সেকেন্ড চান্স (Second Chance) তথা দ্বিতীয় সুযোগ বইয়ের পর্যালোচনা
১৫৬ পৃষ্ঠার গল্প বা ঘটনার অনুবাদ:
কিছুদিন আগে আমি স্কটল্যান্ড গিয়েছিলাম। সেখানে আমার এক বন্ধু গ্রিম এবং তার স্ত্রী লিয়েনের সাথে সাক্ষাৎ হয়। গ্রিম ও তার স্ত্রী লিয়েন মিলে ১৫০ বছর পুরাতন ঐতিহাসিক এক চার্চ ঘর ক্রয় করে। তারা ২ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড তথা ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় এটা ক্রয় করে। স্কটিশ সরকার তাদেরকে সরকারিভাবে ৩.৫ লাখ পাউন্ড তথা ৪ কোটি ১১ লাখ দেয় চার্চটাকে মেরামত করার জন্য। আর সরকারিভাবে প্রদত্ত এ টাকা তাদেরকে ফেরতও দিতে হবে না।
প্রশ্ন: কী বলেন! গ্রিম চার্চটা কিনল ২.৩৫ কোটিতে এবং সরকার মেরামতের জন্য দিল ৪.১১ কোটি। আবার টাকা ফেরতও দিতে হবে না। তাহলে তো এ প্রকল্প পুরো বিনামূল্যে পাওয়া গেল।
উত্তর: ‘হ্যাঁ’, আবার ‘না’। সরকার টাকা দিয়েছে। কিন্তু একটা শর্ত আছে। সরকার যা বলবে গ্রিমকে এখানে তাই করতে হবে। সরকার বলেছে, এই চার্চকে স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য ঘর হিসাবে তৈরি করতে। মূল কথা হচ্ছে: গ্রিম এখানে যা কিছু করছে তা সরকারের ইচ্ছানুযায়ী করছে।
গ্রিম চার্চটাকে মেরামত করল এবং ১৬টি স্বল্প আয়ের পরিবারের জন্য ঘর তৈরি করল। এর জন্য গ্রিম আরও কিছু বিনিয়োগ নিয়েছিল। বিনিয়োগ নিয়েছিল ৪ লাখ পাউন্ড তথা ৪ কোটি ৭০ লাখ। একে বলা হয় ইকুয়িটি (equity)। তারপর গ্রিম ব্যাংক থেকে ধার নিয়েছে ৭ লাখ পাউন্ড তথা ৮ কোটি ২৩ লাখ টাকা। এটা প্রকল্প সম্পন্ন করতে ঋণ হিসাবে নিয়েছে।
এরপর ২ বছর পর, প্রকল্পটি যখন শেষ হলো এবং ভাড়াটিয়াদের ভাড়া থেকে ক্যাশ ফ্লো হিসাবে টাকা আসতে লাগল, তখন এই ব্যবসায়িক প্রকল্পটি আবার ব্যাংকের কাছে গেল। এই প্রকল্প থেকে এখন টাকা আসছে, তাই এই ক্যাশ ফ্লো এর ভিত্তিতে ব্যাংক থেকে প্রকল্পটিকে পুনরায় ফাইন্যান্স করার জন্য আরেকটি লোন তথা ঋণের আবেদন করল।
এভাবে নতুন ঋণ নিয়ে, সকল বিনিয়োগকারীদেরকে তাদের আকাঙ্ক্ষিত টাকা ফেরত দেওয়া হল এবং তারা ট্যাক্স-ফ্রি আয় তথা ক্যাশ ফ্লো এর টাকা পেতে লাগল। এই প্রকল্প থেকেই তারা জীবনভর টাকা পেতে লাগল। আরেকভাবে বলতে গেলে, তাদের বিনিয়োগের বিপরীতে তারা অসীম সংখ্যায় প্রকল্পের ২ বছর পর থেকে টাকা পেতে লাগল। আবার তাদের বিনিয়োগের টাকাও ফেরত পেল। এখন আর কোন বিনিয়োগ ছাড়ায় সারাজীবন টাকা পেতে লাগল। আর সবচেয়ে বড় কথা, তারা যে টাকা পুনরায় ফাইন্যান্স হিসাবে নিল সেটা ট্যাক্স-ফ্রি টাকা। কারণ এই টাকাটা এসেছে সম্পত্তির ঋণ হিসাবে, আর এই ঋণের টাকা পরিশোধ করবে ভাড়াটিয়ারা তাদের ভাড়ার মাধ্যমে।