বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ব্রাশের হরতাল!


আর না। আমাকে দিয়ে আর দাঁত মাজাতে পারবেন না।

হ্যাঁ! কে? কে কথা বলে?

এডভোকেট সোয়াদ খাঁন। দিনরাত মামলা-মোকাদ্দমা এবং কোর্ট-ক্লায়েন্ট নিয়ে ব্যস্ত। এই ব্যস্ত জীবন তিনি নিয়ম মেনে অতিবাহিত করেন। দিনে দুইবার দাঁত ব্রাশ করেন। সকালে নাস্তা খেয়ে আর রাতে খাবার খেয়ে। কিন্তু আজ রাতে খাবার খেয়ে দাঁত ব্রাশ করতেই কে যেন কথা বলে উঠল।

কে? কে কথা বলে?

ব্রাশ: আমি।

সোয়াদ: আমি কে?

ব্রাশ: আমি আপনার দাঁত মাজার ব্রাশ।

চমকে গিয়ে হাত থেকে ব্রাশটি মেঝেতে পড়ে গেল।

ব্রাশ: ভয় পাবেন না।

সোয়াদ: ভয় পাবো না মানে! তুমি জানো আমি কে! তোমার সাহস কত বড়!

ব্রাশ: হুমম।

সোয়াদ: কিন্তু তুমি কথা বলছ কীভাবে? (চোখ রগড়ে বলল) আমি কি স্বপ্ন দেখছি!

ব্রাশ: না। আপনি স্বপ্ন দেখছেন না। আমিই কথা বলেছি।

সোয়াদ: ও তাই। তা কী কথা বলেছ? কেন বলেছ? মনে মনে চিন্তা করছে, ব্রাশ কীভাবে কথা বলে।

ব্রাশ: আমি এভাবেই কথা বলি। মুখ দিয়ে বলি। খাঁটি বাংলা ভাষায় বলি। কারণ আপনি ব্রাশিং ভাষায় বললে বুঝতে পারবেন না।

সোয়াদ: ও মাই গড! তোমাদের ভাষাও আছে নাকি!

ব্রাশ: গড শুধু আপনার না। আমাদেরও আছে।

সোয়াদ: তাই নাকি! তুমি কোন ধর্মের?

ব্রাশ: আপনি আমাদের ভাষা বোঝেন না। ধর্ম বুঝবেন কীভাবে?


ব্রাশ: যাই হোক, আমি বলছিলাম, আমি আর আপনার দাসত্ব করতে পারব না।

সোয়াদ: কী বলো! তুমি আবার আমার দাসত্ব করলে কোথায়?

ব্রাশ: এই যে, দিনরাত আমাকে দিয়ে মেজেই যাচ্ছেন, মেজেই যাচ্ছেন। কোন ছুটিছাটা নেই। কোন বিনোদন নেই।

সোয়াদ: কী বলো! তোমার আবার বিনোদনও লাগবে!

ব্রাশ: কী বলেন! লাগবে না! আমি দিনরাত খাটি। আপনার দাঁতগুলো পরিষ্কার করে ঝকঝকে করে দিই। আর আমার ছুটি লাগবে না!

সোয়াদ: (হঠাৎ মাথায় একটা শয়তানি বুদ্ধি খেলে গেল) তোমাকে যদি ছুটি না দিই?

ব্রাশ: কেন দিবেন না? দিতেই হবে। না দিলে, আমি কাজ করব না।

সোয়াদ: তুমি তো জড় পদার্থ। তুমি তো নড়াচড়া করতে পারবে না। কাজ বাদও দিতে পারবে না। এই দেখো আমি শক্ত করে ধরে রাখছি তোমায়। পারলে মুক্ত হয়ে দেখায়।

না, ছাড়েন। ছাড়েন আমাকে।


এই ভাই? কী শুরু করলেন? বাসের মধ্যে ঘুম যান, আবার আমার হাত নিয়ে টানাটানি করেন। দেখি, ছাড়েন। ছাড়েন বলছি।

২টি মন্তব্য: