শুক্রবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

উদ্দেশ্যের শক্তি

মানব প্রকৃতির মধ্যেই জীবন সম্পর্কে এক ধরনের অর্থ এবং উদ্দেশ্য খুঁজে বেড়ানোর প্রবণতা বিদ্যমান। মার্ক টোয়েন এ সম্পর্কে বলেন, “জীবনের দুইটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। একদিন যখন তুমি জন্মগ্রহণ করো এবং আরেকদিন যখন তুমি জানতে পারো কেন এ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছ।”


আপনি এই পৃথিবীতে এসেছেন অসাধারণ কিছু করার জন্য। আপনার জীবনকে সার্থক করার জন্য। তাই নয় কি? ওয়েন ডায়ার বলেন, “প্রতিটি শিশুই এ দুনিয়ায় একটা গোপন নির্দেশ নিয়ে আসে।” আপনার সেই গোপন নির্দেশ বা জীবনের উদ্দেশ্য কী?

বিখ্যাত মনোবিদ আব্রাহাম মাসলো বলেন, মানুষের প্রধানত দুই ধরনের প্রয়োজন রয়েছে। এক হচ্ছে অসম্পূর্ণ বা ঘাটতিমূলক চাহিদা (deficiency needs) এবং মানবসত্তা হিসাবে চাহিদা (being needs)। ঘাটতিমূলক চাহিদা বলতে জৈবিক চাহিদা, নিরাপত্তা, সামাজিক ও সম্মানের চাহিদাকে বোঝায়। এগুলো মূলত তৈরি হয় না পাওয়া থেকে। এসব নিম্নস্তরের চাহিদা পূরণ হওয়ার দরকার আছে। যাতে করে অপছন্দনীয় অনুভূতি এবং পরিণত ভোগ করতে না হয়। আর গ্রোথ বা মানবসত্তা হিসাবে চাহিদা (growth or being needs) বলতে মাসলোর চাহিদার সোপান তত্ত্বের উচ্চতর চাহিদাকে বুঝিয়েছেন।


ঘাটতিমূলক চাহিদা বলতে মাসলো বুঝিয়েছেন আমাদের মধ্যকার ভয়-ভীতি, সন্দেহ, দুশ্চিন্তা এবং সমাধান না হওয়া যত দ্বন্দ্ব আছে সেগুলোকে। এগুলো মানুষের সম্ভাবনাকে বিকশিত হতে দেয় না। তাদের জীবনে অগ্রগতি করতে বাধা দেয়। পিছন থেকে ধরে রাখে। মাসলোর মতে, মোট জনসংখ্যার ৯৮ শতাংশ মানুষ এসব ভয়ভীতির এক বা একাধিক কারণে নিজেদের সম্ভাবনাকে ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারে না। এগুলো এক ধরনের মানসিক বাধা যার কারণে মানুষ তার নিজ জীবনে অগ্রগতি করতে বাধা পায়।

অন্যদিকে গ্রোথ তথা মানবসত্তা হিসাবে চাহিদা বলতে মাসলো আত্মোপলব্ধি বা আত্মপ্রতিষ্ঠ মানুষের গুণাবলিকে বুঝিয়েছেন। যারা এসব ভয়ভীতি সহ ঘাটতিমূলক চাহিদাগুলোকে কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছেন। তারা তাদের জীবনে যা কিছু করা সম্ভব তাই করেছেন। তারা তাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়েছেন।

মাসলোর গবেষণার শেষ কথা হচ্ছে আপনি আপনার সম্ভাবনাকে তখনই কাজে লাগাতে পারবেন, যখন আপনি আপনার ভয়ভীতি দূর করে জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্যের দিকে নজর দিবেন। যেমন ওয়াল্ট হোয়াইম্যান বলেন, “সূর্যের দিকে মুখ করে দাঁড়াও। এতে করে সব অন্ধকার, ছায়া পিছনে পড়ে রবে।”

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন