রবিবার, ১ মে, ২০১৬

জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় তরুণরা।


জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন প্রতিবেদনে (UNDP এর Regional Human Development Report 2016) বাংলাদেশকে যে তরুণদের দেশ রূপে অভিহিত করা হয়েছে, সেটি একটি বড় সুযোগ। এখন জনসংখ্যার ৪৯ শতাংশেরই বয়স ২৪ বছরের কম। যেকোনো দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য কর্মক্ষম জনশক্তিই সবচেয়ে বেশি এবং কার্যকর অবদান রাখতে পারে। বাংলাদেশে কর্মক্ষম জনসংখ্যা (১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী) ১০ কোটি ৫৬ লাখ, যা মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ। ২০৩০ সালে এটি বেড়ে দাঁড়াবে ১২ কোটি ৯৮ লাখে, যা মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ।

এই যে তরুণদের বাংলাদেশ, তার সুযোগটি আমরা কীভাবে কাজে লাগাতে পারি? তরুণদের কাজে লাগানোর উপায় হলোঃ

প্রথমত, তাদের বাস্তববুদ্ধিসম্পন্ন শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা।

দ্বিতীয়ত, তাদের দক্ষতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের সৃষ্টি এবং কাজের সুযোগ প্রদান।

ইউরোপ, আমেরিকা, চিন এবং জাপানসহ যেসব দেশ দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নতি করেছে, তারা তাদের জনশক্তির সদ্ব্যবহার করেছে দেশের ভেতরে এবং বাইরে। এমনকি আমাদের প্রতিবেশী ভারত এবং  শ্রীলঙ্কাও এক্ষেত্রে বেশ সাফল্য দেখিয়েছে। কিন্তু শিক্ষার হার বাড়লেও আমরা দেশের বর্ধিত চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত জনশক্তি গড়ে তুলতে পারিনি। বিদেশে কর্মরত জনশক্তিরও বেশিরভাগ অদক্ষ।

আমাদের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তববুদ্ধিসম্পন্ন নয় বলেই বিশ্বে শিক্ষিত বেকারের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে। প্রতিবছর বর্ধিত হারে যে তরুণেরা শ্রম বাজারে আসছেন, তাদের কাজে লাগাতে হলে শিক্ষা ব্যবস্থায় যেমন বাস্তববুদ্ধিসম্পন্ন শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ আনতে হবে, তেমনি বাড়াতে হবে কর্মসংস্থানের পরিধিও। বর্তমানে দেশে প্রতিবছর ছয় লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয় বলে পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। অন্যদিকে দেশে নারী শিক্ষার হার বাড়লেও এখনো কর্মক্ষেত্রে তাদের উপস্থিতি নগণ্য।

শ্রমশক্তির মান উন্নয়ন করতে না পারলে জনসংখ্যাতাত্ত্বিক লভ্যাংশ (Demographic Dividend) বোঝা হয়ে দেখা দিতে পারে বলে বিশেজ্ঞরা যে আশঙ্কা করছেন, তা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাই, বর্ধিত কর্মশক্তির সুযোগ এবং সম্ভাবনা কাজে লাগাতে চাই টেকসই পরিকল্পনা এবং তার যথাযথ বাস্তবায়ন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন