বৃহস্পতিবার, ২২ জুলাই, ২০২১

বই পর্যালোচনা: ইউ ক্যান ডু ইট। জন মেসন।



আপনার পক্ষে আপনার ভবিষ্যৎ নির্মাণ করা সম্ভব। আপনি যদি আজকে আপনার পছন্দ মতো জায়গায় নাও থাকেন, উদ্বিগ্ন হবেন না, ভয় পাবেন না। আপনার পক্ষে আপনার পছন্দ মতো জায়গায় যাওয়া সম্ভব। এই সম্ভব্যতাকেই লেখক জন মেসন নানা যুক্তি ও উক্তির মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।


আজকে আপনি যেখানে আছেন, গতকাল হয়তো তা সম্ভব ছিল না। আবার আগামীকাল আপনি যেখানে থাকবেন তা আজকে অসম্ভব বলে বোধ হতে পারে। এজন্যই আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন। মানুষের পক্ষে যা অসম্ভব, আল্লাহর পক্ষে তা নিশ্চয়ই সম্ভব।


নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করবেন না। যে কখনো ঝুঁকি নেয়নি, সে কখনো কোন বড় কিছু অর্জন করেনি। বলা হয়, একটি জাহাজ কখনো স্রোতহীন তীরে পড়ে থাকার জন্য নির্মাণ করা হয়নি। জাহাজকে গভীর সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের সাথে লড়াই করতে হবে। তুলে আনতে হবে মুক্তা। এলিজাবেথ কেনি বলেন, সারাজীবন ভেড়া হয়ে জীবনযাপন করার চেয়ে একদিন সিংহ হিসাবে বাঁচাও উত্তম।


আপনি যদি ঝুঁকি নিয়ে চিন্তা করেন তবে কখনোই এগিয়ে যেতে পারবেন না। সবসময় ফলাফলের দিকে, আপনি কী চান, সেই দিকে নজর দিন। তবেই এগিয়ে যাওয়ার শক্তি ও সাহস পাবেন।


সাধারণ মানুষ কখনো প্রার্থনা করে না। তারা ভিক্ষা চায়। আল্লাহর কাছে মানসিক শক্তি ও সাহস চান। এগিয়ে যাওয়ার দিকনির্দেশনা চান। প্রার্থনা করুন, নাকি ভিক্ষা। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। তবেই আল্লাহ আপনার তীব্র আকাঙ্ক্ষা পূরণের উপায় দেখাবে।


ভয় এমন এক জিনিস যেন সেখান থেকে সবসময় পালাতে মন চায়। ভীতি থেকে আমরা সাধারণত পালিয়ে বেড়াই। কিন্তু ভীতির সেই জিনিস হয়তো আপনার পিছনে নয়। একে মোকাবিলা করুন। মুখোমুখি হোন। দেখবেন ভয় কেটে গেছে।


জন লাববক বলেন, ‘একদিনের কঠোর পরিশ্রমের চেয়ে দিনভর দুশ্চিন্তায় কাটানো বেশি কষ্টের।’


বলা হয়, ভবিষ্যতের জন্য দুশ্চিন্তা করবেন না। কারণ দুশ্চিন্তা করতে করতে দেখা যাবে দুশ্চিন্তা করার মতো ভবিষ্যতই থাকবে না। দুঃখজনক হলেও সত্য যে লোকজন ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তায় বেশি সময় কাটায়। অথচ আমাদের চিন্তা থাকা দরকার ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নেয়া।


সিস্টার ম্যারি ট্রিকি বলেন, ‘ভয় হচ্ছে এক ধরনের বিশ্বাস যা কখনো কাজে দেয় না।’


আমি আল্লাহর ওপর বিশ্বাস করি। নিজেকে বলুন, আমি ভয় পাই না। যার আল্লাহর ওপর বিশ্বাস আছে, তাকে মর্তের মানুষ কী করতে পারে! আল কুরাআনে আল্লাহ বান্দাকে বলতে বলেন, বল, আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। নির্ভরকারীরা তাঁরই উপর নির্ভর করে থাকে। - সুরা আয-যুমার, আয়াত, ৩৮।


আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন। কখনো অচেনা ভবিষ্যৎকে ভয় পাবেন না। কারণ আপনার সাথে সর্বদা আল্লাহ আছেন। কোরিই টেন বুম বলেন, আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন। আল্লাহ আপনার কাছের জন, পরিচিত। তাই অজানা ভবিষ্যৎকে ভয় পাবেন না। কারণ আপনার পরিচিত আল্লাহ আপনার সাথে আছে।


