ভূমি অধিকার (Land rights)

জমির অধিকার

যেকোন দেশের আদিবাসীদের ভূমি অধিকারকে আন্তর্জাতিক আইন স্বীকৃতি দেয়। সেই সাথে দেশের সাধারণ আইন এবং নাগরিক আইনের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থায় ভূমি অধিকারকে জায়গা দেওয়া হয়েছে। সাধারণ আইনের বিচারব্যবস্থায়, আদিবাসীদের ভূমি অধিকারকে আদিবাসী শিরোনাম হিসেবে উল্লেখ করা হয়। প্রথাগত আইনের বিচারব্যবস্থায়, প্রথাগত জমি হলো ভূমি মালিকানার প্রধান রূপ।


ভূমি সংস্কার বলতে সরকারি নীতিগুলোকে বোঝায় যা জমি গ্রহণ করে অথবা পুনর্বন্টন করে। যেমন ভূমি অনুদান।


ভূমি অধিকার বলতে মানুষের বিবেচনার ভিত্তিতে ভূমি প্রাপ্তি, ব্যবহার এবং অধিকার করার অপরিবর্তনীয় ক্ষমতাকে বোঝায়, যতক্ষণ না জমিতে তাদের কার্যকলাপ অন্য ব্যক্তির অধিকারে বাধা সৃষ্টি না করে। এটাকে জমিতে প্রবেশাধিকারের সাথে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়, যা ব্যক্তিদের অর্থনৈতিক অর্থে (যেমন কৃষিকাজ) জমি ব্যবহার করতে দেয়। এর পরিবর্তে, ভূমি অধিকার ভূমির মালিকানাকে সম্বোধন করে যা নিরাপত্তা প্রদান করে এবং মানুষের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। যখন একজন ব্যক্তির শুধুমাত্র জমিতে প্রবেশাধিকার থাকে, তখন তারা জমির মালিকের পছন্দের উপর নির্ভর করে বহিষ্কারের হুমকির মধ্যে থাকে, যা আর্থিক স্থিতিশীলতাকে সীমিত বা ক্ষতিগ্রস্ত করে।


ভূমি অধিকার ভূমি আইনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। কারণ এটা সামাজিকভাবে একটি জাতির ভূমি আইনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ভূমির মালিকানার অধিকারের গোষ্ঠীগুলো ভূমি অধিকার প্রয়োগের সুযোগ করে দেয়। ভূমি আইন ভূমির মালিকানার বিষয়ে একটি দেশ কর্তৃক নির্ধারিত আইনি নির্দেশনাকে বোঝায়। আর ভূমি অধিকার হচ্ছে ভূমি মালিকানার সামাজিক স্বীকৃতি। অনেকের মতে ভূমি আইনে যদিও সবার সমান ভূমি অধিকারের কথা বলা হয়ে থাকে, তবে কিছু কিছু দেশ এবং সংস্কৃতিতে একটি দল বা গোষ্ঠী নিজেরা ভূমির অধিকার ভোগ করার জন্য অন্যদের অধিকার প্রয়োগে বাধা দেয়। আইন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এসব আইনকে অবশ্যই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সামাজিক স্বীকৃতি দ্বারা স্বীকৃত হতে হবে। অতএব, একটি দেশের ভূমির মালিকানা এবং ভূমি অধিকারের বিষয়গুলোকে আইন দ্বারা এক সুঁতায় বাঁধতে হবে।


বিশ্বব্যাপী, ভূমি অধিকারের উপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ সেগুলো উন্নয়নের বিভিন্ন দিকের সাথে প্রাসঙ্গিক। উইকেরি এবং ক্যালহানের মতে, জমির মালিকানা থেকে মূলধন, আর্থিক নিরাপত্তা, খাদ্য, পানি, আশ্রয় এবং সম্পদ পাওয়া যায়। জাতিসংঘের গ্লোবাল ল্যান্ড টুল সংস্থা খুঁজে পেয়েছে যে গ্রামীণ ভূমিহীনতা, দারিদ্র্য এবং ক্ষুধার একটি বড় কারণ ভূমি অধিকার প্রয়োগ করতে না পারা। এতে করে মানুষের উন্নতি করার ক্ষমতা এবং মানবাধিকার দুর্বল হয়ে পড়ে। অপর্যাপ্ত ভূমি অধিকারের এই জটিল সমস্যা সমাধানের জন্য, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (The Millennium Development Goal 7D) ১০ কোটি বস্তিবাসীর জীবনকে উন্নত করার চেষ্টা করে। এর মধ্যে রয়েছে দরিদ্র মানুষের জন্য বর্ধিত ভূমি অধিকার, যা শেষ পর্যন্ত উচ্চতর জীবনযাত্রার দিকে নিয়ে যাবে।


যদিও উচ্চ জীবনযাত্রার মান অর্জনে ভূমির অধিকার মৌলিক, তবুও নির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠীকে ধারাবাহিকভাবে জমির মালিকানার বিধান থেকে বাদ দেওয়া হয়। আইনে হয়তো ভূমিতে প্রবেশাধিকার প্রদান করা হয়েছে তা থাকতে পারে, তবে সাংস্কৃতিক বাধা এবং দারিদ্র্যের ফাঁদ-ফোঁকর দিয়ে সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর জমির মালিকানার ক্ষমতাকে সীমিত করা হয়েছে। মানবিক মর্যাদা ও সমতা অর্জনের জন্য, এই গোষ্ঠীগুলোকে অবশ্যই পর্যাপ্ত ভূমি অধিকার পেতে হবে যা শুধু আইনগতভাবে থাকলেই হবে না, সামাজিকভাবেও স্বীকৃত হতে হবে।


তথ্যসূত্র: https://en.wikipedia.org/wiki/Land_law

ফজলে রাব্বি (Fazle Rabbi)

আমার জীবনের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে ৬৪টি অনুপ্রেরণামূলক বই প্রকাশ করা। saphollo.com

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন