সাইনাস মিলিও এবং বুরদিউ মডেল
সামাজিকভাবে আপনার অবস্থান কোথায়?
সাইনাস মিলিও হলো একটি মনস্তাত্ত্বিক পদ্ধতি, যা বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গ্রুপকে চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত হয়। এটা সাধারণত মার্কেটিংয়ের লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করতে ব্যবহার করা হয়। এই ধারণাটি ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী এমিল দুর্কহেইম দ্বারা তৈরি হয়েছিল।
আরেক ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী পিয়েরে বুরদিউর একে বাস্তব জীবনে প্রয়োগযোগ্য করে তোলেন। বুরদিউ বিশ্লেষণ করেন যে সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে মানুষ কী কী জিনিস ভোগ করে। সমাজে আমরা যা কিছু ভোগ করি বা গ্রহণ করি সেগুলো আমাদের সাংস্কৃতিক পছন্দ ও অভ্যাস থেকে আসে। বুরদিউ এই মডেলের মাধ্যমে আমাদের সাংস্কৃতিক পছন্দ ও অভ্যাসগুলো বিশ্লেষণ করে দেখান।
যদিও সাইনাস গ্রুপ বা ক্যাটাগরি সম্পর্কে প্রায়ই সমালোচনা করা হয় যে এই ক্যাটাগরিগুলো খুবই সংকীর্ণ। অর্থাৎ পরীক্ষানিরীক্ষা করার জন্য কম নমুনা নেওয়া হয়েছে। আরও বেশি করে মানুষজন নিয়ে, নমুনা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করা উচিত। এটা সত্যি যে, এই মডেল এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না: “যদি আমার বাবা একজন বাস ড্রাইভার হয়, আর মা হয় ভবঘুরে, আমি একজন ফ্যাশন ডিজাইনার, আর আমার ফ্রি টাইমে আমি গলফ ক্লাবের বন্ধুদের সাথে সময় কাটাই। তাহলে আমার অবস্থান সামাজিকভাবে কোথায়?”
এমন ধরনের মডেলগুলোর জনপ্রিয়তা বোঝা যায় লক-ইন প্রিন্সিপল দ্বারা (Lock-in principle)। প্রায় সব ধরনের মার্কেট রিসার্চ এবং মার্কেট বিশ্লেষণ এই রকমের সেগমেন্টেশন তথা গ্রুপে গ্রুপে ভাগ করার সাথে সম্পর্কিত। আরেকটি জনপ্রিয় মডেল হলো নিংফেনবার্গের লিম্বিক টাইপস (Limbic Types by Nymphenburg)। এটা আমাদের দেখায় যে, যদি একটি সিস্টেম বেশিরভাগ মানুষকে অভ্যস্ত করে ফেলে, তবে অন্য কোন সিস্টেমকে প্রতিষ্ঠিত করা কঠিন। আমাদের অভ্যাস আমাদের উন্নতি করার আকাঙ্ক্ষার চেয়ে বেশি শক্তিশালী।
“আমাদের উৎসই আমাদের ভবিষ্যত।” – মার্টিন হাইডেগার