লেখালিখি, পাণ্ডুলিপি তৈরী, সম্পাদনা
স্টাইল ও প্রমিত বানান বিষয়ক ৩০তম কর্মশালা
রাখাল রাহা
আমরা আজকে বই, বইয়ের কলকব্জা ও পাণ্ডুলিপি সম্পর্কে জানতে পারলাম। বই সম্পর্কিত নানা বিষয়ে সারাদিন ব্যাপী আলোচনা হয়েছে। বিস্তারিত আলোচনা ও বক্তব্যের কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হলো।
বই, বইয়ের কলকব্জা ও পাণ্ডুলিপি
বইয়ের শুরুতে থাকবে প্রচ্ছদ, তারপর প্রচ্ছদের ফ্লপে থাকবে বইয়ের সারসংক্ষেপ। তারপর পোস্তানি। এরপর থাকবে বইয়ের উপশিরোনাম ছাড়া শুধু শিরোনাম। একটি বইয়ের নাম যেমন সৃজনে উৎকর্ষ: সম্পাদক ও লেখকের ব্যবহারের জন্য। বইয়ের শিরোনাম হচ্ছে সৃজনে উৎকর্ষ। আর উপশিরোনাম হচ্ছে সম্পাদক ও লেখকের ব্যবহারের জন্য। বইয়ে প্রথম পৃষ্ঠায় থাকবে সৃজনে উৎকর্ষ। একে ইংরেজিতে হাফ টাইটেল বলা হয়। তারপরের পৃষ্ঠা খালি থাকবে। এরপর শিরোনামের পৃষ্ঠা। শিরোনামের পৃষ্ঠায় উপশিরোনাম সহ থাকবে। যেমন: সৃজনে উৎকর্ষ: সম্পাদক ও লেখকের ব্যবহারের জন্য (বইয়ে ছাপার ক্ষেত্রে শিরোনাম একটু বড় অক্ষরে হয়, তার নিচে একটু ছোট অক্ষরে উপশিরোনাম থাকে। তাই কোলন চিহ্ন (:) দিতে হয় না। কিন্তু লেখার ক্ষেত্রে কোলন চিহ্ন দিতে হয়।)। তারপর কপিরাইট পৃষ্ঠা। ৫নং পৃষ্ঠায় উৎসর্গ পৃষ্ঠার জন্য নির্ধারিত। উৎসর্গ না করার থাকলে এ পৃষ্ঠা থেকেই সূচি আরম্ভ হবে।
ফরওয়ার্ড তথা ভূমিকা লিখবেন লেখক ভিন্ন অন্য কেউ। তারপর প্রিফেস (Preface) তথা লেখকের বক্তব্য। এখানে বলে রাখা ভালো ভূমিকা ও লেখকের বক্তব্য হবে রেক্টো তথা ছাপা কাগজের সামনের পিঠ বা বেজোড় পৃষ্ঠায়। আর রেক্টোর বিপরীত হচ্ছে ভার্সো তথা ছাপা কাগজের উলটো পিঠ বা জোড় পৃষ্ঠা।
একনলেজমেন্ট তথা প্রাপ্তি স্বীকার ছোট হলে লেখকের বক্তব্যের মধ্যে রাখতে পারেন। তবে বড় হলে প্রাপ্তি স্বীকারের জন্য আলাদা পৃষ্ঠা করতে পারেন। শুরু হবে বিজোড় পৃষ্ঠা থেকে। সাধারণত ২ পৃষ্ঠা হলে ভালো হয়।
ফরওয়ার্ড বড় হলে তা ইন্ট্রোডাকশন তথা সূচনা হবে। এটাও লেখক ভিন্ন অন্য কেউ লিখবেন। এরপর টেক্সট এবং বইয়ের শেষের অংশ, যেমন: (Appendix) পরিশিষ্ট, (Abbreviations) শব্দসংক্ষেপ, (Notes) লেখকের কথা, (Glossary) শব্দসংকেত, (Bibliography or References) তথ্যসূত্র ও গ্রন্থপঞ্জি প্রভৃতি থাকবে।
পাণ্ডুলিপি সম্পাদনা কী, কেন ও কিভাবে
একজন সম্পাদক হিসাবে লেখককে জিজ্ঞেস করতে হবে:
তিনি আসলে কোনো স্টাইলে লিখেছেন?
কার জন্য লিখেছেন? কোনো ধরনের পাঠকের জন্য লিখেছেন? শিশু, তরুণ বা বৃদ্ধ?
একজন সম্পাদক দুই বাক্যের মর্মার্থ দেখবেন। এক বাক্যের সাথে পরবর্তী ও পূর্ববর্তী বাক্যের সঙ্গতি ও সামঞ্জস্য আছে কিনা তা দেখবেন। লেখক এক অনুচ্ছেদের সাথে পরবর্তী অনুচ্ছেদের সঙ্গতি বজায় রেখেছেন কিনা তা সম্পাদক দেখবেন।
বানান ভুল বা ঠিক তা দেখবেন প্রুফ রিডার। সম্পাদক অল্প বানান থাকলে তা ঠিক করে দিতে পারেন। কিন্তু টেক্সট তথা লেখার ভিতর বেশি বানান ভুল থাকলে তা প্রথমে প্রুফ রিডারের কাছে যাবে। তারপর সম্পাদকের কাছে আসবে। না হলে বেশি বানান ভুল দেখলে সম্পাদক লেখার মর্মার্থ উদ্ধারে ব্যর্থ হবেন।
১ লাখ শব্দের লেখা অথবা ২৫০ বা ৩০০ পৃষ্ঠার বই সম্পাদনা করতে ১-৩ মাস লাগতে পারে।
বাংলা বাক্যের কলকব্জা
বাংলা বাক্যের কলকব্জা সম্পর্কে বলেছেন প্রফেসর শিশির ভট্টাচার্য (ভাষাতাত্ত্বিক)।
গবেষণামূলক ও সৃজনশীল পাণ্ডুলিপি সম্পাদনা
সৃজনশীল ও গবেষণামূলক পাণ্ডুলিপি সম্পাদনার ক্ষেত্রে সম্পাদকের মতামত কী হতে পারে তা বিস্তারিত বলেছেন। যেমন সৃজনশীল পাণ্ডুলিপির ক্ষেত্রে সম্পাদক লেখককে নানা দিকে পরামর্শ দিতে পারেন। তবে তা লেখকের আবেগ বিচার করে দেয়া উচিত। আর গবেষণামূলক পাণ্ডুলিপির ক্ষেত্রে যোক্তিক বিচারে পরামর্শ দিবেন।
ননফিকশন তথা মননশীল
ফিকশন তথা সৃজনশীল
ননফিকশন তথা মননশীল পাণ্ডুলিপির সম্পাদনা ও উন্নয়নকাজ কিভাবে করা হবে সে-বিষয়ে এখানে বলা হয়েছে।
স্টাইল, প্রমিত বাংলা বানান ও প্রুফ
প্রমিত বাংলা বানানের জন্য বাংলা একাডেমি কর্তৃক অভিধান বা অন্যান্য অভিধান ব্যবহার করতে পারেন। তবে বানানের চেয়ে আপনার লেখার মর্মার্থ বা আইডিয়ার দিকে বেশি মনোযোগ দিন।
প্রকাশনা ও মুদ্রণ
বাজারে বিদ্যমান কাগজ ও কাগজের মাপ অনুযায়ী বইয়ের আকার ও বিন্যাস সম্পর্কে বলা হয়।