বিশিষ্ট জ্ঞান
যিনি বিশিষ্ট জ্ঞানের অধিকারী তাকে বলা
হয় বিশেষজ্ঞ।
জ্ঞান দুই
প্রকার। একটি সাধারণ এবং অপরটি বিশেষ জ্ঞান। বিশাল পরিমাণ সাধারণ জ্ঞান কোন কাজে
আসে না যদি তা কোন নির্দিষ্ট পরিকল্পনায় নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌছানোর জন্য প্রয়োগ
করা না হয়। আর নির্দিষ্ট পরিকল্পনায় নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌছাতে প্রয়োজন বিশেষ
জ্ঞান।
সভ্যতার শুরু
থেকে আজ পর্যন্ত প্রাপ্ত জ্ঞানকে এই দুভাগে বিভক্ত করা যায়। সাধারণ জ্ঞানের
ভান্ডার বিশাল এবং একে বিভিন্ন ভাগ, উপভাগে বিভক্ত করে আমাদের বিদ্যালয়গুলোতে
পড়ানো হয়। অপরটি, বিশেষ জ্ঞান যা আমাদের দেয় নির্দিষ্ট কাজে প্রয়োগ করার জন্য
অপরিমেয় শক্তি। নির্দিষ্ট পরিকল্পনায় নির্দিষ্ট ফলাফল পাওয়ার আশায় প্রয়োগকৃত
জ্ঞানই বিশেষ জ্ঞান, যা প্রয়োগের ফলে হয়ে ওঠে বিশিষ্ট জ্ঞানে।
লোকেরা
বিশ্বাস করে “জ্ঞানই
শক্তি”।
আসুন বিষয়টাকে পুনরায় বিবেচনা করি। গাড়ির তেলের কথা চিন্তা করুন। তেল যদি অব্যবহৃত
ভাবে দোকানে পড়ে থাকে তখন এর মূল্য আছে সত্য কিন্তু এর উপযোগিতা কোথায়। জ্ঞান
আমাদের বই, পত্রিকা, বিদ্যালয় বা গ্রন্থাগারগুলোতে অঢেল রয়েছে কিন্তু ইহা যদি আপনি
আপনার কাজে না প্রয়োগ করেন তবে এ জ্ঞান শক্তি হবে কিভাবে। তেল যখন গাড়ির ইঞ্জিনে
প্রবেশ করে তখন নির্দিষ্ট নল পথে ইহা নির্দিষ্ট কক্ষে যায়, যেখানে ইহাকে উত্তপ্ত
করা হয় বাতাসের সাথে (একটি অদৃশ্য, অনুভবযোগ্য শক্তির সাথে)। তখন এই মিশ্রিত
উপাদানদ্বয় উৎপাদন করে এমন এক শক্তি যা তাদের মিশ্রিত উপাদানের ওজনের চেয়ে লক্ষগুণ
বেশি ভারী ও ওজনদার বস্তু, গাড়ীকে নিয়ে যায় দ্রুত গতিতে। একই রূপে জ্ঞান প্রয়োগ
করতে হয় নির্দিষ্ট পরিকল্পনায় নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেখানে ইহা মিশ্রিত হয় ইচ্ছা,
আস্থা, অধ্যবসায় এবং সৃষ্টিশীল কল্পনার সাথে এবং হয়ে ওঠে এমন এক শক্তি যা যেকোন
চিন্তাকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে বা তার সমতুল্য করতে সক্ষম। তেলের এই কৌশলটিকে
বুঝুন, জ্ঞানকে নির্দিষ্ট পরিকল্পনায় নির্দিষ্ট গন্তব্যের জন্য প্রয়োগ করুন এবং
ব্যক্তিগত উন্নয়ন বা জীবনের যে কোন কাজে সাফল্য অর্জন করুন।
আমরা অনেকেই
পড়েছি-
“পুথিগত
বিদ্যা আর পর হস্তে ধন
নহে বিদ্যা,
নহে ধন হলে প্রয়োজন।”
আমাদের জীবনে
সাফল্য অর্জনে এখন সময় হয়েছে উপরোক্ত বিষয়টি নতুন দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করার যাতে
