ব্যক্তিত্বের ধরন নিয়ে মায়ার্স-ব্রিগস পরীক্ষা

নিজেকে জানার জন্য ব্যক্তিত্বের ধরন অত্যন্ত কার্যকরী। আমি কী, আমি কী রকম,
আমার মানসিকতা কেমন তা জানার জন্য ব্যক্তিত্বের ধরনগুলো আমাদেরকে
আরও সহায়তা করেন বিজ্ঞানী কার্ল জাং এই মানসিক ধরন নিয়ে অনেকদিন
গবেষণা করেন। ১৯২১ সালে তার বই সাইকোলোজিক্যাল টাইপস প্রকাশিত হয়।
পরবর্তীতে মায়ার্স-ব্রিগস (মেয়ে ও মা) অনেক চিন্তাভাবনা করে ব্যক্তিত্বের
ধরনগুলোকে নির্দিষ্ট করতে একটি পরীক্ষার প্রচলন করেন। একে বলা হয়
মায়ার্স-ব্রিগস পরীক্ষা।

তাহলে চলুন আমরা জেনে নেই একজন ব্যক্তির কী কী রকমের ব্যক্তিত্ব
হতে পারে? ব্যক্তিত্বের ধরনকে কিছু সংকেত দিয়ে প্রকাশ করা হয়। এগুলো
নিচে দেখানো হয়েছে। এই সংকেতগুলোর কাজ কী, তা পরে বলছি।

আপনার ব্যক্তিত্ব হতে পারে বহির্মুখী (ব) অথবা অন্তর্মুখী (অ), বাস্তবধর্মী (স)
অথবা অন্তর্জ্ঞানমূলক (ন), চিন্তাশীল (চ) অথবা আবেগপ্রবণ (আ),
বিচারবিবেচনাধর্মী (র) অথবা উপলব্ধিধর্মী (উ)।

বহির্মুখী (ব) অথবা অন্তর্মুখী (অ)



আপনি যদি বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতে অধিক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন,
আপনি যদি মনে করেন আপনার চারপাশে সবসময় কেউ না কেউ
থাকলে আপনার ভালো লাগে, তাহলে আপনি একজন বহির্মুখী (ব)
ব্যক্তি। আর যদি আপনি একা থাকতেই বেশি পছন্দ করেন, লোকজনের
সাথে কম মিশতেই বেশি পছন্দ করেন, তবে আপনি একজন অন্তর্মুখী (অ) ব্যক্তি।

বাস্তবধর্মী (স) অথবা অন্তর্জ্ঞানমূলক (ন)





আপনি একটি সমস্যা সমাধান করার জন্য কীভাবে এগিয়ে যাবেন?
সমস্যা সংক্রান্ত যেসকল তথ্য হাতে আছে কেবল সেগুলোর উপরই
ভরসা করে থাকবেন নাকি সীমিত তথ্যের বাইরে গিয়েও চিন্তা করবেন?
যদি আপনি প্রথম ধারণার সাথে একমত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার
ব্যক্তিত্ব হলো বাস্তবধর্মী (স)। আর আপনি যদি দ্বিতীয় ধারণার সাথে
একমত হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার ব্যক্তিত্ব হলো অন্তর্জ্ঞানমূলক (ন)।

চিন্তাশীল (চ) অথবা আবেগপ্রবণ (আ)





কোনো সমস্যা সমাধানে আপনি কোনটিকে আগে প্রাধান্য দিয়ে
থাকেন? তথ্য কী বলছে তা, নাকি আপনার মন কী বলছে তা?
নিজেকে একজন বিচারকের আসনে কল্পনা করুন। আপনি এমন
একজনের বিচার করছেন, যাকে তথ্যের ভিত্তিতে দোষী প্রমাণ করা
হয়েছে। কিন্তু আপনি জানেন যে সে দোষী নয়। অথবা দোষী হলেও,
সে আপনার পরিবারের খুব কাছের একজন ব্যক্তি। এক্ষেত্রে আপনি
কীভাবে এগিয়ে যাবেন? যদি আপনি তথ্যকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন,
তাহলে আপনার ব্যক্তিত্ব চিন্তাশীল (চ)। আর যদি মনকে গুরুত্ব
দেন, তাহলে বুঝতে হবে আপনি আবেগপ্রবণ (আ)।

বিচারবিবেচনাধর্মী (র) অথবা উপলব্ধিধর্মী (উ)




খুব সহজ একটি উদাহরণ চিন্তা করুন। কোনো কাজের সময়সীমা
আপনি কীভাবে বিবেচনা করেন? আপনি কী সময়সীমা শেষ হওয়ার
আগেই সুন্দরমতো কাজ শেষ করে ফেলেন? তাহলে আপনি
বিচারবিবেচনাধর্মী (র)। আর যদি আপনি কোনো রকমে সময়সীমার
আগের রাতে কাজ শেষ করে জমা দেওয়ার চিন্তা করেন, তাহলে
আপনার ব্যক্তিত্ব হলো উপলব্ধিধর্মী (উ)।

এগুলো তো হলো আপনার ব্যক্তিত্বের ধরন। এখানে যে চারটি ভাগের
কথা বলা হয়েছে, সেখানে আপনি প্রতিটির যেকোনো একটি ব্যক্তিত্বের
দিকে এগিয়ে যাবেন। অর্থাৎ মোট চার জোড়া ব্যক্তিত্বের মধ্য থেকে
যেকোনো চারটি প্রকার নিয়ে আপনার পূর্ণ ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পাবে।
আপনার পূর্ণ ব্যক্তিত্ব হবে নিচের ছবির ১৬ প্রকারের যেকোনো একটি।



তথ্যসূত্র :

১। https://en.m.wikipedia.org/wiki/Myers%E2%80%93Briggs_Type_Indicator

২। https://roar.media/bangla/main/lifestyle/history-of-myers-briggs-test/

৩। http://m.somewhereinblog.net/mobile/blog/Ramim07/30143480

ফজলে রাব্বি (Fazle Rabbi)

আমার জীবনের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে ৬৪টি অনুপ্রেরণামূলক বই প্রকাশ করা। saphollo.com

2 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
নবীনতর পূর্বতন