ব্যর্থ হলেও ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিন। শিক্ষা নিয়ে সামনে এগিয়ে যান। একবার পড়ে গেলেও, আরও একবার উঠে দাঁড়ান। আবার চেষ্টা করুন। এবার আপনার সাথে ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা আছে। আপনি নতুন উদ্যমে, শিক্ষা, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার নতুন শক্তি নিয়ে চেষ্টা করুন। আপনি পারবেন।


ব্যর্থতা হয়তো অনিবার্য বলে বোধ হয়। কিন্তু এটা কেবল একটা ফলাফল মাত্র। সম্ভাবনার মতো, শত ফলাফল ঘটতে পারত। সেখান থেকে একটা ঘটল। সফল লোকজন বিশ্বাস করে ব্যর্থতা কেবল একটি প্রতিক্রিয়া মাত্র। ঠিক পন্থায় কাজ করতে না পারার কারণে ব্যর্থতা ঘটেছে। ঠিক পন্থা খুঁজে বের করতে হবে। নিজের পরিবেশ পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঠিক পন্থা খুঁজে বের করুন।


বলা হয়, জীবনে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হচ্ছে কোনো ঝুঁকি না নেয়া, কোন ধরনের ব্যর্থতা না থাকা। আপনি যদি জীবনে কোনো কিছু চেষ্টা না করেন, কোনো কিছুতে ব্যর্থ না হন, তবে কখনো সফল হতে পারবেন না। নাইকি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ফিল নাইট ও বিল বাওয়ারম্যান। ফিল নাইট বলেন, আগে আগে ব্যর্থ হোন। যত আগে ব্যর্থ হবেন, তত দ্রুত শিক্ষা নিয়ে নতুন করে আরম্ভ করতে পারবেন।


ভারমর্ন স্যান্ডার্স বলেন, অভিজ্ঞতা খুবই শক্ত শিক্ষক। এটা প্রথমে আপনাকে পরীক্ষায় ফেলবে, তারপর শিক্ষা দিবে।


পড়ালেখায় সাধারণত কী হয়? প্রথমে একটা বই বা সিলেবাস থাকে। তা ছাত্রছাত্রীরা পড়ে। তারপর পরীক্ষায় বসে। কিন্তু বাস্তবজীবনে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয় ভিন্নভাবে। এটা প্রথমে আপনাকে পরীক্ষায় ফেলে, তারপর শিক্ষা দেয়।


জিগ জিগলার বলেন, ‘আপনি যদি পর্যাপ্ত সংখ্যক মানুষকে তাদের স্বপ্ন পূরণে, তারা যা চায় তা অর্জনে সহায়তা করেন, তবে আপনি জীবনে যেকোনো কিছু অর্জন করতে সক্ষম হবেন।’ নিজের ব্যাপারে বেশি চিন্তা করবেন না। জীবনে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিন। তারপর ধৈর্য ধরে লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা করুন। এর মধ্যে মানুষকে তারা যা চায়, তাদের স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করুন। দেখবেন, আপনার স্বপ্ন, আপনার লক্ষ্যও পূরণ হয়ে গেছে।


আপনার একটা স্বপ্ন আছে। সেই স্বপ্ন পূরণ করতে কেবল তত্ত্ব পাঠ করলেই হবে না। এর জন্য দরকার কঠোর পরিশ্রম। বিশ্বাস করলে কিছুই হয় না। কাজ করতে হয়। ডেভিড ব্লি বলেন, ‘কঠোর পরিশ্রম ছাড়া সাফল্যের জন্য চেষ্টা করা মানে বীজ না বুনেই ফসল উঠাতে যাওয়া।’ কথাটা হাস্যকর মনে হলেও তা সত্য।


পৃথিবীতে দুই ধরনের মানুষ আছে। এক, যারা কাজ করে। আর দ্বিতীয়, যারা কাজ করবে বলে কথাই বলতে থাকে। প্রথম দলে যোগ দিন। সেখানে প্রতিযোগিতা কম।


এরপরও অনেকেই তো কঠোর পরিশ্রম করে। তবুও সফল হয় না কেন? ধরুন, আপনি গর্ত খুঁড়লেন। অনেক পরিশ্রম করলেন। অনেক বড় ও গভীর গর্ত খুঁড়লেন। তাতে হলো কী? কঠোর পরিশ্রমের সাথে আরও কিছু জিনিস দরকার। যেমন জ্ঞানী মানুষের সহযোগিতা। বলা হয়, জ্ঞানীদের সাথে থাকলে জ্ঞানী হবে, আর যদি তুমি বোকাদের রাজাও হও, তবুও তোমার ধ্বংস নিশ্চিত। আমরা তাদের মতোই হয়ে উঠি যাদের সাথে আমরা চলাফেরা করি। তাই সতর্কভাবে নিজের আশেপাশের মানুষের দিকে তাকান। কাদের সাথে আপনি চলাফেরা করেন? তারা কেমন? জ্ঞানী না বোকা?


