২০২৪ সালে বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ বৃদ্ধির হার ২০২৩ সালের চেয়ে তিনগুণ বেশি। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী এক দশকের মধ্যে বিশ্বে পাঁচজন ট্রিলিয়নিয়ার দেখা যাবে। অথচ অর্থনীতি, জলবায়ু ও সংঘাতের সংকটের কারণে ১৯৯০ সালের পর থেকে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা খুব একটা বদলায়নি; বরং বৃদ্ধি পেয়েছে।
ধনীদের অধিকাংশ সম্পদ উপার্জনের মাধ্যমে নয়, বরং দখলের মাধ্যমে অর্জিত—এই সম্পদের ৬০ শতাংশই আসে উত্তরাধিকার সূত্রে, ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমে পাওয়া সুবিধা, দুর্নীতি কিংবা একচেটিয়া বাজার দখলের মতো পথ থেকে।
বিশ্বের এই চরম বৈষম্যের পিছনে রয়েছে ঔপনিবেশিক আধিপত্যের দীর্ঘ ইতিহাস—যার সুফল পেয়েছে গুটিকয়েক ধনী শ্রেণি, আর খেসারত দিতে হয়েছে দরিদ্র জনগোষ্ঠী, বর্ণবাদে নিপীড়িত মানুষ, নারী এবং প্রান্তিকদের। এই শোষণ আজও চলছে এবং তার মানবিক খরচ অত্যন্ত ভয়াবহ।
আধুনিক বিশ্ব এখনও নানা দিক থেকে ঔপনিবেশিক। যেমন—বিশ্বব্যাংকে একজন গড় বেলজিয়ান নাগরিকের ভোটের ক্ষমতা একজন গড় ইথিওপিয়ান নাগরিকের চেয়ে ১৮০ গুণ বেশি। এই বৈশ্বিক কাঠামো এখনও দক্ষিণ গোলার্ধের (Global South) দেশগুলো থেকে উত্তর গোলার্ধের (Global North) ১% ধনী শ্রেণির কাছে প্রতি ঘণ্টায় ৩ কোটি মার্কিন ডলার সম্পদ আহরণ করে। বাংলাদেশী টাকায় প্রতিদিন ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা শোষণ করে।
এই শোষণকে বন্ধ করতে হবে। যারা অতীতে দাসত্ব ও উপনিবেশবাদের নির্মম শিকার হয়েছেন, তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আমাদের এই আধুনিক উপনিবেশিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আমূল পরিবর্তন করে আরও ন্যায্য করতে হবে—আর এর খরচ বহন করবে সেই ধনী শ্রেণি, যারা এই ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী।