

সব সময় বিনয়ী হয়ে থাকলে লোকজন বিরক্ত হয়ে পড়ে। বিনয় অবশ্যই একটি বিরল গুণ। তবে মাঝে মাঝে একটু কৌতুক করা ভালো। একটু মজা করা, একটু হাস্যরসের মধ্যে নিজেকে নিমজ্জিত করা দরকার। এতে করে এক ধরনের মানসিক অবসাদ দূর হয়। সারাক্ষণ একই রকম হয়ে থাকলে, গম্ভীর হয়ে থাকলে আমরা অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ি। তাই নিজের মধ্যে একটু নমনীয়তা রাখা দরকার।


ছোট্ট একটি গল্প বলি। গল্পটি হচ্ছে গ্রিক সমুদ্র দেবতা প্রোটিয়াসকে নিয়ে। তার ক্ষমতা ছিল নিজের ইচ্ছামতো নিজেকে পরিবর্তন করার সামর্থ্য। তিনি যখন তখন নিজেকে নিজের ইচ্ছামতো পরিবর্তন করতে পারতেন। একদিন আগামেনোনের ভাই, স্পার্টার রাজা মেনেলেআস প্রোটিয়াসকে ধরতে যায়। তখন সমুদ্র দেবতা নিজেকে প্রথমে একটি সিংহে, তারপর একটি সাপে পরিণত করে। এরপর যথাক্রমে একটি চিতাবাঘে, একটি বন্য শূকরে, একেঁবেকেঁ চলা জলতরঙ্গে এবং সবশেষে একটি বটবৃক্ষে পরিণত হয়। সমুদ্র দেবতা প্রোটিয়াস ছিলেন নমনীয়। তার মতো আমাদেরকে নিজেদের মধ্যে এই অসামান্য গুণ-নমনীয়তা সৃষ্টি করার প্রয়োজনীয়তা অনেক।

ফজলে রাব্বি