আপনি সমস্যায় আছেন, বেশ, ইহা ভাল কথা। একটি সমস্যা যতটা
কঠিন বলে আমরা চিন্তা করি ততটা কঠিন ইহা নয় যদি আমরা একে ইতিবাচক ভাবে চিন্তা করি।
প্রতিটি সমস্যাই সমান এবং সমরূপ একটি সম্ভাবনার বীজ নিয়ে আসে। অবশ্য ইহা পূর্ণ
রূপে নির্ভর করে আমাদের চিন্তার উপর।
একটি পয়সার দুইটি পৃষ্ঠা রয়েছে। একজন ব্যক্তি যেকোন একটি
পৃষ্ঠা দেখতে পারে এবং যদি তিনি ইচ্ছা করেন তবে পয়সার পৃষ্ঠ পরিবর্তন করেও দেখতে
পারেন। ইহাকে একটি সমস্যার সাথে তুলনা করা যায়। একজন ব্যক্তির কাছে যখন একটি
সমস্যা আসে তিনি প্রথমে ইহার নেতিবাচক দিকগুলো চিন্তা করেন। ইহা সত্য যে একটি
সমস্যা যখন আসে তখন ইহা একটি পরিষ্কার পথ, সহজপ্রাপ্য পথ বন্ধ করে দেয়। কিন্তু
ইহাও অনুরূপ সত্য যে, একটি পথ যদি বন্ধ হয়ে যায় তবে অপর পথগুলোর প্রতি আমরা চিন্তা
করার সুযোগ পাই, যা হয়ত পূর্বে চিন্তা করিনি।
থমাস আলভা এডিসন আলোকউজ্জ্বল বৈদ্যুতিক বাতি তৈরী করতে
দশ হাজার বার সমস্যার মুখোমুখি হন। তারপর তিনি সফল হন এবং যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হল
এতবার সমস্যার মুখোমুখি হতে গিয়ে তিনি কি চিন্তা করেছেন। তিনি জবার দিয়েছেন যে,
তিনি ১০,০০০ পথ খুঁজে পেয়েছেন যেগুলো কাজ করে না।
ইহাই নির্দিষ্ট চিন্তা, ইতিবাচক চিন্তা। নিজের নির্দিষ্ট
লক্ষ্যের প্রতি চিন্তা করা এবং ইতিবাচক ভাবে চিন্তা করে কাজ করে যাওয়া। একজন
ব্যক্তি যখন তার সমস্যা থেকে সম্ভাবনার দিকগুলো চিন্তা করে বের করে তিনি
প্রকৃতপক্ষে সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি সঞ্চার করেন। ব্যক্তি তার সমস্যার জন্য হতাশ
না হয়ে, সমস্যা থেকে উদ্ভুত সম্ভাবনা খুঁজে নিয়ে সেই পথে এগিয়ে যায় এবং ততক্ষণ
পর্যন্ত এগিয়ে যায় যতক্ষণ না সফল হওয়া যাচ্ছে। এভাবেই মানুষ সফল হয়, আপনিও পারবেন,
আপনার পূর্বেও ইহা সম্পন্ন হয়েছে।
চিন্তা করে দেখুন , বিশ্বের সফল ব্যক্তিরা যারা ষাট অথবা
আশি বছর জীবিত ছিলেন তাদের সফলতা বর্ণনা করা যায় এক বাক্যে যে “তিনি সফল হয়েছেন”।
অথচ তাদের এই সফলতা তৈরীর শিখরের (চূড়ার) নিচে যেই বিশাল পর্বত তা অনেক সমস্যা, ব্যর্থতা,
কষ্ট, গ্লানি দিয়ে তৈরী যা তারা পাথরের মত ব্যবহার করেছেন। সমস্যার এক একটি পাথর
দিয়ে তৈরী করেছেন বিশাল পর্বত যার শিখরে সফলতার পতাকা লাগিয়েছেন।
প্রকৃতপক্ষে বিশ্ব কেবলমাত্র সেই পতাকা টিকেই দেখে যা
শিখরে গর্ব সহকারে উড়ে চলেছে কিন্তু বিশ্ববাসী কখনও সফল ব্যক্তির সমস্যাগুলো,
ব্যর্থতাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখার কষ্ট নিতে চায় না। যদি আপনি জীবনে সফল হতে চান,
তবে কষ্ট করে পর্বত তৈরী করার দায়িত্ব আপনার এবং একান্তই আপনার। একমাত্র আপনি
নিজেই সেই ব্যক্তি যাকে দিয়ে আপনি পবর্তে উঠবেন এবং শিখরে পতাকা উড়াবেন। আপনি ইহা
করতে পারবেন যদি আপনি সমস্যাকে সমান এবং সমরূপ একটি সম্ভাবনার বীজ রূপে চিন্তা
করেন।
-একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিন-