দ্বন্দ্ব ও সংঘাত সমাধানের মডেল (the conflict resolution model)

দ্বন্দ্ব ও সংঘাত সমাধানের মডেল (the conflict resolution model)

দ্বন্দ্ব ও সংঘাত কীভাবে সহজভাবে সমাধান করবেন?

মনোবিজ্ঞানীরা একমত যে সংঘর্ষকে মোকাবিলা করা প্রয়োজন যাতে অচলাবস্থা এবং অভিযোগ এড়ানো যায়। আর স্থিতিশীলতা এবং যোগাযোগ পুনরুদ্ধার করা যায়। প্রশ্ন হচ্ছে, এটা কীভাবে সম্ভব? মূলত, সংঘর্ষ মোকাবিলার ৬টি ভিন্ন উপায় রয়েছে: পালানো, লড়াই করা, হাল ছাড়া, দায়িত্ব এড়ানো, সমঝোতায় আসা অথবা ঐক্যমত্যে পৌঁছানো।

১. পালানো (Flight):

পালানো মানে সংঘর্ষ এড়ানো। এতে সংঘর্ষের সমাধান হয় না এবং পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থেকে যায়। অনুমান করা যায় যে, কোনো পক্ষই কিছু লাভ করবে না। এটা একটা হার–হার (lose–lose) পরিস্থিতি।

২. লড়াই করা (Fight):

যারা সংঘর্ষকে আক্রমণাত্মকভাবে মোকাবিলা করে তাদের একমাত্র লক্ষ্য হলো জয়ী হওয়া। তবে শুধু জয়ী হওয়াই যথেষ্ট নয়, কারণ কাউকে হারাতেও হবে। এই পদ্ধতিতে প্রতিপক্ষকে পরাজিত করা এবং নিজের অবস্থান বজায় রাখা হয়। এর ফলাফল হয় জয়–হার (win–lose) পরিস্থিতি।

৩. হাল ছাড়া (Give up):

যারা সংঘর্ষে নিজেদের অবস্থান ছেড়ে দেয়, তারা পিছিয়ে গিয়ে এটা সমাধান করে, অর্থাৎ তারা পরাজিত হয়। এর ফলে হয় হার–জয় (lose–win) পরিস্থিতি ঘটে।

৪. দায়িত্ব এড়ানো (Evade responsibility):

যারা সংঘর্ষে দিশেহারা হয়ে পড়ে, তারা প্রায়ই সিদ্ধান্ত নেওয়া বা মুখোমুখি হওয়ার দায়িত্ব অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের ওপর ছেড়ে দেয়। এই কর্তৃপক্ষ তাদের পক্ষে সংঘর্ষ সমাধান করে, তবে এটি সবসময় বুদ্ধিমানের মতো হয় না এবং প্রায়ই এটা দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া ব্যক্তির স্বার্থে হয় না। এর ফলে উভয়পক্ষই হারতে পারে (হার–হার পরিস্থিতি)।

৫. সমঝোতা করা (Compromise):

পরিস্থিতি অনুযায়ী, সমঝোতা একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান হতে পারে যা উভয় পক্ষের জন্য সহনীয়। যদিও এটা আদর্শ সমাধান নয়। এটা পরিস্থিতির ভিত্তিতে যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হয়। এটা একটা জয়–হার/জয়–হার (win–lose/win–lose) পরিস্থিতি তৈরি করে।

৬. ঐক্যমত্যে পৌঁছানো (Reach a consensus):

ঐক্যমত্যে পৌঁছানো মানে উভয়পক্ষের দ্বারা একটি নতুন সমাধান তৈরি করা। সমঝোতার বিপরীতে, এটা উভয়পক্ষের জন্য একটি জয়–জয় (win–win) পরিস্থিতি, কারণ কাউকেই পিছিয়ে আসতে হয় না। বরং উভয়পক্ষ মিলে একটি “তৃতীয় পথ” তৈরি করে।


“আমাদের ব্যর্থতার কারণ আমাদের পরাজয় নয়; বরং সেই সংঘর্ষগুলোতে অংশগ্রহণ না করা।”

— সুইজারল্যান্ডের বার্নে একটি যুবকেন্দ্রের গ্রাফিতিতে লেখা

ফজলে রাব্বি (Fazle Rabbi)

আমার জীবনের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে ৬৪টি অনুপ্রেরণামূলক বই প্রকাশ করা। saphollo.com

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন