মন
কোন বিষয়
সম্পর্কে যদি আমরা না জানি তবে আমরা ইহার উন্নতি সাধন করতে পারবো না। তাই আমাদের
ব্যক্তিগত উন্নয়নে আমাদের জানতে হবে স্বয়ং নিজেকে, আমাদের মনকে। আমাদের মন আমাদের
প্রকাশ করে।
সিগমন্ড
ফ্রয়েড এর মতে আমাদের মন তিনটি ভাগে বিভক্ত। এরা হচ্ছে সচেতন মন, অবচেতন মন এবং
অচেতন মন। সচেতনার উপর নির্ভর করে এই ভাগ করা হয়েছে।
সচেতন মনঃ সচেতন
মন হচ্ছে আপনার এই মুহূর্তের সচেতনতা। আপনার চোখ যা দেখে, হাত যা কাজ করে এগুলো
সচেতন মনের তাৎক্ষণিক সহায়তায়। যেমন আপনি চোখ দিয়ে পড়ছেন বা একটি চেয়ারে বসে আছেন।
অবচেতন মনঃ অবচেতন
মন বা পূর্ব সচেতনতা হচ্ছে তথ্য সমৃদ্ধ স্থান। তথ্য ভান্ডারে প্রবেশের পথ। এটাকে
পুনরায় স্মৃতি পাওয়ার সাথে তুলনা করা যায়। ধরুন আপনি বাসায় যাচ্ছেন। আপনি ফোনে কথা
বলতে বলতে যাচ্ছেন, চারপাশের বিষয় সম্পর্কে পূর্ণ সচেতন না হয়ে। এভাবে আপনি
নিরাপদে বাসায় এলেন। আপনার বাসার পথ সম্পর্কে অনবরত আপনার অবচেতন মন আপনাকে বলে
চলেছে। আবার আমাদের প্রায়ই ব্যবহার করা নম্বরটি আমাদের মনে থাকে। এভাবেই অবচেতন মন
বিভিন্ন কাজে আমাদের সচেতন না করেও আমাদের নির্দেশ দিয়ে যায়।
আবার কিছু
তথ্য অচেতন মন থেকে অবচেতন মনে আসে এবং তারপর সচেতন অংশে। অনেক বছর আগের ঘটনা এই
ভাবেই হঠাৎ মনে পড়ে। আসলে অচেতন মন থেকে তথ্য আসতে নির্দিষ্ট স্থানে অধিক চাপ এর
প্রয়োজন হয়। কিন্তু অবচেতন মন হতে তথ্য অল্প চেষ্টাতেই সচেতন মনে প্রবেশ করে।
অচেতন মনঃ অচেতন
মন গঠিত হয় মনের স্বয়ংক্রিয় ঘটনাবলী দ্বারা। ইহাকে চিন্তা দ্বারা পরীক্ষা করা যায়
না। ইহাতে চিন্তার প্রক্রিয়াগুলো, স্মৃতি, প্রভাব এবং প্রেরণা সংযুক্ত রয়েছে। ইহা
মনের সচেতন ভাগের নিচেই অবস্থিত এবং আমাদের ব্যবহারের পিছনে প্রভাব বিস্তার করে।
আরো বলা যায় অচেতন মন ব্যক্তি মনের এমন
ইশতিহার যা সম্পর্কে ব্যক্তি নিজেই সম্পূর্ণ সচেতন নয়। ব্যক্তি মনের এ সকল
বিষয়গুলো হতে পারে অনুভূতি, স্বয়ংক্রিয় দক্ষতা, চিন্তা, অভ্যাস, স্বয়ংক্রিয়
প্রতিক্রিয়া এবং আমাদের অপ্রকাশিত ইচ্ছাগুলো।
পরবর্তী
অধ্যায়ে আমরা পড়বো মনকে পরিচালিত করার উপায় সম্পর্কে। ইহা আমাদের পরিচিত শব্দ, তা
হল ইচ্ছা। ইচ্ছা আমাদের মনকে পরিচালিত করতে পারে কিন্তু ইচ্ছা শক্তিকে পরিচালিত
করতে হবে ঠিক পদ্ধতিতে এবং যা হতে হবে বাস্তব সম্মত।