বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এআই মডেল (Appreciative Inquiry) একটি অত্যন্ত কার্যকর মডেল হতে পারে। বিশেষ করে, প্রতিষ্ঠান, উদ্যোগ বা আত্ম-উন্নয়নের জন্য। এআই (Appreciative Inquiry) পদ্ধতির মূল তত্ত্ব হলো নিজের বিদ্যমান শক্তি, ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সম্ভাবনা নিয়ে চিন্তা করা, যা উন্নয়ন এবং উদ্ভাবনের জন্য একটি শক্তিশালী মাধ্যম হতে পারে। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায়, যেখানে বিভিন্ন সেক্টরে পরিবর্তন এবং উন্নতির প্রয়োজন, সেখানে এআই মডেল ব্যবহার করার মাধ্যমে অনেক বাধাবিপত্তি দূর করা সম্ভব।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এআই মডেল প্রয়োগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র:
ব্যবসা এবং উদ্যোগ: বাংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো, বিশেষ করে ছোট এবং মাঝারি আকারের প্রতিষ্ঠান (SMEs), নানা ধরনের সমস্যায় জর্জরিত থাকে। কিন্তু সামর্থ্য এবং সম্ভাবনার দিকে মনোযোগ দেওয়া হলে এসব কোম্পানি উন্নতি করতে পারে। এআই মডেল প্রয়োগের মাধ্যমে, প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ইতিবাচক দিকগুলো চিনতে এবং সেগুলোকে শক্তিশালী করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের কোন উদ্যোগ যদি গ্রাহকদের সন্তুষ্টি অর্জন করে এবং বিক্রয়ের ইতিবাচক দিকগুলো জানে, তাহলে তারা সেগুলোর আরও উন্নতি ঘটাতে পারে।
শিক্ষা: বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কের মধ্যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রবর্তন করা অনেক জরুরি। এআই (Appreciative Inquiry) পদ্ধতির মাধ্যমে, শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তা এবং শেখার প্রতি আগ্রহ তৈরি করা সম্ভব এবং শিক্ষকদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর মাধ্যমে শ্রেণীকক্ষে একটি ইতিবাচক পরিবেশ গড়ে তোলা যাবে।
সামাজিক উন্নয়ন: সমাজের বিভিন্ন সমস্যা (যেমন দারিদ্র্য, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা) সমাধানের জন্য এআই পদ্ধতি (Appreciative Inquiry) ব্যবহার করা যেতে পারে। স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোর ইতিবাচক কাজ এবং শক্তি খুঁজে বের করে, এসব সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব।
সরকারি উদ্যোগ: বাংলাদেশের সরকার যদি এআই পদ্ধতি অনুসরণ করে, তবে দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে শক্তি, সক্ষমতা এবং ইতিবাচক প্রচেষ্টা তুলে ধরলে, সরকারি প্রকল্পের সফলতা বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশে বিশেষভাবে এআই চিন্তাভাবনা বাস্তবায়িত হলে, মানুষ সাধারণত যে ধরনের প্রতিক্রিয়া দেয় তা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে:
ত্রুটি-অনুসন্ধানকারী: বেশিরভাগ মানুষ প্রথমে সমস্যা দেখবে এবং আইডিয়ার দুর্বল দিকে মনোযোগ দিবে। তবে এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে।
স্বৈরাচারী বা বাঁধাধরা নিয়মে আটকে থাকা মানুষজন: কিছু ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ বা সিনিয়র ব্যক্তিরা একটি ধারণাকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করতে পারে, যা সম্ভাবনা এবং নতুন চিন্তার বিকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
শিক্ষক: অনেক সময়, বিশেষত শিক্ষকদের মধ্যে, কেউ কেউ কিছু বিষয়ে গভীর বিশ্লেষণ দিতে গিয়ে ব্যাপারটার মধ্যে সংশোধন করতে চায়। তবে এসব বিষয়ে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োগ করতে হলে ধৈর্য ধরতে হবে। তবে মানুষজন এগুলোকে সহজে গ্রহণ করতে পারবে।
এআই (Appreciative Inquiry) চিন্তাবিদ: এ ধরনের চিন্তা-ধারা সাধারণত অগ্রসর, সহযোগিতামূলক এবং সমাধানমুখী হয়। যা বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর জন্য অত্যন্ত উপযোগী হতে পারে।
এআই মডেলের মাধ্যমে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সম্ভাবনা খুঁজে বের করার কারণে বাংলাদেশে সামাজিক, ব্যবসায়িক এবং শিক্ষাগত ক্ষেত্রে অনেক ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সাহায্য করতে পারে।