আমরা জ্ঞান সাধারণ পর্যায় হতে বিশেষ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারি এবং ব্যক্তিগত উন্নয়ন
বা সম্পদ অর্জনে ইহা প্রয়োগ করতে পারি। উপরোক্ত উক্তিমতে বইয়ে সীমাবদ্ধ জ্ঞান
হচ্ছে প্রয়োজনের সময় অপর ব্যক্তির হাতে থাকা সম্পদের মত। ধরুন, একজন ব্যক্তির কাছে
অর্থ (বা অন্য যেকোন সম্পদ) আছে কিন্তু তা যদি অন্যের কাছে থাকে তবে আপনার দরকারের
সময় যেমন এই অর্থ কোন কাজে দেয় না, তেমনি জ্ঞান যদি সাজানো আকারে বইয়ে থাকে কিন্তু
ব্যক্তি তার বাস্তব কাজে প্রয়োগ করলো না তবে যেকোন মূল্যবান জ্ঞানও মূল্যহীন হয়
পড়ে।
এই
লেখাগুলোতে আপনাদের প্রেরণা দেওয়া হয়েছে এবং জীবনে সাফল্য অর্জনের জন্য কিছু
নির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যার জন্য আপনাকে কোন অর্থ খরচ করতে হবে না,
শুধুমাত্র ইন্টারনেটের সামান্য খরচ ছাড়া। তাহলে নির্দেশনাগুলো বাস্তব জীবনে প্রয়োগ
করে সফল হবেন না কেন?
বর্তমানে
বিশেষজ্ঞদের চাহিদা বেশি। চাকুরীদাতাগণ খোঁজেন প্রার্থীদের মাঝে একজন দক্ষ
ব্যক্তিকে, যিনি তার প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কাজ দক্ষভাবে করতে
বিশেষ জ্ঞান রাখেন। চাকরী প্রার্থীগণ যখন চাকরির জন্য আবেদন করেন তখনও বেশিরভাগই
জানেন না তারা কোন কাজে দক্ষ, যে কাজটি করতে একজন প্রার্থী পারদর্শী সেই সম্পর্কে
খুব অল্প সংখ্যক প্রার্থীই জ্ঞান রাখেন। তাই চাকুরীদাতাগণ এখন নির্দিষ্ট পদের
নির্দিষ্ট কাজের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেন। এতে উল্লেখিত থাকে সেই পদ ও কাজ সম্পর্কে যে
জন্য প্রার্থী আবেদন করতে পারবেন আর এমন নির্দিষ্ট কাজে তারাই অগ্রাধিকার পান যারা
উক্ত কাজে বিশিষ্ট জ্ঞান রাখেন।
একজন
ব্যক্তিকে অবশ্যই তার ইচ্ছানুযায়ী কাজে বিশেষ জ্ঞান অর্জন করতে হবে যদি তিনি জীবনে
সাফল্য অর্জন করতে চায়। ব্যক্তিদের উচিত তাদের জীবনের মহাবিদ্যালয়ের পাঠ (উচ্চ
মাধ্যমিক) গ্রহণকালেই নির্দিষ্ট করা, যা তিনি জীবনে হতে চান এবং এর জন্য যে জ্ঞান
দরকার তা গ্রহণের চেষ্টা করা। তবে এখনও খুব দেরী হয়ে যায় নি যদি আপনি মহাবিদ্যালয়
পাঠ শেষ করে থাকেন বহু আগে, এখনও আপনি সুউচ্চ সাফল্য অর্জন করতে পারবেন, আপনার
বর্তমান পেশায়, অধ্যবসায় সহকারে এখানকার লেখাগুলো শেষ পর্যন্ত পড়ে যান, আপনি নিজেই
খুঁজে পাবেন আপনার সফলতার সিঁড়ির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো।