ইতিবাচক চিন্তা
হচ্ছে একটি মানসিক ভঙ্গি যাতে আপনি ভালো এবং পছন্দনীয় ফলাফলগুলো আশা করেন। অন্য
শব্দগুলোতে বললে, ইতিবাচক চিন্তা হচ্ছে একটি চিন্তা তৈরি করার প্রক্রিয়া যা
শক্তি তৈরি করে এবং রূপান্তর করে বাস্তবতায়। একটি ইতিবাচক মন যেকোন অবস্থায় চেষ্টা করে সুখ,
স্বাস্থ্য এবং একটি সুখকর পরিসমাপ্তির জন্য।
একটি উদাহরণ
বিবেচনা করুন, একটি গ্লাস যার অর্ধেক খালি বা অর্ধেক পূর্ণ? আপনার দেখার ঝোঁক
কেমন? আপনি হয়ত সম্ভবত শুনেছেন এই প্রশ্নটি বহুবার। আপনার উত্তর সরাসরি
সম্পর্ক যুক্ত ইতিবাচক চিন্তার ধারণাটির সাথে এবং জীবনের ওপর আপনার একটি
ইতিবাচক বা নেতিবাচক দৃষ্টি কিনা।
জিগ
জিগলার বলেছেন, “ইতিবাচক চিন্তা আপনাকে সবকিছু উত্তমভাবে করার সুযোগ দিবে
তারচেয়ে যা নেতিবাচক চিন্তা করলে দিবে।”
শিব
খের তার বিখ্যাত বই “তুমিও জিতবে” তে একটি অধ্যায়ই লিখেছেন ইতিবাচক
দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির জন্য। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির জন্য দরকার ইতিবাচক চিন্তা। তিনি মনোযোগকে নেতিবাচক অংশ হতে ইতিবাচক
অংশে ঘোরানোর প্রতি জোর দিয়েছেন। কিছু লোকজন সর্বদাই পরিস্থিতির নেতিবাচক
অংশের প্রতি দেখবে। কিন্তু ইহা আপনার জীবন এবং আপনি কেন নেতিবাচক চিন্তা করে নিজের
মেজাজকে খারাপ করবেন। এখনই সিদ্ধান্ত নিন, আপনি কি ইতিবাচক চিন্তা করে
নিজের মেজাজকে আরও ভালো করতে চান এবং আনন্দের সাথে কাজে সফল হতে চান?
লেখক
নরম্যান ভিনসেন্ট পেইলি তার জীবন ভর গবেষণা করেছেন, বক্তৃতা দিয়েছেন, রচনা লিখেছেন
ইতিবাচক চিন্তার ওপর। তিনি একটি মহা মূল্যবান বই রচনা করেছেন ইতিবাচক
চিন্তার ওপর এবং ইহার শিরোনাম দিয়েছেন “ইতিবাচক চিন্তার ক্ষমতা।” একটি অসাধারণ বই। ইহা ব্যক্তিগত উন্নয়নের সর্বোৎকৃষ্ট বইগুলোর মধ্যে একটি। বইটি ১৯৫৩ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল
এবং আজও সমানভাবে পৃথিবীকে এর জ্ঞান দ্বারা আলোকিত করে চলেছে। হাজারো লক্ষ পুরুষ
এই বই দ্বারা উপকৃত হয়েছেন।
“ইতিবাচক
চিন্তার ক্ষমতা” বইটির প্রথম অধ্যায়ের দুইটি বাক্যই হচ্ছে:
“নিজের মধ্যে
বিশ্বাস রাখুন !”
“নিজের
দক্ষতাগুলোর মধ্যে আস্থা রাখুন !”
উভয়
বাক্যগুলো হচ্ছে ইতিবাচক চেতনায় ভরপুর। বাক্যগুলো এমন যে, পরিস্থিতি যত কঠিনই হোক
আপনি যদি ইতিবাচক চিন্তা করার চেষ্টা করেন এবং নিজের মধ্যে এবং নিজের
দক্ষতাগুলোর মধ্যে বিশ্বাস ও আস্থা রাখেন তবে অবশেষে জয় আপনার
নিশ্চয়ই হবে।
পবিত্র কুরআন শরীফে আল্লাহ্ বলেন, “যে কেউ কোন উত্তম কাজ করে, আমি তার জন্য
তাতে আরও সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেই। নিশ্চয়
আল্লাহ্ পরম ক্ষমাশীল, অতিশয় গুণগ্রাহী।” সূরা
আশ্শুরা, আয়াত – ২৩। এখানে উত্তম কাজ বলতে ইতিবাচক কাজ, ভালো কাজ এবং সৎ
কাজ সম্বন্ধে বলা হয়েছে। আল্লাহ্ ইহাও
বলেছেন যে তিনি পরম ক্ষমাশীল এবং গুণগ্রাহী তারমানে আপনি কোন ভুল করে থাকলেও
ক্ষমা চাইলে আল্লাহ্ ক্ষমা করে দিবেন এবং আপনার উত্তম কাজ সম্পন্ন হওয়ার জন্য
আপনাকে উপায় দেখাবেন।
বিষয়টি
হচ্ছে আপনি জীবনে যা নির্দিষ্টভাবে চান তার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা এবং
ইহা অর্জন করা। এর জন্য দরকার ইতিবাচক চিন্তা, নির্দিষ্টভাবে একটি
আকাঙ্ক্ষার ওপর চিন্তা করে যাওয়া, ইহা পূরণ করার জন্য পরিকল্পনা
করা এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে যাওয়া, এই কাজগুলো করতে হবে অধ্যবসায়
এবং ধৈর্যের সাথে। সাফল্য নিশ্চয়ই হবেই, আপনাকে শুধুমাত্র ইহার জন্য সকল প্রস্তুতি
সম্পন্ন করে রাখতে হবে এবং চিন্তা করতে হবে ইতিবাচক চিন্তা।
তথ্য নির্দেশঃ
গ্রন্থপঞ্জিঃ
ক। কুরআন শরীফ। ঢাকাঃ খোশরোজ কিতাব মহল, ২০০১।
খ। খের, শিব। তুমিও জিতবে। নিউ দিল্লীঃ ম্যাকমিলান ইন্ডিয়া লিমিটেড, ২০০২।
গ। পেইলি, নরম্যান ভিনসেন্ট। ইতিবাচক চিন্তার ক্ষমতা। ইংল্যান্ডঃ
ভারমিলিয়ন, ২০০৪।