আজকে আমরা বইয়ের ভেতর থেকে আমার ভালো লাগা কিছু কলাকৌশল তুলে ধরব:
১। পড়ালেখার জন্য আলাদা টেবিল রাখা দরকার। কম্পিউটার টেবিলে পড়ালেখা হয় না। কম্পিউটার হচ্ছে আইডিয়া আসার পর কাজ করার জায়গা। কিন্তু কম্পিউটার টেবিলে বসে আইডিয়া আসবে না। এটা অনেকটা কাজ করার সময় চিন্তা করবে না, আর চিন্তা করার সময় কাজ করবে না-তত্ত্বের মতো। তাই লেখক বলেন, কম্পিউটার টেবিলে পড়বে না। আর পড়ার টেবিলে কম্পিউটার, ল্যাপটপ চালাবে না।
২। আমরা কোথায় থাকি তা আমাদের কাজের ক্ষেত্রে অনেক বড় প্রভাব বিস্তার করে।
৩। প্রতিদিনকার পরিবেশ পরিস্থিতি দেখতে দেখতে মস্তিষ্ক অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। এজন্য ভ্রমণ করা জরুরি। ভ্রমণ করলে আমরা দুনিয়া সম্পর্কে নিত্যনতুন দৃষ্টিভঙ্গি পাই।
৪। যেকোন দলের মধ্যে সবচেয়ে স্মার্ট লোক খুঁজে বের করো। তারপর তার পাশে দাঁড়াও। তার সাথে আড্ডা দাও।
ভালো চুরি বনাম মন্দ চুরি (ভালো চুরির বৈশিষ্ট্য)
৫। নিজের কাজ শেষ করার জন্য বোরিং ভাবভঙ্গি নিয়ে চলাও উত্তম।
৬। ঋণ থেকে দূরে থাকো। বেশিরভাগ লোকজন টাকাপয়সার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করতে ঘৃণা করে। কিন্তু টাকাপয়সা খরচ করার ব্যাপারে তাদের কোন আপত্তি নেই। তাই চেষ্টা করবে টাকাপয়সা সম্পর্কে যত দ্রুত জ্ঞান অর্জন করা যায় ততই উত্তম। মানি ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কিত বই পড়ো: Secrets of the Millionaire Mind by T. Harv Eker, Rich Dad Poor Dad by Robert Kiyosaki, থিংক অ্যান্ড গ্রো রিচ প্রভৃতি।
৭। শখ পূরণ করো। নিজের পছন্দ মতো কাজ করো। যা ভালোবাসো তাই করো। কিন্তু পাশাপাশি ৯-৫টা একটা চাকরিও রাখো। কারণ এতে করে তোমার মধ্যে শৃঙ্খলা আসবে। আর এই চাকরি থেকে যা অর্থ পাবে তা তোমাকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে সাহায্য করবে।
৮। বন্ধু বানাও। শত্রুদের এড়িয়ে যাও। তোমার পছন্দের জিনিগুলো গুগল এলার্টস থেকে দেখে নাও।
৯। বলা হয়, আবর্জনার পাশে দাঁড়ালে দুর্গন্ধ তো আসবেই। আবার ফুলের সাথে দাঁড়ালে ফুলের সুবাতাস তোমার দেহ-মনে বইবে। চেষ্টা করো, যেকোন জায়গায় প্রতিভাবান এবং যোগ্য ব্যক্তির পাশে দাঁড়ানোর। দলের মধ্যে যদি কেউ যোগ্য না থাকে, তবে সেই দল বাদ দাও। যদি দলের মধ্যে তুমিই একমাত্র যোগ্য হও, তবে নতুন দল খুঁজে নাও।
১০। অনলাইনে লোকজনের সাথে ঝগড়া করা বাদ দাও। কিছু করে দেখাও। কাজ করে দেখাও।
১১। লোকজন তোমার কাজের যেসব প্রশংসা করে, তার একটা ফাইল বানাও। কারণ প্রতিদিন যে তোমার ভালো যাবে তার কোন গ্যারান্টি নেই। তাই যখন মন খারাপ লাগবে, একঘেয়ে লাগবে, তখন এই ফাইল থেকে প্রশংসাগুলো পড়ে দেখো।
১২। ক্রিয়েটিভ হতে গেলে অনেক এনার্জি দরকার। তাই নানা কাজে মনোযোগ দেওয়ার চেয়ে নিজের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে মনোযোগ দাও।
ক্রিয়েটিভিটি নিয়ে পড়তে পারো ক্রিয়োটিভিটি অ্যান্ড প্রবলেম সলভিং (সৃজনশীলতা এবং সমস্যা সমাধানের উপায়সমূহ) বই।
১৩। ঋণ থেকে দূরে থাকো। এজন্য টাকাপয়সার ব্যাপারে আগে থেকে শেখার চেষ্টা করো। Money Management 101 শিখো।
১৪। একটা ক্যালেন্ডার রাখো। প্রতিদিন কাজ করে ক্যালেন্ডারে ক্রস চিহ্ন দাও। পাশাপাশি একটি ডায়েরি রাখো।
১৫। বিয়ে করো চিন্তাভাবনা করে। তোমার সহধর্মিণী যেন একই মনোভাবসম্পন্ন হয়। তোমাকে যেমন ভালোবাসবে, তেমন তোমার কাজকেও যেন ভালোবাসে। বিয়ে করার সময় চিন্তাভাবনা করবে বলতে আমি কেবল সহধর্মিণীর কথাই নয়, অন্য যেকোন সম্পর্ক, যেমন ব্যবসায়িক, পেশাগত এবং বন্ধুত্বপূর্ণ প্রভৃতি সম্পর্কে ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। সমভাবানপন্ন মানুষ খোঁজ।
১৬। ক্রিয়েটিভিটি মানে কী করবে তা যেমন নির্বাচন করবে, তার পাশাপাশি কী কী করবে না তাও নির্ধারণ করবে। তোমার জন্য যা কিছু গুরুত্বপূর্ণ তাতে মনোযোগ দিতে গিয়ে তোমাকে এমন বহুকিছু বাদ দিতে হবে যা তোমার গুরুত্বপূর্ণ কাজের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
তোমাকে বুঝতে হবে তুমি দুনিয়ার সবকিছু করতে পারবে না। একে স্বীকার করে নাও। সবকিছুতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা বন্ধ করো।
১৭। কোনকিছু নির্বাচন করার আগে সময় নিয়ে চিন্তা করো। তারপর মজা করো।