অঙ্গীকার রক্ষা করুন। রাস্তার মাঝপথে কোনো ফলাফল নেই। গন্তব্যের পৌঁছার আগ পর্যন্ত থামবেন না। হাল ছাড়বেন না। আপনি যতদূর পথই পাড়ি দিন না কেন, গন্তব্যে না পৌঁছালে সব পরিশ্রমই পণ্ড হবে। তাই চেষ্টা করে যান। আপনি পারবেন।


অতীতে পড়ে থাকবেন না। অতীতে কারও কোনো ভবিষ্যৎ নেই। অতীতের দিকে, পিছনের দিকে তাকান বন্ধ করুন। আপনি যেমন পিছনের দিকে তাকিয়ে চলতে পারেন না, তেমন অতীতের দিকে নজর রেখে কখনো আপনার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন না। আপনি কখনোই নিজের ভালো ও উত্তম ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে পারবেন না, যদি পিছনের দিকে আপনার মন পড়ে থাকে। অতীতের দিনগুলো ভালো ছিল এটা সত্য কথা। আমি বিশ্বাস করি। কিন্তু সামনের দিনগুলোও উত্তম হবে। ভবিষ্যৎ ভালো হবে। আমাদের সবচেয়ে বড় কৃতিত্বপূর্ণ কাজ সব ভবিষ্যতে পড়ে আছে। আমাদের তা করে দেখাতে হবে। অসাধারণ সব উপন্যাস, কবিতা, গল্প, নাটক আরও ভালো ভালো সবকিছু সৃষ্টির অপেক্ষায়।


হাসুন। মনখুলে হাসুন। আব্রাহাম লিঙ্কন বলেন, মানুষ যতটা খুশি হতে চায়, তার মন যতটা চায়, ততটাই খুশি হতে পারে, সুখী হতে পারে। সবচেয়ে খারাপ দিন বলব সেটাই, যেদিন আমার মুখে হাসি ছিল না।


হেলেন কেলার বলেন, সূর্যের দিকে মুখ রাখুন। এতে করে আপনি কোনো ছায়া দেখতে পাবেন না।


হাসিমুখে থাকুন। জীবন উজ্জ্বল, যদি মুখে হাসি থাকে। অসুস্থতার লক্ষণ যেমন ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস। তেমন সুখের অভাব বা অসুখী হওয়াও ভুল চিন্তাভাবনাকে নির্দেশ করে।


সবসময় যা কিছু জানেন তারচেয়ে কম বলুন। কিছুদিন আগে আমি একটি ফুলদানিতে লেখা দেখলাম, ‘আমি যদি আমার মুখ বন্ধ রাখতাম তবে আজকে এখানে থাকতাম না।’ কথাটা আসলেই সত্য। সাধারণত আমাদের জিহ্বা আমাদের মস্তিষ্কের চেয়েও বেশি দ্রুত এবং আগে কাজ করে। তাই আকস্মিক যেকোনো কথা বলার আগে জিহ্বায় একবার কামড় দিন।


সূত্র ১৫: যে পথে বাধাবিপত্তি নেই তা তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোনো অর্জনের দিকে ধাবিত করে না। আর যা কিছু মূল্যবান, কৃতিত্বপূর্ণ তার সবকিছুই অর্জন করতে শত বাধাবিপত্তি অতিক্রম করতে হয়। নরম্যান ভিনসেন্ট পেইলি বলেন, প্রতিটি সমস্যার মধ্যেই সমাধানের বীজ বোনা থাকে। যদি কোনো সমস্যা না থাকে, তবে বুঝতে হবে সমাধানের কোনো বীজও নেই।


সূত্র ১৬: অধ্যবসায়ী লোকজন ততক্ষণ পর্যন্ত চেষ্টা করে যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা সাফল্য লাভ করে। আর এর বিপরীতে বহু মানুষ ততক্ষণে তাদের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা ত্যাগ করে। পথের শেষ না দেখেই হাল ছেড়ে দেয়। মনে রাখবেন, আপনি কী আছে সেটা বড় কথা নয়, যা কিছু আপনার কাছে আছে তা দিয়ে আপনি কী করেন সেটাই বড় কথা।


ধরুন, ডাকটিকেটের কথা। এগুলোর কোনো কাজ নেই যদি তা ডাকঘরেই পড়ে থাকে অথবা পথের মাঝখানে ঝরে পড়ে। চিঠিকে তার গন্তব্যে পৌঁছানোই তার দায়িত্ব। চিঠিকে গন্তব্যে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত ডাকটিকেটকে অধ্যবসায়ের সাথে চিঠির সাথে লেগে থাকতে হয়। এমন করে স্বপ্নের সাথেও লেগে থাকতে হয়।


চীন দেশে এক ধরনের বাঁশ গাছ আছে। এগুলোকে চাইনিজ বাঁশ বলে। এগুলোকে মাটিতে চারা রোপণ করে টানা চার বছর পরিচর্যা করতে হয়; সার ও পানি দিতে হয়, প্রতিনিয়ত যত্ন করতে হয়। কিন্তু পঞ্চম বছর সার ও পানি দিয়ে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যেই বাঁশ লম্বা হয়ে যায় প্রায় নব্বই ফুটের মতো। এখন কেউ যদি প্রশ্ন করে, চাইনিজ বাঁশ কি পাঁচ সপ্তাহে নব্বই ফুট লম্বা হয়, নাকি পাঁচ বছরে? অবশ্যই উত্তর হবে, পাঁচ বছর।


আমরা যদি হাল না ছাড়ি, যদি আমরা অধ্যবসায়ের সাথে এগিয়ে যাই, ধৈর্য ধরি, তবে অবশ্যই আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত ফসল ঘরে তুলতে পারব।


সূত্র ১৭: নিজের যা কিছু প্রকৃত অর্থে গুণাবলি আছে তাই নিয়ে এগিয়ে যান। প্রকৃত জিনিস খুঁজে পাওয়া কঠিন, কিন্তু যে কেউ তা দেখেই চিনতে পারে।


আপনি এ বিশ্বে এসেছেন আপনার যা কিছু প্রকৃত গুণাবলি আছে সেগুলোকে ভালোভাবে ব্যবহার করার জন্য। তাই আজই নিজের শক্তিশালী দিক খুঁজে বের করুন। এজন্য পড়তে পারেন সাকসেস থ্রো এ পজিটিভ মেন্টাল এটিটিউড বই (Success Through A Positive Mental Attitude)। মূল লেখক: নেপোলিয়ন হিল ও ডব্লিউ. ক্লেমেন্ট স্টোন। অনুবাদ: ফজলে রাব্বি। ঢাকা, সাফল্য প্রকাশনী, ২০১৭।


সূত্র ১৮: আল্লাহ আপনার সাথে থাকলে আর কারও দরকার নেই। আল্লাহ সাথে থাকলে যেকোনো লড়াইয়ে আপনার জয় পাবার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এজন্য বলা হয়, আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রাখুন এবং কিছু করুন।


প্রতিদিন সকাল বেলা উঠে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। রাতে ঘুমানোর সময় আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। কৃতজ্ঞতার মনোভাব বজায় রাখুন।


সূত্র ১৯: আপনি কি প্রস্তুত? আপনি যদি জীবনকে ভুল দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেখেন, তবে জীবনে কেবল দুঃখদুর্দশা ছাড়া আর কিছুই দেখবেন না। আপনি যদি একশ টাকা গরিব মানুষকে দান করতে যান তবে তা কত বড় দেখাবে, কিন্তু মুদি দোকানে গেলে মনে হবে এত অল্প টাকায় কী পাওয়া যায়! আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ঠিক এমনই। সবচেয়ে বড় কথা, আপনি কি খুঁজছেন? কেউ কেউ সারাজীবন অভিযোগ করেই কাটায় যে গোলাপের মধ্যে কাঁটা আছে। অথচ কাঁটার জন্যই আমাদের ধন্যবাদ দেয়া উচিত।


জমিতে ফসল ফলাতে গেলে বৃষ্টি দরকার। এখন আপনি যদি কাদা মাটির জন্য অভিযোগ জানান, তবে বৃষ্টির জন্য দোয়া করা উচিত নয়। হার্ব কোহেন বলেন, আমাদের আশেপাশের জিনিসপত্র কেমন তা অনুযায়ী আমি আপনি দেখি না। আপনি জিনিসপত্র ও আপনার আশেপাশের পরিবেশ পরিস্থিতিকে সেভাবেই দেখেন যেভাবে আপনি নিজে আছেন। We see things as we are.


