জীবন দেখেছি আমি
লোকাল বাসের ভাঙ্গা গ্লাসের লেপ্টানো রোদে, রিকশাওয়ালার ঘামে ভেজা কুঁচকানো পুরাতন শার্টে। সদ্য কিশোরীর লাজুক চোখে, দিগন্তে হারিয়ে যাওয়া বালকের চিরচেনা মেঠো পথে। জীবন দেখেছি আমি রাজপথের রক্তাক্ত লাশে, পচন ধরা নোংরা মানুষে। ড্রেনের পাশে। বকুলের গন্ধে ভরা শীতের সকালে, প্রেয়সীর ওড়নার মত শরতের নীল আকাশে, তরুণীর কাশফুলে। জীবন দেখেছি আমি মেধাবী বেকার ছেলের পাতলা জুতোয়, গৃহিণীর নকশী কাঁথার রঙিন সুতোয়। ঘুম ভাঙ্গানো গানে মুয়াযযিনের আযানে। জীবন দেখেছি আমি নগরীর জ্যামে, ষাটোর্ধ্বো বুদ্ধিজিবী আর তরুণীর প্রেমে। কিছুটা ভাল থাকার আশায়- অসভ্য লম্পটের চাটুকারিতায়, সে প্রাণে , নিত্য যে সাহস যোগায়। জীবন দেখেছি আমি মৃত পুত্রের পাশে পিতার মুখে, সরল ছেলেটির ব্যর্থ প্রেমে কী করে দুঃখরা আসে নেমে ঘন কালো দুচোখে। হাসপাতালের বারান্দায়, মায়ের পাটিসাপটা পিঠায়। জীবন দেখেছি আমি কিশোরের গোল্লাছুটে ,বর্ষায়; চির হাস্যোজ্বল রূপালী ঝর্ণায়। বারান্দার ঝুলন্ত কাপড়ে, বড়দের ধমকেও থামেনা সাঁতার আমার বাড়ির সে পুকুরে। জীবন দেখেছি আমি বিপ্লবীর ফাঁসির দড়িতে, মুক্তিযোদ্ধার বিধবার স্ত্রীর ছেঁড়া শাড়িতে। রাত আটটার পর সোহরাওয়ার্দীতে, রমনায় নগরীর ক্লান্ত যুবক যেথা ক্লান্তি তাড়ায়। জীবন দেখেছি আমি শোষকের সাম্যের বুলিতে, বাসের হেল্পার, মাঝি মাল্লা আর কুলিতে। মসজিদে , মন্দিরে; ধূমায়িত চায়ের কাপে, সিগারেটের ফিল্টারে। 23, 10, 2017 (রচনাকাল) মুহাম্মদ নাইম