আমি মহান সব বই পড়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করি। কারণ এসব বই থেকে মহান সব ব্যক্তিদের জীবনের চ্যালেঞ্জগুলো জানা যায়। আর চ্যালেঞ্জগুলো তারা কীভাবে অতিক্রম করেছে তা জানা যায়। এ থেকে আপনি শক্তি ও সাহস পাবেন। এ ধরনের মহান সব তথ্য আপনাকে পিপাসার্ত হওয়ার আগেই কুয়া খনন করতে উৎসাহ দিবে, ক্ষুধার্ত হওয়ার আগে বীজ বপণ করবেন।


এ থেকে আপনি বুঝতে পারবেন জীবন আসলে দেখার দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করে। আমরা আমাদের স্বপ্ন অনুযায়ী, রূপকল্প (ভিশন) অনুযায়ী পথ চলি। জীবন কেবল একটা প্রত্যাশার বিষয়। আমরা যেমন প্রত্যাশা করি তেমনই কাজ করি।


সূত্র ২০: সুখী জীবনযাপনের গোপন রহস্য হচ্ছে মানুষকে দান করা। আমাদের যা কিছু আছে তা থেকেই অল্প হলেও কিছু দেয়া যায়। কিছু দিলেই বহু কিছু পাওয়া যায়। জি. ডি. বোর্ডম্যান বলেন, বেশি ফসল ওঠানোর উপায় হচ্ছে আপনাকে প্রথমে বীজ বুনতে হবে। সেরকম আমাদেরকেও আগে দিতে হবে, তারপরই বহু কিছু পাওয়া যাবে।


সূত্র ২২: আমার সাফল্যের গোপন রহস্য হচ্ছে আমার দৈনন্দিন জীবনের রুটিন বা কাজকর্মের অভ্যাসের মধ্যে। আমি আজকে যা কিছু করব, তাই আগামীদিন হয়ে উঠব।


সূত্র ২৩: আপনি যদি জীবনে উত্তম কাজ করেন, তবে একে সমালোচনার লোকেরও দেখবেন অভাব নেই। ডেনিস হোলি বলেন, আপনি একজন ভালো মানুষ। দুনিয়ার লোকজন আপনাকে ভালো মানুষ দেখে ভালো ব্যবহার করবে, ন্যায্য ব্যবহার করবে এমন আশা করা যেন আপনি একটা গরুর সামনে দাঁড়িয়েছেন এই আশা নিয়ে যে গরু আপনাকে গুঁতা দিবে না, কারণ আপনি সবজি খান।


সূত্র ২৪: আপনার সৃজনশীলতা এবং কল্পনাশক্তি দিয়ে প্রথাগত ব্যবস্থাকে নাকচ করুন। আইডিয়া এমন জিনিস যা খরগোশের মতো। আপনি যদি কয়েকটিকে ধরতে পারেন এবং কীভাবে ধরতে হয় শিখতে পারেন, তবে আপনি খুব সহজেই দেখবেন ডজন ডজন ধরতে পারছেন।


বলা হয়, কোনকিছুই কাজ করবে না, যদি না কোন স্বপ্ন থাকে। আপনি যত বেশি স্বপ্ন দেখবেন, আপনি তত বেশি কাজ করতে, উদ্যোগ নিতে উদ্দীপ্ত হবেন।


প্রথম কথা হচ্ছে, আপনার জীবনে একটি আইডিয়া দরকার। সৃজনশীল ও আপনার কল্পনাশক্তি নিয়ে বাঁচার জন্য সাহস দরকার। তাই সাহসী হোন। আপনার আইডিয়াকে কাজে লাগান। কোন আইডিয়াই ফেলনা নয়। রবার্ট শুলার বলেন, “যেহেতু স্বপ্ন দেখতে এক পয়সাও লাগে, তাই আপনার উচিত জীবনের ছোটোখাটো সমস্যায় জড়িয়ে না পড়ে বড় স্বপ্ন দেখুন।” জীবনে হঠাৎ একটি আইডিয়া জ্বলে উঠতে পারে যার হয়তো লক্ষ কোটি টাকা দাম। যেকোন জিনিসকে যেমন আছে তেমন তো দেখবেনই, তার পাশাপাশি যেকোন জিনিস কেমন ভবিষ্যতে হতে পারে তাও চিন্তা করুন। নিজের কল্পনাশক্তির প্রয়োগ করুন। যেকোন জিনিসে দূরদর্শিতার চর্চা করুন।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন